ASANSOLASANSOL-BURNPURBengali News

বিজেপিকে একযোগে আক্রমন মেধা পাটেকর ও রাকেশ সিং টিকাইতের

আসানসোল ও বার্ণপুরে সংযুক্ত কৃষান মোর্চার একদিনে তিনটি মহাপঞ্চায়েত

কেন্দ্রের সরকার কৃষক, শ্রমিক ও সাধারণ মানুষের বিরোধী

বেঙ্গল মিরর, রাজা বন্দোপাধ্যায় ও সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত, আসানসোল, ১৫ এপ্রিলঃ কেন্দ্র সরকার কৃষক, শ্রমিক ও সাধারন মানুষ বিরোধী সরকার। বিজেপি বাংলার ধর্মের ভিত্তিতে ভোটারদের ভাগ করার চেষ্টা করছে। তারা বাংলায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রতিকেও নষ্ট করার চেষ্টা করছে। দিল্লির কৃষক আন্দোলনের কথা না ভেবে বাংলায় এসে কৃষকদের ভুল বোঝাচ্ছে ও বিভ্রান্তিমূলক মিথ্যা প্রচার করছে বিজেপির নেতা ও মন্ত্রীরা। তাই এবারে বিজেপিকে একটিও ভোট নয়। বাংলার নববর্ষের সকালে

আসানসোলের রাহালেনের মিউনিসিপ্যাল পার্কে সংযুক্ত কৃষান মোর্চার ওয়েষ্ট বেঙ্গল মহা পঞ্চায়েতে বক্তব্য রাখার এমনভাবেই কেন্দ্রের শাসক দলকে আক্রমন করেন কৃষক সংযুক্ত মোর্চার দুই নেতা ও নেত্রী রাকেশ সিং টিকাইত ও মেধা পাটেকর ।

বৃহস্পতিবার সকালে আসানসোলের সেনরেল রোডের একটি হোটেল থেকে ট্রাক্টরে করে মেধা পাটেকর ও রাকেশ সিং টিকাইত সহ অন্যান্য কৃষক নেতারা জিটি রোডের ভগৎ সিং মোড়ে আসেন। সেখানে ভগৎ সিংয়ের মূর্তিতে মাল্যদানের পর তারা মিউনিসিপাল পার্কের সভায় আসেন।

  • advt election


নর্মদা আন্দোলনের নেত্রী মেধা পাটেকর আরো বলেন, এবারের নির্বাচন বিজেপিকে যে করেই হোক বাংলার মানুষকে আটকাতে হবে। দিল্লির সরকার কৃষক, খেতমজুর ,শ্রমিক, চা বাগানের কর্মী থেকে শুরু করে সবার অধিকার কেড়ে নিয়েছে। এমনকি দিল্লিতে যে
অরবিন্দ কেজরিওয়াল সরকারের অধিকার এরা কেড়ে নিয়েছে। শুধু তাই নয় দিনের পর দিন মিথ্যে কথা বলছেন দিল্লি থেকে আসা বিজেপির নেতা ও মন্ত্রীরা। বিজেপি ধর্মের নামে ভন্ডামি করে ভোট নেওয়ার চেষ্টা করছে। এরাই আগে গুজরাট ও দিল্লিতে হিংসা ছড়িয়েছে। ভোটের আগে এরা যা যা কথা বলেছিল করবো বলে, ক্ষমতায় এসে সেইসব প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেনি। এমনকি স্বামীনাথন কমিটির সুপারিশ কার্যকরী না করেই সুপ্রিম কোর্টে মিথ্যা হলফনামা দিয়েছে এই সরকার । আর এরা নিজেদের সঙ্গী করেছেন কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলোকে।

তিনি বলেন, সিবিআই, ইডি থেকে শুরু করে আরবিআই এমনকি নির্বাচন কমিশন এখন বিজেপির কথায় কাজ করে। এইসব সংস্থা এখন বিজেপির শাখা সংগঠনে পরিণত হয়েছে। আমাকে একজন প্রাক্তন নির্বাচন কমিশনার বলেছেন তাদের কাজ করার কোনো স্বাধীনতা নেই। মনে রাখবেন বাংলায় বিজেপি যদি জিতে যায় তাহলে আম্বানি, আদানি ও ওয়ালমার্টদের কাছে কৃষক, শ্রমিক ,মজুর বিক্রি হয়ে যাবে। কারোর হাতে আর কোনো কাজ থাকবে না। নরেন্দ্র মোদি সরকার সেটাই চাইছে।

এদের মিথ্যা প্রতিশ্রুতি ও প্ররোচনায় পা দিলে বাংলার ক্ষতি হবে। নরেন্দ্র মোদি ও অমিত শাহের ২০০ আসনে জেতার দাবি প্রসঙ্গে মেধা পাটেকর বলেন, কি করে ওরা সেটা জানলো? ওদের কাছে কি মেশিন আছে? আসল কথা হলো, এইভাবে বারবার মিথ্যা প্রচার করলে মানুষ হয়তো বিশ্বাস করে ভোট দিয়ে দেবে ।


সভায় রাকেশ সিং টিকাইত বলেন, পাঞ্জাবের সিন্ধু সীমানায় পাঁচ মাস ধরে কৃষি আইনের বিরুদ্ধে কৃষকরা আন্দোলন করছে। তা নিয়ে বিজেপি সরকারের কোন ভাবনা চিন্তা নেই। কৃষক মারা যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে কেন্দ্রের কোন মন্ত্রী তাদের নিয়ে কখনও শোক পালন করেন নি। বারবার কেন্দ্র সরকার বলছে আমরা আলোচনা করেছি। কিন্তু তা পুরোটাই মিথ্যে। মূল বিষয়টাই তারা আলোচনায় আনতে চাইছেন না। তিনি আরো বলেন, এই কৃষক ও শ্রমিকদের স্বাধীনতার পর থেকে তাদের আন্দোলন করার যে আইন তাকে পর্যন্ত এই সরকার কেড়ে নিয়েছে। এখন বাংলার কৃষকদের বাড়িতে এসে খাবার খাচ্ছেন। তাদেরকে ভুল বোঝাচ্ছেন। বাংলার কৃষক থেকে বাংলার মানুষদের কাছে আমাদের আহ্বান বাংলায় একটি ভোটও বিজেপিকে দেবেন না। যদি বাংলায় এরা ক্ষষমতায় আসে তাহলে সারা দেশের কৃষক ও শ্রমিকদের অবস্থা আরো খারাপ হবে। এটা ভুলে গেলে চলবে না ওদের ক্ষমতায় আসার আগের চেহারা একরকম হয়। ক্ষমতা পাওয়ার পর এদের চেহারা ভয়ংকর রুপটা বেরিয়ে আসে। অনেকটা নখ দাঁত বেরিয়ে আসার মত। বাংলার মানুষের কাছে আমাদের বারবার আবেদন এদের কোন ভোট নয়। এই সভায় সর্বভারতীয় কৃষক নেতা যুদ্ধবীর সিং বলেন, দেশের ব্যাংক থেকে সবচেয়ে বেশি টাকা নিয়ে যারা পালিয়েছেন সেই ২৮ জনের মধ্যে ২৭ জন কিন্তু গুজরাটি। এটা ভুলে গেলে চলবে না। এই সভায় তেজেন্দ্রর সিং, ব্লক তৃণমূল সভাপতি গুরুদাস চ্যাটার্জী শিক্ষক নেতা মুকেশ ঝা ভানুু বস ষ সহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।


এদিন বিকেলে আসানসোল উত্তর বিধান সভার শীতলা ময়দান ও সন্ধ্যায় বার্ণপুরের ত্রিবেণী মোড় সংলগ্ন ময়দানে সংযুক্ত কৃষন মোর্চার আরো দুটি সভা হয়৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *