জেলায় ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ দেওয়া বন্ধ হয়ে যেতে পারে, দেওয়া হবে শুধুমাত্র দ্বিতীয় ডোজ
বেঙ্গল মিরর, রাজা বন্দোপাধ্যায় ও দেব ভট্টাচার্য, আসানসোল, ১ জুনঃ যে পরিমান ভ্যাকসিন থাকার কথা, তা আপাততঃ জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের হাতে নেই। তাই পশ্চিম বর্ধমান জেলায় ১৮ থেকে ৪৪ বছর পর্যন্ত মানুষদের করোনা ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ দেওয়া বন্ধ থাকার সম্ভাবনা বা পরিস্থিতি তৈরী হয়েছে। আগামী ৯ জুন পর্যন্ত প্রথম ডোজ দেওয়া বন্ধ থাকতে পারে। মঙ্গলবার জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে। শুধুমাত্র অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে শুধুমাত্র দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হবে বলে জানা গেছে।
এদিন এই প্রসঙ্গে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বা সিএমওএইচ ডাঃ অশ্বিনী কুমার মাজি বলেন, এই মুহুর্তে জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের হাতে মাত্র ৯ হাজার ডোজ রয়েছে। এই ডোজ দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হবে। দিন কয়েকের মধ্যে আরো ১০ হাজার ডোজ জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের পাওয়ার কথা রয়েছে।
অন্য দিকে, পশ্চিম বর্ধমান জেলার মধ্যে একমাত্র সালানপুর ব্লকে সালানপুর পঞ্চায়েত সমিতির উদ্যোগে দুয়ারে ভ্যাকসিন দেওয়ার কর্মসূচি সোমবার থেকে শুরু হয়েছিলো। সালানপুরের ১১ টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মাধ্যমে তালিকা তৈরী করে সোমবার থেকে সাব সেন্টার থেকে এই ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু হয়েছিলো। প্রথম দিন ১০০ জন করে প্রতি গ্রাম পঞ্চায়েতে দেওয়া হয়। কিন্তু স্বাস্থ্য দপ্তরের হাতে ভ্যাকসিন না থাকায় মঙ্গলবার থেকে এই কর্মসূচি আর হয়নি। এই ব্যাপারে আলোচনা করতে এদিন একটি জরুরী বৈঠক করেন সালানপুরের বিডিও অদিতি বসু ও বিএমওএইচ ডাঃ সুব্রত শিট। পরে বিডিও বলেন, স্বাস্থ্য দপ্তরের হাতে প্রয়োজনীয় ভ্যাকসিন নেই। তা ব্লকে ভ্যাকসিন দেওয়া আপাততঃ বন্ধ রাখা হচ্ছে। পরে পাওয়া গেলে তা আবার শুরু হবে।
এদিকে, জামুড়িয়ায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে করোনা পরীক্ষার কাজ শুরু হয়েছে। সালানপুর ব্লকে এই কাজের জন্য এদিন ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে আশা কর্মীদের প্রশিক্ষন দেওয়া হয়েছে। এই প্রসঙ্গে জেলার সিএমওএইচ বলেন, এই পরীক্ষা করা যত বাড়বে, ততোই ভালো হবে। কত মানুষ আক্রান্ত তা খুব সহজেই জানা যাবে।
পশ্চিম বর্ধমান জেলায় ৫৫ টি সেন্টার থেকে কোভিশিল্ড ও কো-ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে। যারমধ্যে ৫৩টি সরকারি ও ২ টি বেসরকারি সেন্টার রয়েছে। মঙ্গলবার জেলায় ৪,০৯৩ জনকে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে৷ স্বাস্থ্য দপ্তরের হাতে প্রয়োজনীয় ভ্যাকসিন না থাকায় এদিন অধিকাংশ সেন্টার বন্ধ ছিলো। জেলায় এখনো পর্যন্ত মোট ৩ লক্ষ ৮৫ হাজার ৯৮৪ জনকে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। যার মধ্যে প্রথম ডোজ পেয়েছেন ২ লক্ষ ৯২ হাজার ২০৯ জন। দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হয়েছে ৯৩ হাজার ৭৭৫ জনকে।
অন্যদিকে, জেলায় এখন পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৫২, ৬৯৫ জন। গত ২৪ ঘন্টায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ২৫৩ জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৮৩২ জন। জেলায় এখনো পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ২৯৬ জনের। এ্যাক্টিভ করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা এখন ৩,৮২৬ জন।