মদের দোকানে ডাকাতি মামলায় গ্রেফতার ৭ দুষ্কৃতি, ১২ লক্ষ টাকার বিদেশি মদ উদ্ধার
বেঙ্গল মিরর, রাজা বন্দোপাধ্যায়স, দেব ভট্টাচার্য ও সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত, আসানসোল, ১৩ জুনঃ লকডাউনের কারণে বন্ধ ছিলো মদের দোকান। সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে আসানসোলের রানিগঞ্জ ও অন্ডাল থানা এলাকার দুটি মদের দোকানে ১০/১২ জনের ডাকাত দল লুঠ করেছিলো। শুধুমাত্র দোকান নয় গোডাউনে থাকা বিদেশি মদের পেটি লুঠ করেছিলো। মে মাসে ঘটা সেই দুটি ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে শনিবার রাতে ৭ দুষ্কৃতিকে গ্রেফতার করল আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশ। রবিবার সকালে আসানসোলের জিটি রোডের কুমারপুরে আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেট অফিসে এক সাংবাদিক সম্মেলনে এই কথা জানান ডিসিপি (সদর) অংশুমান সাহা।
জানা গেছে, দুটি মদের দোকান ও গোডাউন থেকে নগদ টাকা সহ প্রায় ১২ লক্ষ টাকার বিদেশি মদ লুঠ হয়েছিল। ৭ দুষ্কৃতিকে গ্রেফতার করার সঙ্গে মদ লুঠের ঘটনার কিনারা করে ফেলল আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেট। পুলিশ ধৃতদের কাছ থেকে উদ্ধার করেছে ৪০ পেটি বিদেশী মদ। যার বাজারদর ৩ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা। এছাড়াও তাদের কাছ থেকে পুলিশ নগদ ৬৫ হাজার টাকা, একাধিক মোবাইল ফোন, একটি মোটর সাইকেল ও একটি মিনি ট্রাক। ধৃতদের নাম হলো বাবলু ধীবর, বিক্রম সাউ, আখতার আলি, গণেশ গরাই, গৌতম রানা, জয়ন্ত বাউরি ও প্রশান্ত বাউরি। ধৃতদের বাড়ি আসানসোলের জামুড়িয়া থানার বিভিন্ন এলাকায়।
প্রসঙ্গতঃ, গত ৩ মে রানিগঞ্জ থানার নিমচা ফাঁড়ি এলাকায় একটি মদের দোকান ও গোডাউনে লুঠপাট চালায় দুস্কৃতিরা। সেখান থেকে ৩০ পেটি বিদেশি মদ লুঠ হয়। যার আনুমানিক মূল্য ৩ লক্ষ টাকা। অন্যদিকে একই কায়দা মদের দোকানে গত ২৯ মে অণ্ডাল থানার ধান্ডারডিহিতে আরো একটি মদের দোকান ও গোডাউন থেকে ১০০ পেটি মদ লুঠ হয়। প্রায় ৯ লক্ষ টাকার মদ ছিলো দোকান ও গোডাউনে।
এদিন ডিসিপি (সদর) বলেন, দুটি ঘটনার অভিযোগ দায়ের হওয়ার পরে আসানসোল ও দূর্গাপুর পুলিশের ডিডি ও বিভিন্ন থানার টিম করে তদন্ত শুরু হয়। এরপর বিভিন্ন সূত্র ধরে শনিবার রাতে জামুড়িয়া এলাকা থেকে ৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশ তাদের কাছ থেকে প্রায় ৪০ পেটি মদ উদ্ধার, ৮ টি মোবাইল ও নগদ ৬৫ হাজার টাকা, একটি মোটর সাইকেল ও একটি মিনি ট্রাক পেয়েছে। তিনি আরো বলেন, প্রাথমিক তদন্তে ধৃতদের জেরা করে জানা গেছে এই দলের মাস্টার মাইন্ড হলো গণেশ গরাই। ধৃতদের রিমান্ডে নিয়ে এই দলে আর কে কে আছে তা জানার চেষ্টা করা হবে। পুলিশ ধৃতদের কাছ থেকে যে টাকা উদ্ধার করেছে, সেই টাকা লুঠের মদ বিক্রির করে পেয়েছে বলে জেরায় জানা গেছে। কাদেরকে সেই মদ বিক্রি করা হয়েছে, তা জানার চেষ্টা করা হচ্ছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ধৃতরা গুগল ম্যাপ সার্চ করে দুষ্কৃতিরা দোকানের লোকেশান জানতো। তারপর তারা সেই দোকান এলাকায় রেকি করতো। মোটরসাইকেলে করে তারা এলাকায় এসে জেনে নিতো যে, মদের দোকানের সঙ্গে গোডাউন আছে কিনা। সেখানে সিসি ক্যামেরা ও নিরাপত্তা রক্ষী আছে কিনা। রাতে কতক্ষণ এলাকায় লোক যাতায়াত করে। সবকিছু ঠিকঠাক করে দেখে নেওয়ার পরে তারা দল বেঁধে লুঠ করতো। মদের পেটি তারা মিনি ট্রাকে করে নিয়ে যেতো। ঘন্টা খানেকের বেশী সময় দোকান ও গোডাউনে থেকে তারা কাজ হাসিল করতো। তবে দূষ্কৃতিরা দেশী মদ বা কমদামি বিদেশি মদ নিতো না। মুলতঃ দামী বিদেশী মদের দিকেই তাদের নজর থাকতো।
এদিনের সাংবাদিক সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে ছিলেন ডিসিপি ( সেন্ট্রাল) ডাঃ কুলদীপ এস এস, অ্যাডিশনাল, ডিসি ডি ডি সৌমিক সেনগুপ্ত , এসিপি ( সেন্ট্রাল) তথাগত পান্ডে।