পশ্চিম বর্ধমান জেলা / করোনা ভাইরাসের কারণে বন্ধ সবকিছুই / জাঁকজমক ছাড়া সরকারি নির্দেশ মেনে এবারে বাসন্তী পুজোর আয়োজন জামুড়িয়ার ইকরায়
বেঙ্গল মিরর, রাজা বন্দোপাধ্যায়, আসানসোল, ৩০ মার্চঃ করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের কালো মেঘ। সংক্রমণের আশঙ্কায় করা যাবে না কোন ভিড় বা জমায়েত। তাই এই বছর কোন রকম জাঁকজমক ছাড়াই বাসন্তী পুজো হচ্ছে জামুড়িয়ার ইকড়ায়। তাও একবারে সরকারি নির্দেশ মেনে। নবমীর ভোজ, তিনদিনের মেলা থেকে যাত্রা কোনও কিছুই এবার হচ্ছে না জামুড়িয়ার ইকড়ার বাবুদের বাসন্তী পুজোয়।
বিদ্রোহী কবি কাজি নজরুল ইসলামের কবিতায় বাবুদের তাল পুকুরের কথা সবার জানা। জামুড়িয়ার ইকড়ার চট্টোপাধ্যায় পরিবার হলো সেই বাবু। যে বাড়ির জামাই হলেন শৈলজানন্দ মুখোপাধ্যায়। এই বাড়িতে যাতায়াত ছিলো দুই বাংলার কবির। সেই বাবুদের বাড়িতে ২০০ বছরের ঐতিহ্যশালী ও নিষ্ঠা সহকারে হওয়া এবারের বাসন্তীর পুজো কোন ধুমধাম নেই। তাই মন খারাপ হলেও কিছু করার নেই জামুড়িয়ার মানুষদের।
সোমবার ষষ্ঠী। মঙ্গলবার সপ্তমী। মায়ের মূর্তি ডাকের সাজে সেজে উঠেছে। সেজে উঠেছে রংমহলও । কিন্তু এবার সেই পুজোয় কেউ আসতে পারবেন না।
পরিবারের সদস্য অক্ষয় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, বিজয় গোবিন্দ চট্টোপাধ্যায় স্বপ্নাদেশ পেয়ে এই পুজো শুরু করেছিলেন। তখন বাংলা জুড়ে ছিলো গুটি বসন্তের প্রকোপ ছিলো। কথিত আ, এই পুজোর পরে সেই রোগের মহামারী দূর হয়। ব্রিটিশ কয়লা খনির সামান্য কর্মী বিজয় গোবিন্দ চট্টোপাধ্যায় একটা সময় ৮ টি কোলিয়ারির মালিক হয়ে উঠেছিলেন । তারপর থেকে সেই পুজো হয়ে আসছে এই চট্টোপাধ্যায় বাড়িতে।
চিত্তরঞ্জন চট্টোপাধ্যায় বর্তমানে এই পরিবারের কর্তা। এই পরিবারের প্রায় ১৫০ জন সদস্য বিভিন্ন কারণে দেশ ও রাজ্যের বাইরে থাকেন । করোনা ভাইরাসের আতঙ্কের কারণে এই বছরের বাসন্তী পুজোয় কেউ বাড়িতে আসতে পারেননি। এটাই আক্ষেপ চিত্তরঞ্জনবাবুদের। সোমবার সকালে সেখানে যান আসানসোল পুনিগমের মেয়র পারিষদ পূর্ণশশী রায়। তিনি পরিবারের সদস্যদের হাতে মাস্ক ও স্যানিটাইজার দিয়ে আসেন ।
গ্রামবাসীরা বলেন, গুটি বসন্তের মহামারী রুখে দিয়ছিলেন বাসন্তী মা। এবার করোনা ভাইরাসের প্রকোপ রুখতে আমরা মায়ের কাছে প্রার্থনা করবো। ★