শারদ উৎসবকে সামনে রেখে বাংলা ও ঝাড়খণ্ড পুলিশের মধ্যে বৈঠক
অপরাধে রাশ টানতে একাধিক সিদ্ধান্ত
বেঙ্গল মিরর, রাজা বন্দোপাধ্যায়, আসানসোল, ৩ অক্টোবরঃ অক্টোবর মাসে বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দূর্গাপুজো। সেই শারদ উৎসবের প্রাক্কালে বাংলা ও ঝাড়খন্ড সীমান্ত লাগোয়া দুই রাজ্যের উচ্চপদস্থ পুলিশ আধিকারিকরা অপরাধ বন্ধ করতে আসানসোলে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেন। এই সময়ে দুই রাজ্যের পুলিশ একে অপরকে অপরাধ আটকাতে সহযোগিতা করার জন্য এই বৈঠকে একাধিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ।
আসানসোল দূর্গাপুরের পুলিশ কমিশনার সুকেশ কুমার জৈন, ধানবাদের সিনিয়র সুপারিনটেনডেন্ট অফ পুলিশ (এসএসপি) অসীম বিকাশ মিন্জ, জামতাড়ার পুলিশ সুপার দীপক কুমার সহ দুই রাজ্যের উচ্চপদস্থ পুলিশ আধিকারিক ও দুই রাজ্যের সীমান্ত লাগোয়া থানা ওসিরা উপস্থিত ছিলেন সেই বৈঠকে। সেই বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে পুলিশ কমিশনার, এসএসপি ও পুলিশ সুপার সহ দুই রাজ্যের থানার ওসিদের নিয়ে দ্রুত বাংলা ঝাড়খন্ড পুলিশের একটি ” হোয়াটসঅ্যাপ কোঅর্ডিনেশন গ্রুপ” চালু করা হবে। এছাড়াও দুই রাজ্যের অপরাধীদের তালিকার হাত বদল করা হবে দুই রাজ্য পুলিশের মধ্যে। এই বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যখন এই দুই রাজ্যের সীমান্ত থানা এলাকায় কোন অপরাধ ঘটবে সঙ্গে সঙ্গে তা সেই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের মাধ্যমে দুই রাজ্যের পুলিশকে জানিয়ে দেওয়া হবে। যাতে দুই রাজ্যের পুলিশ অপরাধীদের ধরতে একে অপরকে সহযোগিতা করেন ।
ধানবাদের সিনিয়র সুপারিনটেনডেন্ট অফ পুলিশ অসীম বিক্রম মিন্জ বলেন, সম্প্রতি আমি ধানবাদে এসেছি। লক্ষ্য করে দেখেছি আসানসোলে এটিএম লুঠ সংক্রান্ত অপরাধের মতো ঘটনা ঘটছে। একইভাবে ধানবাদেও এই ধরনের অপরাধ ঘটেছে। আসানসোল একটি সোনার দোকানের যেভাবে লুঠের ঘটনা ঘটেছিলো, ধানবাদেও এমনই ঘটনা ঘটেছে। এছাড়াও আরো বেশকিছু অপরাধ হয়েছে, যেগুলোর সঙ্গে ধানবাদের ঘটনার অনেকটা মিল আছে। দেখে মনে হচ্ছে, দুই রাজ্যের ঘটনার সঙ্গে জড়িত অপরাধীরাও এক হতে পারে।
তৈরী করা হবে ওয়াটসএ্যাপ গ্রুপ
সেজন্য আমরা ঠিক করেছি দুই রাজ্যের পুলিশের মধ্যে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ তৈরি করার। সেই গ্রুপে আমি, আসানসোল দূর্গাপুরের পুলিশ কমিশনার ছাড়াও থানার ওসিদেরকেও যুক্ত করা হবে। যে কোনো অপরাধ ঘটলেই সঙ্গে সঙ্গে তা ঐ গ্রুপে দিয়ে দুই রাজ্যের পুলিশকে জানানো হবে। যাতে একসঙ্গে অপরাধীদের ধরার জন্য সহযোগিতা হাত বাড়ানো যায়। অন্য অপরাধের পাশাপাশি ও কোনভাবেই অবৈধ কয়লা ও বালি বাংলা থেকে ঝাড়খন্ড ঢুকতে দেওয়া না বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ।
অন্যদিকে, জামতাড়ার পুলিশ সুপার বলেন, মাত্র কয়েকদিন আগেই বদলি হয়ে এসেছি। জামতাড়র সঙ্গে বাংলার সীমান্ত এলাকা জুড়ে আছে। স্বাভাবিকভাবেই এক রাজ্যের অপরাধীরা পাশের রাজ্যে গিয়ে আশ্রয় নিচ্ছে। আমরা অপরাধীদের একটা তালিকা তৈরি করেছি। সেই তালিকা আমরা দ্রুত আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশ কমিশনারের কাছে পৌঁছে দেবো। তেমনি সেখান থেকে অপরাধীদের একটা তালিকা তারা আমাদেরকে দেবেন। সাইবার অপরাধের জন্য চিহ্নিত ” জামতাড়া গ্যাং ” যের কাজ নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে তিনি জানান ।
এদিকে আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশের ডিসিপি (পশ্চিম) অনমিত্র দাস বলেন, একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ নতুন করে তৈরি করা হচ্ছে । যাতে এই দুই রাজ্যে উচ্চপদস্থ পুলিশ আধিকারিক থেকে শুরু করে থানার ওসিরা থাকবেন । এছাড়া আমরা দুই রাজ্যের যেসব অপরাধীদের নামের তালিকা আছে সেই তালিকা দু-একদিনের মধ্যে নিজেদের মধ্যে দেওয়া নেওয়া করে নেবো। যাতে অপরাধ আটকানো যায়।