ASANSOLBengali News

হাওড়ায় চুরির দায়ে গ্রেফতার আসানসোলের মেধাবী যুবক, মানতে নারাজ বাবা, ফাঁসানোর অভিযোগ

বেঙ্গল মিরর, রাজা বন্দোপাধ্যায়, দেব ভট্টাচার্য ও সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত, আসানসোল, ২১ জুনঃ একাধিক চুরির ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে হাওড়া পুলিশের জালে আসানসোলের বাসিন্দা মেধাবী যুবক সৌমাল্য চৌধুরী। এর আগে ২০১৮ সালে আসানসোল শহরে একাধিক ফ্ল্যাটে চুরির দায়ে আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশ এই সৌমাল্যকে গ্রেফতার করেছিলো। বছর তিনেক পরে একইভাবে আবার চুরির দায়ে সৌমাল্য ধরা পড়ায় আসানসোল শহর জুড়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে। যদিও সৌমাল্যর বাবা সলিল চৌধুরী ছেলে যে চুরি করতো এবং করতে গিয়ে ধরা পড়েছে, তা মানতে নারাজ। তার দাবি, ছেলেকে প্রথম থেকেই তার বন্ধুরা ফাঁসিয়ে দিয়ে আসছে। তার আরো দাবি, ছেলের বন্ধু এলাকারই বাসিন্দা দুই যুবক তাকে ফাঁসিয়েছে। তাদের খপ্পড়ে পড়ে সে এই ধরনের কাজ করতে শুরু করে। সলিলবাবু বলতে ভোলেননি যে, ছেলের এই কৃতকর্মের জন্য মানসিক চাপ নিতে না পেরে প্রথম গ্রেফতার হওয়ার দুদিন পরে মা মধুছন্দা চৌধুরী গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছিলেন।

soumalya chodhary file photo


জানা গেছে দুদিন আগে একটি চুরির কিনারা করতে গিয়ে জলে হাওড়ার সাঁকরাইল থানার পুলিশ গ্রেফতার করে মূল পান্ডা সৌমাল্য চৌধুরীকে। ভালো পড়াশোনা জানা ছেলে ছিলো এই সৌমাল্য। ইংরেজিতে অনার্স নিয়ে পাশ করার পরে এমএ করেছিলো সে। কিন্তু সেই ছেলে কোন ভালো কাজ করার পথে হাঁটেনি। এমনকি তার এই স্বভাবের কারণে মা আত্মহত্যা করলেও সে চুরির নেশা ছাড়তে পারেনি। সে চুরিকেই পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছে। আর তা করতে গিয়ে ফের পুলিশের জালে ধরা পড়ে সে।


হাওড়ার সাঁকরাইল থানার পুলিশ গ্রেপ্তার করে আসানসোলের বাসিন্দা মূল পান্ডা সৌমাল্য চৌধুরী সহ মোট তিনজনকে। ধৃতদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে প্রায় দশ লক্ষ টাকা মূল্যের সোনার গহনা। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সৌমাল্য চৌধুরী ইংরেজিতে এম এ পাস। ২০১৫ সালে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএ পাশ করেছিল সে। কিন্তু চুরি করাই তার নেশা।এটাকে পেশা হিসেবেই বেছে নেয় সে। বাড়ি ছেড়ে চুরির চক্র গড়ে তোলে সে। আসানসোল, হাওড়া সহ তিনটি জেলায় কমপক্ষে ২০টি চুরির ঘটনার সঙ্গে যুক্ত রয়েছে সে বলে পুলিশ জানায়।
আসানসোলের বার্ণপুর রোডের এক আবাসনের বাসিন্দা বাবা প্রাক্তন সরকারি অফিসার। মা ছিলেন বার্ণপুরের একটি সরকারি স্কুলের শিক্ষিকা। ছেলের কুকীর্তির কথা জানতে পেরে তিনি আত্মহত্যা করেছিলেন।


সোমবার সৌমাল্য চৌধুরীর বাবা সলিল চৌধুরী নিজের আবাসনে বসে বলেন, ছেলের সমস্ত কথাবার্তা তার মায়ের সঙ্গেই হতো। মা ছেলেকে পাওয়ার অফ এ্যাটর্নী দিয়েছিলো। ব্যাংকের টাকা তোলা ও জমা দেওয়া সহ সব কাজ সৌমাল্যই করত। পরে কিছু স্থানীয় ছেলেদের খপ্পড়ে পড়ে সে। সেই ছেলেরা ভুল পথে চালিত করে ছেলেকে নিজেদের দলে টেনে নেই। পরে তাকে খুনের হুমকি দিয়ে ব্যাংকের সব টাকা বার করে নেই তারা। তবে আমি জানতাম না। সমস্ত টাকা পয়সার সঙ্গে মানসম্মান গেছে। প্রায় ১৯ লক্ষ টাকা হাতিয়ে ওর দুই বন্ধু। তার সঙ্গে আমার গাড়িটাও। আজ আমি নিঃস্ব।তবে এদিন এইসব বলার পরে সৌমাল্যর বাবা সলিল চৌধুরী দাবি করেন ,আমার ছেলে নির্দোষ। আমার ছেলেকে ফাঁসানো হয়েছে বলে জানান তিনি। পাশাপাশি তিনিও এও বলেন, সত্যি যদি ছেলে এমন কিছু করে থাকে, তাহলে আইন মতো যে শাস্তি হয় হোক। অন্যদিকে, পুলিশের আধিকারিকরা বলেন, এই ছেলে এমন ভাবে চুরি করতো, তাতে শুধু অবাক নয়, হতবাক হতে হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *