রানীগঞ্জে রাজারবাঁধ পুকুর জমি মাফিয়ারা মাটি ভরাট করে দখলের চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ
বেঙ্গল মিরর, দেব ভট্টাচার্য, আসানসোল: রানীগঞ্জ অঞ্চলের ১২২ বিঘার সবচেয়ে বড় পুকুর রাজারবাঁধ এ ক্রমশ জমি মাফিয়ারা মাটি ভরাটকরে দখলের চেষ্টা করছে ।এর বিরুদ্ধে শুক্রবার রীতিমতো ক্ষোভ প্রকাশ করেন এলাকার বাসিন্দা এবং সিপিএম এর বিধায়ক রুনু দত্ত।
তিনি বলেন দুই হাজার পাঁচ সালে সিপিএমের আমলে একবার জমি মাফিয়ারা এটা দখলের চেষ্টা করার সাথে সাথে তখনকার সরকার এবং আমরা প্রতিরোধ করে তা বন্ধ করে দিয়েছিলাম ।এখন যারা এই পুকুর ভরাট করে জমি দখল করতে চাইছে তারা তৃণমূলের সাথে যুক্ত দুষ্কৃতী ।বারবার প্রশাসনকে এখানকার কাউন্সিলর থেকে শুরু করে আমরা এ বিষয়ে জানালেও সকলেই হাত পা গুটিয়ে বসে আছেন ।
অন্যদিকে তৃণমূলের আসানসোল পুরসভার প্রশাসক বোর্ডের সদস্য এবং বিদায়ী মেয়র পারিষদ ও তৃণমূলের জেলার সহ-সভাপতি পূর্ণশশী রায় বলেন আমরা খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে সেখানে সহকারী পুলিশ কমিশনার তথাগত পান্ডেকে বিষয়টি জানাই।ওনার নির্দেশে পুলিশ যায়।সঙ্গে আমাদের ইন্জিনিয়ারকে পাঠিয়েছিলাম । যারা ভরাট করছিল তারা মাটি ফেলে পালিয়ে গেছে। পুরসভার পক্ষ থেকে রানীগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তবে দুষ্কৃতীদের নাম না পাওয়ায় অভিযোগে তালেখা নেই। তিনি বলেন এর সাথে তৃণমূল যুক্ত নয়।
ওই এলাকার কাউন্সিলর আর এস জলিস বলেন রাতের অন্ধকারে ধীরে ধীরে রানীগঞ্জের সবচেয়ে বড় ১২২ বিঘা সরকারি পুকুরটি জমি মাফিয়ারা ভরাট করে দখল করার চেষ্টা করছে। এই পুকুরটির মূল মালিকানা রাজ্য সরকার। কেবলমাত্র একটি দিকে একটি অংশে অন্য একজন দাবি করায় তা আদালতে মামলা চলছে । পুকুরটি কুমার বাজার, আলিনগর, রাজারবাঁধ সহ ৮৯,৩৫ এবং ৯১ নম্বর ওয়ার্ডের হাজার হাজার মানুষ বেঁচে আছেন।
তাছাড়া বর্ষার সময় শহরের বিভিন্ন জায়গার জল বিশেষ করে নিচু এলাকার জল এসে জমে এখানে। এটা যদি ভরাট হয়ে যায় তাহলে আগামী দিনে রানীগঞ্জের বড় অংশও জলে ডুবে থাকবে। বিজয়ী কাউন্সিলর আর এস জলিস বলেন ২০১৮ সালে যখন এই পুকুর ভরাট হচ্ছিল তখন পুরসভার ৩৭ তম বোর্ড মিটিংয়ে আমরা প্রস্তাব নিয়েছিলাম যারা এই অন্যায় করছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে এবং পুকুরটিকে পুনরায় আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা হবে। তার জন্য প্রয়োজনে ডিপিআর তৈরি করার সিদ্ধান্ত হয়েছিল ।
এই বৈঠকেই তদানীন্তন মেয়র এবং চেয়ারম্যান উপস্থিত ছিলেন । ওই সময় আমি নিজে জেলাশাসককে বিস্তারিত তথ্য দিয়ে অভিযোগও করেছিলাম। এর পর নতুন করে আবার কয়েকদিন ধরে মাটি এনে আরমাদ নগরের দিক থেকে ভরাটের কাজ শুরু হয়েছে । এ আমি নিজেই পুরো কমিশনারকে হোয়াটসঅ্যাপে অভিযোগ করেছিলাম ।উনি লিখেছিলেন দেখছি । শুনেছি পুরো প্রশাসক বোর্ডের সদস্য ওখানে পুলিশ পাঠিয়েছিলেন এবং ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বলেছিলেন ।কিন্তু যথারীতি ওখানে দিনের-পর-দিন মাটি পড়ছে ভরাটের জন্য। আর আমাদের দাবি মত বা পুরসভার পুরনো প্রস্তাব মত পুকুরটা আর পরিষ্কার বা সংস্কার করা হয়নি । শুকনো জায়গাটায় বাঁশ দিয়ে ঘিরে দেওয়ার যে বিষয় ছিল তাও হয়নি। আমরা যদি দেখি এখানে প্রশাসন কিছু করছে না তাহলে আন্দোলনে যাব।
পুকুরটিকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার দাবি
যদিও রানীগঞ্জের বিধায়ক দত্ত বলেন আমি ছিলাম না, কলকাতায় ছিলাম। আজই এসে পুরো বিষয়টা শুনি এবং আমি কালই জেলাশাসক ,ভূমি রাজস্ব দপ্তর সহ সংশ্লিষ্ট সব জায়গায় আবারও চিঠি দিয়ে অবিলম্বে পুকুরটিকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার দাবি জানান ।কেননা এটাই হচ্ছে রানীগঞ্জের মূল হৃদপিণ্ড ।শাসকদলের বিষয়টা নিয়ে গুরুত্ব দিয়ে দেখাও উচিত ছিল। ওদের জমি মাফিয়া এটা করা হয় তোরা হাত গুটিয়ে বসে আছে।