প্রথম ৬ ঘন্টায় ৯ বিধানসভায় ৫১ শতাংশ, আসানসোল ও দূর্গাপুরে একাধিক বিক্ষিপ্ত ঘটনা ঘটলেও, ভোট পর্ব শান্তিতে
বেঙ্গল মিরর, রাজা বন্দোপাধ্যায় ও সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত, আসানসোল ও দূর্গাপুর, ২৬ এপ্রিলঃ প্রথম ৬ ঘন্টায় পশ্চিম বর্ধমান জেলার ৯ টি বিধান সভায় প্রায় ৫১ শতাংশ। এই ৬ ঘন্টায় আসানসোল ও দূর্গাপুরে একাধিক বিক্ষিপ্ত ঘটনা ঘটলেও, বড় কোন ঘটনা ঘটেনি। এখনো পর্যন্ত একমাত্র পান্ডবেশ্বর বাদে বাকি ৮ টি বিধান সভায় ৫০ শতাংশের বেশি ভোট পড়েছে। জেলার বিভিন্ন বিধান সভার বিজেপি প্রার্থীরা অভিযোগ করেছেন। আসানসোল দক্ষিণ বিধানসভা শান্তিনগরের সোনামাটি স্কুলে তৃণমূল কংগ্রেস বিজেপি কর্মীর বিরুদ্ধে ভোটারদের প্রভাবিত করার অভিযোগ করেছে।
পাশাপাশি রাজ্য পুলিশের এক এস আইয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে তিনি আসানসোল দক্ষিণ বিধানসভা তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী সায়নী ঘোষের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছেন। ঘটনাটি ঘটেছে আসানসোল পুরনিগমের ৮০ নং ওয়ার্ডে। অভিযোগ সায়নি ঘোষকে পুলিশ থামায়। এদিন সকাল লাইনে দাঁড়িয়ে কুলটি বিধানসভার চলবলপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১৩ নম্বর বুথে পরিবারের সকলকে নিয়ে ভোট দিলেন নন্দীগ্রামের সংযুক্ত মোর্চার সিপিএম প্রার্থী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায় । এদিন ভোট দেওয়ার পরে তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন তাদের দায়িত্ব পালন করতে না পারায় মানুষের মনে আতঙ্ক, ক্ষোভ ও অসন্তোষ রয়েছে। তিনি দাবি করেন সংযুক্ত মোর্চা এবার সরকার গড়বে।
বিজেপি ও তৃণমূল কংগ্রেস ছয় দফায় দাবি করছে, যে তারা সরকার করছে। এই দাবিকে উড়িয়ে দিয়ে তিনি বলেন , তাহলে ভোট বন্ধ করে দিলে সরকারের টাকা বাঁচবে।
অন্যদিকে আসানসোল উত্তর বিধান সভার সেটে কন্যাপুরে বিজেপির ক্যাম্পে ঢুকে দুই বিজেপি কর্মীকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। খবর পেয়ে বিজেপি প্রার্থী কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায় সেখানে যান। সেই সময় তাকে বুথ থেকে ২০০ মিটারের বাইরে চলে যেতে বলে কেন্দ্রীয় বাহিনী।
এদিকে, দূর্গাপুর পূর্ব বিধানসভার মলানদিঘিতে ২১৫ নম্বর বুথ কেন্দ্র থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে রয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের কার্যালয়। সেখানে তৃণমূল কর্মীরা তাদের দলীয় কর্মীদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করছিলেন। অভিযোগ, সেই সময় আচমকাই কেন্দ্রীয় বাহিনী ও রাজ্য পুলিশে তাদের উপর হামলা চালায় বলে অভিযোগ। চেয়ার ভেঙ্গে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। তিনজন দলীয় কর্মীকে মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ। তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মীরা অভিযোগ করে বলেন, বিজেপি কর্মীদের কথা মতো চলছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। কাঁকসা থানা পুলিশকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ে তালা লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগ কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে। পরে সেই তালা খুলে দেওয়া হয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায় গোটা এলাকায়। এই বিধান সভার বিদ্যাসাগর স্কুলের ৬৯ নং বুথে বিজেপির বিরুদ্ধে ছাপ্পা ভোটের দাবি তুলেছে তৃনমুল কংগ্রেসের মহিলা কর্মীরা l কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ঠান্ডা পানীয় খাইয়ে ছাপ্পা ভোট দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে কেন্দ্রীয় বাহিনীর পাশাপাশি রাজ্য পুলিশ যায়। কাঁকসার গোপালপুর হাই স্কুলের সামনে দুর্গাপুর পূর্ব বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী প্রদীপ মজুমদার গাড়ি সরিয়ে দিল কেন্দ্রীয় বাহিনী জওয়ানরা।
প্রদীপ মজুমদারের অভিযোগ, স্কুলের সামনে তার গাড়ি দাঁড় করানো ছিল। কিন্তু দুর্গাপুর পূর্ব বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপির প্রার্থীর গাড়ি সেখানে আসতেই প্রদীপ মজুমদারের গাড়ি সরিয়ে দেওয়া হয়। এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের প্রশ্ন করা হলে তারা কোন উত্তর দিতে চাননি। পাশাপাশি বিদ্যালয়ের সামনে প্রদীপ মজুমদারকে দেখে বিজেপি প্রার্থী কর্নেল দীপ্তাংশু চৌধুরী সৌজন্যতা দেখান। দুই প্রার্থী একে অপরকে শুভেচ্ছা জানানোর পাশাপাশি একে অপরের স্বাস্থ্যের খোঁজ নেন। একইভাবে কাঁকসার মলানদীঘিতে তৃণমূল কংগ্রেসের দলীয় কার্যালয় ভাঙচুর করার অভিযোগ উঠলো বিজেপির বিরুদ্ধে। ভোট চলাকালীন একদল দুষ্কৃতিরা এসে তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ের ভাঙচুর চালায় বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে ভাঙচুর হওয়া দলীয় কার্যালয়ে যান প্রার্থী প্রদীপ মজুমদার।