ASANSOLBengali News

দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের সামনেই বিজেপি নেতা ও কর্মীদের বিক্ষোভ

বেঙ্গল মিরর, রাজা বন্দোপাধ্যায় ও সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত, আসানসোল, ৭ জুনঃ দলের নিচুতলার নেতা ও কর্মীদের ক্ষোভটা এখন কোন পর্যায়ে আছে তা বিধানসভা নির্বাচনের পরে সোমবার আসানসোলে বৈঠক করতে এসে টের পেলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা সাংসদ দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। এদিন বিজেপির আসানসোলে কেন্দ্রীয় পার্টি অফিসে বিক্ষোভ দেখালেন বিজেপির (BJP )নিচুতলার নেতা ও কর্মীদের একাংশ । দিলীপ ঘোষের সামনেই চরম অসন্তোষ প্রকাশ করেন বিজেপির নিচুতলার নেতা ও কর্মীরা। তাদের অভিযোগ, যারা নির্বাচনের পরে অত্যাচারিত ঘর ছাড়া তাদের সঙ্গে বৈঠক না করে নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করছেন রাজ্য সভাপতি। এই বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেন জেলা ওবিসি মোর্চার সহসভাপতি কালাচাঁদ মন্ডল ও শ্রমিক সংগঠনের নেতা রবীন্দ্রনাথ রায়। পরিস্থিতি এমনটা হয় যে, অফিসের শাটার বন্ধ করে দিতে হয়। যদিও দিলীপ ঘোষ এটাকে ক্ষোভ বলে মানতে চাননি। তার মতে, এটা জিততে না পারার একটা হতাশা।

photo by Souradeepto sengupta


সোমবার সকালে বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ আসানসোলে আসেন নির্বাচনের ফলের আলোচনার জন্য জেলা নেতৃত্ব ও মণ্ডল সভাপতিদের সঙ্গে বৈঠক করতে। আসানসোলের ২ নং জাতীয় সড়কের ধারে ধাদকার পার্টি অফিসে এই বৈঠক হয়। বৈঠকে দিলীপ ঘোষ ছাড়াও ছিলেন দলের জেলা কনভেনার শিবরাম বর্মন, জেলা সভাপতি বিধায়ক লক্ষণ ঘোড়ুই, রাজ্য মহিলা মোর্চার সভানেত্রী বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল, রাজ্য কমিটির সদস্য কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায়, সৌরভ শিকদার, জিতেন্দ্র তেওয়ারি, জেলা যুব মোর্চার সভাপতি অরিজিৎ রায় সহ অন্যসব শাখা সংগঠনের নেতৃত্ব।

এই বৈঠকে জায়গা না পেয়ে রীতিমতো বিক্ষোভ দেখাতে থাকে বিজেপির নেতা ও কর্মীরা। বিক্ষোভ চলাকালীন বিজেপি জেলা নেতৃত্ব নীচু তলার কর্মীদের দলীয় কার্যালয়ে বাইরে বার করে দেওয়ার পর আরও উত্তেজনা বাড়ে। পরে জেলা কনভেনার শিবরাম বর্মন আশ্বাস দেন বৈঠকের পর রাজ্য সভাপতি বৈঠকে বসবেন। তারপরেই বিক্ষোভ থামে।
এদিনের বৈঠকে জেলায় ১০ বছরের পুরনো নেতারা জেলার দলের সংগঠনকে নতুন করে সাজানোর জন্য বেশকিছু প্রস্তাব দলের রাজ্য সভাপতিকে লিখিতভাবে দেন। দলের দুই পুরনো নেতা বিবেকানন্দ ভট্টাচার্য ও শংকর চৌধুরী মুলতঃ গত কয়েক দিন ধরে সবার সঙ্গে কথা বলে এইসব প্রস্তাব তৈরী করেন।


বৈঠকে পরে দিলীপ ঘোষ বলেন, এই জেলার সবাই বিধান সভা নির্বাচনে খুব পরিশ্রম করেছেন৷ জেলায় তিনটি কেন্দ্রে দলের প্রার্থীরা জিতেছেন। সবার একটা প্রত্যাশা ছিলো যে, দল বাংলায় এবার ক্ষমতায় আসবে। শক্তি বাড়লেও, দল ক্ষমতায় আসতে পারেনি। তার থেকেই দলের নেতা ও কর্মীদের মধ্যে হতাশা তৈরী হয়েছে। এটাকে ক্ষোভ কোনভাবেই বলা যায়না। এটা স্বাভাবিক। এটা সব জায়গাতেই হচ্ছে। আমরা তাদের মনোবল ফিরিয়ে আনতে পারছি। কেন হার হয়েছে, তার পর্যালোচনা করা হচ্ছে। সামনে পুর নির্বাচন ও দেড় বছর পরে পঞ্চায়েত ভোট রয়েছে। আমরা এইসব ভোটে লড়াই দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি।

তিনি দলের পুরনো নেতাদের প্রস্তাব দেওয়াকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, এটার মধ্যে কোন খারাপ নেই। তারা দলের ভালো চান বলেই এই প্রস্তাব দিয়েছেন। তাদের প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করা হবে।
তবে এদিন রাজ্য সভাপতির বৈঠক চলাকালীন দলের নেতা ও কর্মীদের বিক্ষোভকে ভালোভাবে নেননি জেলার কনভেনার শিবরাম বর্মন ও বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল। তারা বলেন, বিজেপি একটা শৃঙ্খলাবদ্ধ দল। যারা এটা জানেন, তারা এটা কোনদিনই করবেন না।
বৈঠকের পরে দিলীপ ঘোষ বিক্ষোভকারী নেতা ও বাড়িছাড়া দলের কর্মীদের সঙ্গে আলাদা করে দেখা করে কথা বলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *