ASANSOL

আসানসোলের সাংসদ ও মেয়রকে খোলা চিঠি শিক্ষকের, পরিত্যক্ত কয়লা খাদানে পড়ে দুই স্কুল পড়ুয়ার মৃত্যু, ইসিএলকে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলতে

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায়ঃ* দেশের ৭৯ তম স্বাধীনতা দিবসের দিন সকালে আসানসোলে ইসিএলের পরিত্যক্ত খোলামুখ কয়লা খাদান বা ওসিপির জলে তলিয়ে মৃত্যু হয়েছিলো ইস্টার্ণ রেলওয়ে বয়েজ হাইস্কুলের দুই পড়ুয়ার। সেই ঘটনায় গোটা আসানসোলে শোকের ছায়া নেমে আসে। এবার গোটা বিষয়টি তুলে ধরে, অবিলম্বে এই ঘটনা বন্ধ করতে ইসিএলকে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আসানসোলের সাংসদ শত্রুঘ্ন সিনহা ও আসানসোল পুরনিগমের মেয়র তথা বিধায়ক বিধান উপাধ্যায়কে খোলা চিঠি দিলেন ঐ স্কুলের শিক্ষক সমাজকর্মী বিশ্বনাথ মিত্র। চিঠিতে তিনি দুই জনপ্রতিনিধিকে লিখেছেন যে, আপনারা নিশ্চয় অবগত আছেন যে, আপনাদের নির্বাচন ক্ষেত্র আসানসোল উত্তর থানার কাল্লা এলাকায় ব্লু-ফ্যাক্টরির কাছে ইসিএলের কয়লাখনি রয়েছে ।

মূলতঃ ইসিএলের দ্বারা সেই ওসিপি করার ফলে (এর মাঝে অবৈধ খনির বিষয়টিও রয়েছে) বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে বড় ধরনের জলাশয়ের সৃষ্টি হয়েছে। যার আকর্ষণে দলে দলে মানুষ তা উপভোগ করতে সেখানে যান। সেখানে অনেকেই সেলফি তোলেন ও জল ছুঁয়ে দেখতে চান। ফলে সেই বিপজ্জনক পরিত্যক্ত জলভরা মারণ খাদানে একের পর এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটছে। মৃত্যু মিছিল ঘটে চলেছে বিগত কয়েক বছর ধরে।সর্বশেষ সংযোজন, গত ১৫ আগস্ট আমার স্কুলের মাত্র বারো বছর বয়সী দুই ছাত্র অনুরাগ কুমার ও রিষু প্রসাদ সেই খাদানের জলে তলিয়ে অকালে মারা যায়। উল্লেখ্য, দুজনের মধ্যে অনুরাগ কুমার মা-বাবার একমাত্র সন্তান।এই ঘটনার দায় ইসিএল কর্তৃপক্ষ যেমন এড়াতে পারে না।

তেমনি স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের নীরব ভূমিকাও কিছুটা হলেও দায়ী।এই পরিপ্রেক্ষিতে আপনাদের কাছে সকল আসানসোলবাসীর পক্ষ থেকে সনির্বন্ধ আবেদন, অবিলম্বে ইসিএলের উপর চাপ সৃষ্টি করা হোক, যাতে তারা তাদের পরিত্যক্ত খাদান বা কয়লাখনির চারপাশে দেওয়াল বা পাঁচিল তৈরি করে। অন্তত পক্ষে যতদিন না ঐ বিস্তীর্ণ জায়গাটি ঘেরা হচ্ছে, আপৎকালীন ব্যবস্থা অনুযায়ী প্রধান প্রবেশপথটি পাঁচিল দিয়ে বন্ধ করার ব্যবস্থা যেন করা হয়। সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় পুলিশ তথা পশ্চিম বর্ধমান প্রশাসনকেও উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে যাতে ওই বিপজ্জনক জায়গাটিতে কোনোভাবেই বহিরাগতরা প্রবেশ করতে বা যেতে না পারে।আমরা কেউ চাই না, ভবিষ্যতে কোন মায়ের কোল নতুন করে খালি হয়। কারোর পরিজন অকালে মারা যান।বিশ্বনাথ মিত্রের আশা, তার আবেদন গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে দেখা হবে। এদিকে, আসানসোলের সাংসদের এই প্রসঙ্গে কোন প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায় নি। তবে, এই শিক্ষকের খোলা চিঠি নিয়ে আসানসোল পুরনিগমের মেয়র বিধান উপাধ্যায় সোশাল মিডিয়ায় প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, দেখবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *