জেলায় করোনা রোগীর সংখ্যা ১২ হাজার ছুঁই ছুঁই, মেডিক্যাল অফিসার করোনা আক্রান্ত
বেঙ্গল মিরর, রাজা বন্দোপাধ্যায়, আসানসোল, ১৬ নভেম্বরঃ সাত মাসেরও বেশি সময় ধরে পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোলের সালানপুর ব্লকে করোনার বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনি হলেন সালানপুর ব্লক মেডিকেল অফিসার বা বিএমওএইচ ডাঃ সুব্রত শিট। শেষ পর্যন্ত তিনিও করোনা আক্রান্ত হলেন।
সোমবার ডাঃ শিট নিজেই করোনা আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হলেন চিত্তরঞ্জনে রেলের কস্তুরবা গান্ধী হাসপাতালে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, চিকিৎসকের সর্দি ও জ্বরের সঙ্গে গা ও হাত পায়ে ব্যথা আছে। তবে সবচেয়ে বেশি যেটা তার পরিবার, সহকর্মী চিকিৎসক ও চিকিৎসাকর্মীদের ভাবাচ্ছে তা হলো ডাঃ শিটের হাই সুগার। তবে তার স্ত্রী ও মেয়ে করোনা মুক্ত আছেন বলে জানা গেছে। ডাঃ শিট করোনা আক্রান্ত হওয়ার পরে ডাঃ অমরেশ মাজিকে সালানপুরের পিঠাইকেয়ারি ব্লক হাসপাতালের ইনচার্জ করা হয়েছে।
আপাততঃ ডাঃ মাজি সাধারণ চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার পাশাপাশি করোনা সংক্রান্ত সব দায়িত্ব সামলাবেন বলে জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে জানা গেছে।
বলতে গেলে একবারে প্রথম দিন থেকে ডাঃ সুব্রত সিট নিজে তৎপরতার সঙ্গে করোনার বিরুদ্ধে সামনে থেকে দাঁড়িয়ে লড়াই চালিয়ে এসেছেন। প্রয়োজনমতো নিজেই স্কুটার চালিয়ে পৌঁছে গেছেন আক্রান্তদের বাড়িতে। বহু ক্ষেত্রেই স্বাস্থ্যকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে নিজে তদারকি করে করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য অ্যাম্বুলেন্সে করে পাঠিয়েছেন বিভিন্ন হাসপাতালে। এমনকি আগে সপ্তাহ শেষে তিনি তার পুরুলিয়ার বাড়িতে চলে যেতেন। কিন্তু করোনার প্রকোপ শুরু হওয়ার পর থেকে বাড়ি যাওয়াও বন্ধ করে দিয়েছিলেন।
বলতে গেলে সর্বক্ষণ তিনি হাসপাতালের আবাসনেই থাকতেন। ২৪ ঘন্টা তদারকি করতেন চিকিৎসার পরিষেবার। তাকে দেখে স্বাস্থ্যকর্মীরা উৎসাহিত হয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়েও করোনার বিরুদ্ধে কাজ করে যাচ্ছিলেন। কিন্তু ডাঃ শিট করোনা আক্রান্ত হওয়ার খবরে কিছুটা হলেও তারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। স্বাস্থ্যকর্মী পিন্টু দাস বলেন, ডাক্তারবাবু অধিনায়কের মতো করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করে এত মাস পরে করোনা করোনা আক্রান্ত হলেন।
এদিন হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, বিএমওএইচ ডাঃ শিট চিকিৎসার পরে এখন অনেকটাই সুস্থ আছেন। তার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল আছে। অন্যদিকে, পশ্চিম বর্ধমান জেলায় করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১২ হাজার ছুঁই ছুঁই।
সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১০ হাজার ৯২৩
রবিবার রাতে রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের তরফে যে বুলেটিন প্রকাশ করা হয়, তা থেকে জানা গেছে, জেলায় এই মুহুর্তে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১১ হাজার ৮২২। তার মধ্যে এ্যাক্টিভ রোগীর সংখ্যা ৭৮৬। রবিবার রাত পর্যন্ত করোনাকে হারিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১০ হাজার ৯২৩ জন। মৃত্যু হয়েছে ১১৩ জনের। রবিবার রাত পর্যন্ত ( গত ২৪ ঘন্টায়) জেলায় নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৬৯ জন। ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১০৮ জন।