মুখ্যমন্ত্রীর রোষের মুখে দূর্গাপুরের মেয়র দিলীপ অগস্থি, বৈঠক ডেকে সরানোর নির্দেশ
পুরনিগমের পারফরম্যান্স খারাপ
বেঙ্গল মিরর রাজা বন্দোপাধ্যায়, আসানসোল, ৫ নভেম্বরঃ দূর্গাপুর পুরনিগমের পুরপরিসেবা সহ সব ক্ষেত্রেই পারফরম্যান্স খারাপ। আর তাতেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের রোষের মুখে পড়লেন দূর্গাপুরের মেয়র দিলীপ অগস্থি।
মুখ্যমন্ত্রী বৃহস্পতিবার নবান্নের সভাঘরের বৈঠকে প্রকাশ্যেই দূর্গাপুরের মেয়রের কাজে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তাকে বৈঠক ডেকে পদ থেকে দ্রুত সরানোর নির্দেশ দেন রাজ্যের পুর নগরোন্নয়ন দপ্তরের মন্ত্রী ফিরহাদ (ববি) হাকিমকে।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের পুরনিগম ও পুরসভাগুলির পারফরম্যান্স পর্যালোচনা করতে একটি বৈঠক করেন। সেই বৈঠকে পুর ও নগরোন্নয়ন দপ্তরের মন্ত্রী ববি হাকিমের কাছ থেকে মুখ্যমন্ত্রী সবকিছুর রিপোর্ট নিচ্ছিলেন। তখন ববি হাকিম মুখ্যমন্ত্রীকে বলেন, দূর্গাপুরের এমন পরিস্থিতি হয়েছে যেখানে মেয়রই কোন কাজ করেন না ।
এরপরেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রীতিমতো ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন, চেঞ্জ করে দাও । মেয়র যদি কাজ না করেন, তার পদে থেকে কি লাভ। দরকার হলে বৈঠক ডাকো । কারণ তিনি নির্বাচিত হয়েছেন। সবাই মিলে যেটা ঠিক করবে সেটাই হবে । মেয়র যা করছেন, এটা ঠিক নয় । দূর্গাপুরে আগেও আমি নিজে গেছি । আমি নিজেও ওনাকে দু/তিনবার বলেছি ।
যদি কেউ কাজ না করে তবে দায়িত্বে বা পদে থাকার তার কোন প্রয়োজন নেই, বলে মুখ্যমন্ত্রী মন্তব্য করেন । তিনি আরো বলেন, এখন একটা মুশকিল। পদ থেকে সরালে অন্য দলে চলে যাবেন। গেলে যাক।
মুখ্যমন্ত্রীর এমন মনোভাবের পরে এখন দূর্গাপুরের মেয়র দিলীপ অগস্থি অগস্থি কি ইস্তফা দেবেন ? এই নিয় জোর জল্পনা শুরু হয়েছে ঘাসফুল শিবিরে । মেয়র দিলীপ অগস্থি এদিন সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের বলেন, আমি এই ব্যাপারে কিছু জানিনা। কেউ আমাকে কিছু এই ব্যাপারে কেউ বলেন নি। আপনাদেরকেও কাছেই এটা শুনলাম। আমি আর এই প্রসঙ্গে কি আর বলবো।
পুরবাসীরাও পর্যন্ত মেয়রের কাজে ক্ষুব্ধ
শুধু বিরোধী রাজনৈতিক দল, দূর্গাপুরের শাসকদল তৃনমুল কংগ্রেসের বড় একটা অংশ থেকে সাধারণ পুরবাসীরাও পর্যন্ত মেয়রের কাজে ক্ষুব্ধ । মেয়রকে নিয়ে তার দল বলতে গেলে প্রথম থেকেই অস্বত্বিতে রয়েছে । বারবার দলেরই কাউন্সিলরের সাথে মেয়রের মনোমালিন্য ঘটেছে । করোনার আগে পশ্চিম বর্ধমান জেলার প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় মেয়র দিলীপ অগস্থিকে বেশ কড়া ধমক দিয়ে সবাইকে নিয়ে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন ।
কিন্তু তারপরেও কোনকিছুরই বদল হয় নি। বারবার পুর কাউন্সিলরদের সঙ্গে মনোমালিন্য হয়েছে মেয়রের । দূর্গাপুর ব্যারাজের ৩১ নং লক গেট ভেঙ্গে যাওয়ার পরে এলাকায় এলাকায় জল সরবরাহ করার ক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়েছে দূর্গাপুর পুরনিগম । দূর্গাপুর পুরনিগমে ৪৩ টি ওয়ার্ড রয়েছে।
২০১৭ সালের পুর নির্বাচনে দল জেতার পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যা প্রাক্তন আমলা দিলীপ অগস্থিকে দূর্গাপুরের মেয়র করেছিলেন।