পথ দূর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে রণক্ষেত্র দূর্গাপুর, ডাম্পারের ধাক্কায় অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়ার মৃত্যু ,ভাঙ্গচুর, আগুন, জনতার বিক্ষোভ


বেঙ্গল মিরর,রাজা বন্দোপাধ্যায়, দূর্গাপুর, ১১ আগষ্টঃ পাথর বোঝাই একটি ডাম্পারের ধাক্কায় মৃত্যু হলো অষ্টম শ্রেণির এক স্কুল পড়ুয়ার। মঙ্গলবার সকালের এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে পশ্চিম বর্ধমান জেলার দূর্গাপুরের কাশীরাম দাস রোড এলাকা রণক্ষেত্রের চেহারা নেয়। এই ঘটনার পরে এলাকার উত্তেজিত জনতারা রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখানোর পাশাপাশি ভাঙচুর করে ঘাতক ডাম্পারটিকে। আগুন লাগানো হয় চালকের কেবিনে। খবর পেয়ে বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। বেশ কয়েক ঘন্টার চেষ্টায় পুলিশ উত্তেজিত জনতাকে শান্ত করে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। দূর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় চাপা উত্তেজনা থাকায় পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে। পুলিশ ডাম্পারটিকে আটক করার পাশাপাশি, চালককে গ্রেফতার করে। তবে ডাম্পারে কোন খালাসি ছিলোনা বলে পুলিশ জানতে পারে। দূর্গাপুরের বেনাচিতির শ্রীনগরপল্লীর বাসিন্দা মৃত পড়ুয়ার নাম শুভ্রজ্যোতি মন্ডল (১৩)। সে দূর্গাপুরের একটি বেসরকারি ইংরাজি মাধ্যম স্কুলে অষ্টম শ্রেণিতে পড়তো।


পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, শুভ্রজ্যোতি মন্ডল কাশীরাম দাস এলাকায় মামারবাড়িতে বেড়াতে এসেছিলো। তার সাইকেল চালানোর নেশা ছিলো। শুভ্রজ্যোতি মঙ্গলবার সকালে সাইকেল নিয়ে বেরিয়েছিলো। সেই সময় কাশীরাম দাস রোডে প্রচন্ড গতিতে ছুটে আসা পাথর বোঝাই একটি ডাম্পার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তাকে ধাক্কা মারে। সাইকেল সহ শুভ্রজ্যোতি ডাম্পারের চাকায় আটকে যায়। তখন চালক ডাম্পার নিয়ে পালানোর জন্য তাকে চাকার সঙ্গে বেশকিছুটা টেনে নিয়ে যায়। শুভ্রজ্যোতির মা তা দেখার পরে ডাম্পারের পেছনে দৌড়ে যান ছেলেকে বাঁচানোর জন্য। এলাকার বাসিন্দারাও দৌড়ে আসেন। কিন্তু ততক্ষনে সব শেষ। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে দূর্গাপুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে, চিকিৎসক পরীক্ষা করে তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। আরো জানা গেছে, দিন কয়েক আগে অসুস্থ হয়ে দূূর্গাপুর ইস্পাত হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল বেনাচিতির শ্রীনগরপল্লীর শুভ্রজ্যোতি মন্ডল। সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পরে সে মায়ের সঙ্গে কাশীরাম দাস এলাকায় মামারবাড়িতে আসে। এই দুর্ঘটনার পরে উত্তেজিত হয়ে পড়েন এলাকার বাসিন্দারা। তারা ভাঙচুর চালায় ঘাতক ডাম্পারটিকে। ,
আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় ডাম্পারের চালকের কেবিনে। উত্তেজিত জনতারা রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখিয়ে দাবি করে যে, মৃত স্কুল পড়ুয়ার পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে ডাম্পার মালিককে। এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে দেওয়া হবেনা ওভারলোডেড কোনো গাড়ি৷ খবর পেয়ে বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে আসে। পুলিশ ক্ষতিপূরণ দেওয়ার পাশাপাশি এলাকার বাসিন্দাদের দাবি পূরণ করার আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
অষ্টম শ্রেণীর স্কুল পড়ুয়ার মৃত্যুর ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।