জামুড়িয়ায় ভেঙে পড়ল জলাধার
ভোটের আগে রাতারাতি জল সঙ্কট মেটাতে গিয়ে জল তোলার চেষ্টা
বেঙ্গল মিরর, রাজা বন্দোপাধ্যায়, আসানসোল, ৭ এপ্রিলঃ ভোটের মুখে এলাকার জল সঙ্কট মেটাতে পরিত্যক্ত জলাধারে জল তুলতে গিয়ে হলো বিপত্তি। হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ল বিশাল জলাধার। মঙ্গলবার মধ্যরাতে ঘটনাটি ঘটেছে আসানসোলের জামুড়িয়ায়।
পানীয় জলের তীব্র সঙ্কট রয়েছে জামুড়িয়ার ডোবরানা, ধসল, চিঁচুরিয়া এলাকায়। সেই সব এলাকায় ভোটের আগে রাতারাতি পানীয় জল সরবরাহ করতে গিয়ে বিতর্কে জড়ালো তৃণমূল কংগ্রেসের নেতৃত্ব। পরিত্যক্ত জলাধারে জল ভরতে গিয়ে ভেঙে পড়লো পুরো জলাধারটি। ভেঙে পড়ল ১ লক্ষ ৭৫ হাজার গ্যালনের বিশাল জলের ট্যাঙ্ক বা জলাধার। তৃণমূলে কংগ্রেসের দখলে রয়েছে জামুড়িয়ার চিঁচুরিয়া পঞ্চায়েত। চিঁচুড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের আরএন কলোনি সংলগ্ন এলাকায় এই ঘটনা পরে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। মধ্য রাতে এই ঘটনা ঘটায় কোনও প্রাণহানির ঘটনা অবশ্য ঘটেনি। দিনের বেলায় এই ঘটনা ঘটলে বড় দুর্ঘটনা যেমন ঘটতে পারতো, তে ও বহু ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা ছিল।
চিঁচুড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান বিশ্বনাথ সাঙুইয়ের দাবি, বাম আমলে এই জলাধারের সাহায্যে জল সরবরাহ করা হতো এলাকায়। কিন্তু গত ১৫ বছরের বেশি সময় ধরে এই জলের ট্যাঙ্ক থেকে তারা জল সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছিলেন।
তৃণমূল কংগ্রেসের নেতৃত্বর দাবি, তারাই অজয় নদের জলপ্রকল্পের পাইপ লাইন মেরামত করিয়েছিলেন। বুধবার থেকে স্বাভাবিকভাবে জল সরবরাহ হত। কিন্তু জল ভরার সময় ট্যাঙ্ক বা জলাধারটি ভেঙে পড়লে। এর জন্য দায়ি সিপিএম। আমরা নই। জামুড়িয়ার সিপিএম প্রার্থী ঐশী ঘোষ প্রশ্ন তোলেন, পরিত্যক্ত ঘোষিত হওয়া জলাধারে কেন জল তোলা হল ? কার অঙ্গুলি হেলনে এই ঘটনা ঘটলো ? দিনের বেলায় দুর্ঘটনা ঘটলে জীবনহানির ঘটনা ঘটতো। তার দায় কে নিতো?
ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, এই জল ট্যাঙ্কটি ১৯৮৭ সালে তৈরি হয়েছিলো । ২০০১ সাল পর্যন্ত এই ট্যাঙ্ক থেকে জল সরবরাহ হয়েছিল। পরে জলের সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় ট্যাঙ্কটি খালি পড়েছিল। বাম আমলেই এই ট্যাঙ্কটিকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করে দেওয়া হয়েছিল। অভিযোগ উঠেছে, গত ১০ বছর ধরে নতুন ট্যাঙ্ক তৈরি করা হয়নি। কোনও ব্যবস্থা না নিয়ে ভোটের আগে ঐ ট্যাঙ্কে জল তোলার ফলেই ট্যাঙ্কটি ভেঙে পড়েছে। এই ঘটনার দায় কার? তা নিয়ে চাপানওতোর শুরু হয়েছে ।
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, এই জলের ট্যাঙ্ক চালু হলে এলাকায় জলের সমস্যা মিটে যেতো । জলের ট্যাঙ্ক ভেঙে পড়ায় তারা হতাশ।