ASANSOL-BURNPUR

আসানসোল জেলা হাসপাতালের আইসোলেশান ওয়ার্ডে ভর্তি থাকার পর মুম্বাই ফেরত পূর্ব বর্ধমানের মা ও ছেলে করোনা পজিটিভ; পাঠানো হল দুর্গাপুরের কোভিড হাসপাতালে; বর্তমানে আইসোলেশানে ভর্তি আরো দুই

সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত , বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, ১৬ ই মে, ২০২০:  
করোনা আবহে তৃতীয় দফার লক ডাউন প্রায় শেষ হবার মুখে। লক ডাউন বর্ধিত হবার একটা ক্ষীণ ইঙ্গিত মিলেছে প্রধানমন্ত্রীর জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণে।
 আর এরই মধ্যে মুম্বাই থেকে ক্যান্সারের চিকিৎসা  করে পূর্ব বর্ধমান ফিরে যাবার পথে  মাঝপথে পশ্চিম বর্ধমানের আসানসোলে মা ও ছেলের শরীরে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ মিললো। তারা পূর্ব বর্ধমান জেলার আউশগ্রামের জয়রামপুরের বাসিন্দা।

বৃহস্পতিবার রাতে দুজনকেই আসানসোল জেলা হাসপাতাল থেকে দূর্গাপুরের কোভিড – ১৯ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর ও আসানসোল জেলা হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, আউশগ্রামের বাসিন্দা বছর ৪৬ এর ওই মহিলা ক্যান্সারের চিকিৎসা করাতে মুম্বাইয়ে গেছিলেন। ওই মহিলার সঙ্গে  ছিলেন তাঁর বছর ২০ এর ছেলে। তারা যখন গত ১১ ই মে আউশগ্রামের উদ্দেশ্যে ফিরছিলেন, তখন বাংলা – ঝাড়খণ্ড সীমান্তে ডুবুরডিহি চেকপোস্টে পুলিশ তাদের আটকায় এবং নিয়ম অনুসারে  দুজনকেই আসানসোল জেলা হাসপাতালে আনা হয়।

চিকিৎসক মহিলাকে হাসপাতালের আইসোলেশান ওয়ার্ডে ভর্তি করেন। কিন্তু ওই মহিলার ছেলেকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়নি। এরই মধ্যে হাসপাতালের তরফে মা ও ছেলের লালারস বা সোয়াব পরীক্ষার জন্য কলকাতায় টেস্ট সেন্টারে পাঠানো হয়।

বৃহস্পতিবার রাতে সেই পরীক্ষার রিপোর্ট হাসপাতাল কতৃপক্ষের কাছে এলে, জানা যায়, মা ও ছেলে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত এবং তাদের দুজনেরই পজিটিভ রিপোর্ট এসেছে। রিপোর্ট হাতে পেয়েই হাসপাতাল কতৃপক্ষ তড়িঘড়ি জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দপ্তরের আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনা করে রাতেই তাদেরকে দূর্গাপুরের কোভিড ১৯ হাসপাতালে ভর্তি করায়। 

এদিকে, মা ও ছেলের করোনা আক্রান্ত হওয়ার কথা জানাজানি হওয়ার পরেই জেলা হাসপাতালের আশপাশের এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। অভিযোগ, মহিলার ছেলে গত তিনদিন ধরে হাসপাতাল চত্বরে ঘুরে বেড়িয়েছেন। বিভিন্ন দোকানে গিয়ে জিনিসও কিনেছিল ওই বছর ২০ এর যুবক। শুক্রবার সকালে আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশ হাসপাতালের কাছের রাস্তার বেশ কয়েকটি দোকানকে বন্ধ করিয়ে দেয়। 
  এদিকে বর্তমানে আসানসোল জেলা হাসপাতালের আইসোলেশান ওয়ার্ডে এক প্রসূতি ও তার সদ্যজাত ভর্তি রয়েছে। মা ও সন্তানের লালারস পরীক্ষার জন্য কলকাতার টেস্ট সেন্টারে পাঠানো হয়েছে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, এই প্রসূতি গত তিনদিন ধরে জেলা হাসপাতালের গাইনি ওয়ার্ডে ভর্তি ছিলো। বুধবার প্রসূতি সন্তানের জন্ম দেন। সন্তান জন্ম দেবার পর তার কিছু শারীরিক সমস্যা দেখা দেয় এবং তারপরই তাদেরকে চিকিৎসকের পরামর্শ মতো গাইনি ওয়ার্ড থেকে হাসপাতালের আইসোলেশান ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। 
এছাড়া সূত্র মারফত খবর, গত ৪৮ ঘন্টায় আসানসোল জেলা হাসপাতালের এমারজেন্সি বিভাগ থেকে মোট ৬ জনকে কল্যাণপুরের এক বেসরকারি হাসপাতালের আইসোলেশান ওয়ার্ডে করোনা আক্রান্ত সন্দেহে ভর্তি করা হয়েছে। ভর্তি হওয়া ৬ জনের মধ্যে বৃহস্পতিবার রাতে ভর্তি হওয়া ৪ জন ভিন জেলার বাসিন্দা। শুক্রবার সকাল ও বিকালে ভর্তি এক বধূ সহ ২ জন আসানসোলের বাসিন্দা বলে জেলা হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে।
সূত্র মারফত আরো খবর রয়েছে আসানসোলের কল্যাণপুরের বেসরকারি হাসপাতালের আইসোলেশান ওয়ার্ডে মৃত্যু হওয়া এক রোগীর লালারসের পরীক্ষার রিপোর্ট শুক্রবার বিকাল পর্যন্ত জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের হাতে আসেনি। বার্ণপুরের বাসিন্দা ঐ রোগীর বুধবার রাতে মৃত্যু হয়। বিভিন্ন উপসর্গ থাকায় তাকে সেখানে ভর্তি করা হয়েছিলো। ঐ রোগীর দেহ আপাততঃ জেলা হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।                                     এদিকে এসমস্ত বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হলে আসানসোল জেলা হাসপাতালের সুপারিনটেনডেন্ট ডাঃ নিখিল চন্দ্র দাস বলেন, জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের নির্দেশ মোতাবেক সবকিছু নিয়মানুসারে করা হচ্ছে।

News Editor

Mr. Chandan | Senior News Editor Profile Mr. Chandan is a highly respected and seasoned Senior News Editor who brings over two decades (20+ years) of distinguished experience in the print media industry to the Bengal Mirror team. His extensive expertise is instrumental in upholding our commitment to quality, accuracy, and the #ThinkPositive journalistic standard.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *