জাভেদ খুনের কিনারায় বড় সাফল্য পুলিশের, গ্রেফতার ৮, উদ্ধার বাইক ও পিস্তল
বেঙ্গল মিরর, কুলটি, রাজা বন্দোপাধ্যায়ঃ* আসানসোলের কুলটি থানার নিয়ামতপুরে পুর কর্মী সৈয়দ জাভেদ বারি খুনের মামলায় বড় সাফল্য পেলো পুলিশ। এই ঘটনাটি পুলিশ চাঁদ ওরফে সঈফ আলি কুরেশি নামে আরো এক অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে। এই খুনের ঘটনার কিনারা করার পাশাপাশি পুলিশ এখনো পর্যন্ত জড়িত থাকার অভিযোগে মোট ৮ জনকে গ্রেফতার করেছে। এখনো ফেরার রয়েছে দুজন। শনিবার দুপুরে এই ঘটনা নিয়ে বিস্তারিত জানাতে আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসিপি (পশ্চিম) সন্দীপ কররা কুলটি অফিসে এক সাংবাদিক সম্মেলন করেন। সেখানে এসিপি (কুলটি) জাভেদ হুসেন, কুলটি থানার ইন্সপেক্টর ইনচার্জ কৃষ্ণেন্দু দত্ত, নিয়ামতপুর ফাঁড়ির ইনচার্জ অখিল মুখোপাধ্যায় ছাড়াও, অন্যান্য পুলিশ অফিসাররা উপস্থিত ছিলেন।













ডিসিপি (পশ্চিম) বলেন, গত ২৯ আগস্ট রাতে পুর কর্মী সৈয়দ জাভেদ বারিকে গুলি করে খুন করা হয়েছিল। দুজন মোটরবাইক করে এসে তাকে বাড়ি যাওয়ার রাস্তায় খুব কাছ থেকে গুলি করে। গোটা ঘটনাটি রাস্তার মোড়ে লাগানো সিসি ক্যামেরায় ধরা পড়ে। ঘটনার পরে পুলিশ মৃতার স্ত্রীর লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে। প্রাথমিক তদন্তের পরে ইন্তেখাব আলম নামে একজনকে গ্রেফতার করা হয়। ইন্তেখাব আলমকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে জাভেদের খুড়তুতো বোন ফারহা নাজের সঙ্গে জমি সংক্রান্ত একটা বিবাদ চলছে।
ফারহা নাজ এবং তার স্বামী মহঃ আসিফ এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত রয়েছে। এরপর নিয়ামতপুর ফাঁড়ির পুলিশ জলপাইগুড়ি থেকে ফারহা নাজ ও তার গাড়ি চালককে গ্রেফতার করে। এরপরে, ধৃতদেরকে আরো জেরা করে তদন্তে পুলিশ জানতে ফারহা, তার স্বামী আসিফ ও আসানসোলের দক্ষিণ থানার বস্তিন বাজারের বাসিন্দা চাঁদ ওরফে সঈফ আলি কুরেশি এই খুনের ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী। আসিফ চাঁদকে জাভেদকে খুন করার জন্য একজন কন্ট্রাক্ট কিলার বা শুটারের ব্যবস্থা করতে বলে সেই মতো চাঁদ তার বন্ধু আসানসোলের রেলপারের বাসিন্দা বছর ২০ র আদিল আলমকে এই কাজ করার বরাত দেয়। আদিলই সেই রাতে নিয়ামতপুরে জাভেদকে গুলি করে।
ঘটনা ঘটার সময় আদিলের সঙ্গে মোটরবাইকের পিছনে বসেছিলো সোনু ওরফে মহঃ এহতেশান। সোনুর বাইকটি এই ঘটনা ঘটানোর জন্য ব্যবহার করা হয়েছিল। সন্দীপ কররা আরো বলেন, এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত হিসেবে মোট ১০ জন অভিযুক্ত রয়েছে। সেই ১০ জনের মধ্যে আটজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই ঘটনায় ব্যবহৃত মোটরবাইকটিও উদ্ধার করা হয়েছে। যে পিস্তল থেকে গুলি চালানো হয়েছিল তাও উদ্ধার করা হয়েছে। ধৃতরা তাদের অপরাধ স্বীকার করেছে । এমনকি যেখানে এই পুরো ঘটনার ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল তার সিসিটিভি ফুটেজও পুলিশ পেয়েছে। তিনি এই ঘটনার কিনারায় কুলটি ও নিয়ামতপুর পুলিশের তৎপরতার প্রশংসা করেন। তিনি আরো বলেন, জাভেদকে খুন করার জন্য ৫ লক্ষ টাকার একটা চুক্তি হয়েছিল আসিফ চাঁদকে ৫ টাকা দিয়েছিলেন। চাঁদ শুটারদের সেই টাকা দেওয়ার আগেই পুলিশ তৎপর হয় ও তাদের সবাইকে গ্রেপ্তার করে। আসিফ এবং জাভেদ কুরেশি এখনও পলাতক। খুব শীঘ্রই তাদেরও গ্রেফতার করা হবে। আসিফ এবং তার স্ত্রী ফারহার পরিকল্পনা মতো জাভেদ কুরেশিই রেকি করেছিলেন। মোটামুটি তিন থেকে সাতদিন জাভেদ নিয়ামতপুরে পুর কর্মী সৈয়দ জাভেদ বারির গতিবিধি রেকি করে। সেই মতো ২৯ আগষ্ট রাতে শুটার পুর কর্মীকে খুন করে। ধৃতরা যে পিস্তলটি ব্যবহার করেছিলো, সেটি দেশী ও বিহার থেকে কিনেছিলো। ফারহা ও তার গাড়ি চালককে বাদ দিলে, বাকিরা আসানসোল ও নিয়ামতপুরের বাসিন্দা বলে ডিসিপি ( পশ্চিম) জানিয়েছেন।





