KULTI-BARAKAR

কেকেএসসির তরফে ইসিএলের সদর দপ্তরে বিক্ষোভ

বেঙ্গল মিরর, সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত,শাঁকতোড়িয়াঃকোল ইন্ডিয়াকে বেসরকারিকরণ ও কমার্শিয়াল মাইনিং বা কোল ব্লককে নিলামের বিরোধীতা সহ একাধিক দাবিতে মঙ্গলবার তৃনমুল কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি অনুমোদিত কয়লা খাদান শ্রমিক কংগ্রেসের পক্ষ থেকে কুলটির শাঁকতোড়িয়ায় ইসিএলের সদর দপ্তরে বিক্ষোভ করা হয়। আইএনটিটিইউসি রাজ্য সভানেত্রী তথা রাজ্যসভার সাংসদ দোলা সেনের নেতৃত্বে প্রচুর সংখ্যায় কেকেএসসির সদস্যরা এদিন বিক্ষোভে সামিল হন৷ সেই বিক্ষোভ সমাবেশে তৃনমুল কংগ্রেসের পশ্চিম বর্ধমান জেলা সভাপতি তথা আসানসোল পুরনিগমের মেয়র জিতেন্দ্র তেওয়ারি বলেন, কয়লা শিল্পে জাতীয়করণ ১৯৭৩ সালে হয়েছিলো। এই সময়টা আমার মনে আছে কারণ সেই বছর আমার জন্ম হয়েছিলো।

আমার মা আমাকে বলেছিলেন, যখন কোলিয়ারি জাতীয়করণ হয়, সেই বছর আমার জন্ম হয়েছিলো। এখন দেশে রাজনীতিকে ধর্মের নামে ভাগাভাগি হয়েছে চেষ্টা করা হচ্ছে । প্রথমে আমরা এটাকে গুরুত্বর সঙ্গে দেখিনি। এখন ভাবছি, কেন বিজেপি ধর্মের নামে সমাজকে ভাগাভাগি করার পাশাপাশি করছে? এর পেছনে প্রধান যড়যন্ত্র ছিলো যে, অন্যক্ষেত্রে যে লড়াই হয়। শ্রমিক, ছাত্র, কৃষক যারা এক হয়ে যে লড়াই করে, তার থেকে তাদেরকে সরিয়ে ধর্মের লড়াইয়ে সামিল করে দেওয়া। শ্রমিকশ্রেণীকে তাদের মাথা নিজেদের অধিকার রক্ষার লড়াই থেকে কিভাবে দূরে সরিয়ে দেওয়া যায়। এই কারণেই গত ৪/৫ বছর ধরে ধর্মের নামে ভাগাভাগি করার চেষ্টা করছে। এর পরিনাম তো সামনেই আছে। গোটা বছর ধরে আমরা শ্রমিক, ছাত্র ও কৃষক সবাই মিলে একজোট হয়ে লড়াই করি। কিন্তু, ভোটের সময় তারাই আবার হিন্দু ও মুসলমানে ভাগ হয়ে যায়। আমার আপনাদের আবেদন এই যে, আমরা সবাই যদি এক হয়ে লড়াই করতে চাই, তাহলে ভোটের সময় হিন্দু ও মুসলমানে ভাগাভাগি করতে হবে না। তিনি আরো বলেন, ২০১৪ সালে লোকসভা ভোটের সময় যখন এখানে দোলা সেন দলের প্রার্থী হয়েছিলেন, তখন  আমরা হিন্দু ও মুসলমানে ভাগ হয়ে যাই। আজ যখন কেন্দ্র সরকার জনবিরোধী ও শ্রমিক বিরোধী নীতি নিয়ে আসছে, তখন সংসদে এমন একজন প্রতিনিধি দরকার, যে সেখানে আমাদের কথা বলবেন। কিন্তু, আমাদের দূর্ভাগ্য যে, এখানকার সাংসদ মোদি সরকারের পক্ষে রয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় দোলা সেনকে রাজ্যসভায় এই কারণে পাঠিয়েছেন যাতে তিনি, শ্রমিক দের কথা কেন্দ্র সরকারের কাছে বলতে পারেন। আসানসোল দূর্গাপুর শিল্পাঞ্চল শ্রমিক দের এলাকা। তারজন্য আমাদের দুঃখ বুঝতে পারেন, এমন একজন দিল্লিতে থাকা উচিত। এটা না হওয়া পর্যন্ত আমাদের লড়াই কোনদিন পুরো হবেনা। কর্পোরেট লেভেলের বৈঠকে আমাদের ডাকা হয় না। সিএমডি আমাদের নাই ডাকতে পারেন।

কিন্তু এখানে এটা ঠিক যে, তৃনমুল কংগ্রেস চাইলে, তবেই এখানে ইসিএল চলবে। এই কথা ইসিএল কতৃপক্ষ পরীক্ষা করে দেখতে চাইলে, তারা তা করে দেখে নিতে পারেন। এখানকার মানুষ ও শ্রমিকরা আমাদের সঙ্গে আছেন। যখন সব শ্রমিক সংগঠন ধর্মঘট ডাকে, তখন খনি কতৃপক্ষ কেকেএসসির কাছে সাহায্যের জন্য আসেন। তখন তৃনমূল কংগ্রেস ও কেকেএসসি নিজেদের ক্ষমতা দিয়ে কোলিয়ারিতে উৎপাদন করে দেখায়। কোল ইন্ডিয়া ও ইসিএল তৃনমুল কংগ্রেসের ক্ষমতায় ও সাহায্যে চলছে। কিন্তু আধিকারিক স্তরে এমন কিছু করা হচ্ছে, যাতে আগামী দিনে আমাদের ভাবার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। কেন্দ্র সরকার এখন এমন প্রস্তাব এনেছে যে, শ্রমিক দের পাশাপাশি আধিকারিকদেরও খারাপ লাগছে। ৫০০ জন শিল্পপতি যখন  কয়লা বিক্রি করার অধিকার পেয়ে যাবে, তখন জিএম ও সিএমডির কি গুরুত্ব থাকবে? প্রথমে শ্রমিকরা আতঙ্কিত ছিলেন । তাদের এই লড়াইয়ে যদি সহযোগিতা না করে বা পাশে না আসেন, তাহলে আধিকারিকদেরও অস্তিত্ব শেষ হয়ে যাবে। আপনারা সরাসরি সহযোগিতা না করতে পারলে, চুপচাপ করুন৷ ভেতরে ভেতরে চুপচাপ তৃনমুল কংগ্রেসকে সমর্থন করুন৷ যেখানেই তৃনমুল কংগ্রেস ও কেকেএসসির লোকেরা আছে, সেখানে তাদের সমর্থন করুন৷ তবেই কোল ইন্ডিয়া, ইসিএল ও আপনারা বাঁচবেন। তিনি আরো বলেন, শ্রমিক দের পাশাপাশি গ্রাম এলাকাতেও আগামী দিনে সংকট আসতে চলেছে। বেসরকারি সংস্থা এলে, গ্রামে বিদ্যুৎ, রাস্তা, জল কমিউনিটি হলের মতো সামাজিক কাজ কি করে হবে? শ্রমিক দের পাশাপাশি কয়লা অঞ্চলের প্রতিটা মানুষের জীবনে এর প্রভাব পড়বে। লক ডাউনের পরে এক লক্ষ মানুষ এনে ইসিএলের সদর দপ্তর ঘেরাও করা হবে। তখন পর্যন্ত এই আন্দোলন চলবে, যতক্ষণ না কেকেএসসিকে কর্পোরেট লেভেল বা জেসিসিতে প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ দেওয়া না হয়। ভগবান যেন ইসিএলের আধিকারিক দের সদ্বুদ্ধি দেন

News Editor

Mr. Chandan | Senior News Editor Profile Mr. Chandan is a highly respected and seasoned Senior News Editor who brings over two decades (20+ years) of distinguished experience in the print media industry to the Bengal Mirror team. His extensive expertise is instrumental in upholding our commitment to quality, accuracy, and the #ThinkPositive journalistic standard.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *