BARABANI-SALANPUR-CHITTARANJAN

সিমের KYC আপডেট করার নামে প্রতারণা, অবসরপ্রাপ্ত রেল কর্মী ও ছেলের একাউন্ট থেকে উধাও ৭০ হাজার টাকা

তদন্তে সাইবার ক্রাইম থানা

বেঙ্গল মিরর, রাজা বন্দোপাধ্যায় ও দেব ভট্টাচার্য, আসানসোল, ২৫ জুলাইঃ রেল শহর চিত্তরঞ্জনে আবারও প্রতারণার ঘটনা ঘটলো। এবার বিএসএনএলের সিম কার্ডের “কেওয়াইসি” আপডেট করতে গিয়ে ব্যাংক একাউন্ট থেকে গায়েব হয়ে গেল ৭০ হাজার টাকা। আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশের সাইবার ক্রাইম থানায় শনিবার গোটা ঘটনার কথা জানিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তার প্রেক্ষিতে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।


জানা গেছে, রেল শহর চিত্তরঞ্জনের ৩০ নং স্ট্রিটের বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত রেলকর্মী শ্রীকান্ত পালের মোবাইল নম্বরে শনিবার সকালে একটি মেসেজ আসে। সেই ম্যাসেজে বলা হয়, আপনার বিএসএনএল সিমের অবিলম্বে কেওয়াইসি আপডেট করতে হবে। তা না করলে সেটি বাতিল করে দেওয়া হবে। শ্রীকান্ত বাবুকে ম্যাসাজে আসা একটি মোবাইলে নম্বরে যোগাযোগ করতেও বলা হয়। তিনি সেই নম্বরপ যোগাযোগের পরে জনৈক বিনোদ কুমার গুপ্তা নিজেকে নয়ডার বিএসএনএল অফিসার হিসেবে পরিচয় দিয়ে বলেন কেওয়াইসি আপডেট করতে হবে। তা করতে হবে টিম ভিউয়ার কুইক সাপোর্ট ও এনি ডেস্ক রিমোট ডেস্কটপ সফটওয়্যার থেকে। এটি সম্ভব কোন স্মার্ট বা অ্যান্ড্রয়েড ফোন থেকে । কিন্তু শ্রীকান্তবাবু তাকে বলেন, তার কাছে কোন অ্যান্ড্রয়েড ফোন নেই ।

সেজন্য তিনি তার ছেলে শাশ্বত পালকে তার ফোনে অ্যাপ দুটি ডাউনলোড করতে বলেন। এরপর তিনি কেওয়াইসি সংক্রান্ত যাবতীয় কাগজপত্র জমা করার পরে তাকে তার বাবার মোবাইল থেকে ১০ টাকা রিচার্জ করতে বলা হয়। শ্রীকান্তবাবু তার এটিএম থেকে ঐ টাকা রিচার্জ করেন। কিন্তু বলা হয় রিচার্জ হয়নি। এরপর শাশ্বতকে বলা হয় তিনি যেন ১০ টাকা রিচার্জ করে দেন। শাশ্বত “ইউ নো” কার্ড থেকে ১০ টাকা রিচার্জ করেন । এরপরই দেখা যায় শ্রীকান্ত বাবুর একাউন্ট থেকে ৪৯ হাজার ৯০০ টাকা ও শাশ্বতর একাউন্ট থেকে ১৯০০০ টাকা গায়েব হয়ে গেছে।

জানা গেছে, শ্রীকান্ত বাবুর একাউন্টে আরো টাকা ছিল। কিন্তু এটিএম কার্ড ব্যবহারের সময়সীমা শেষ হওয়ার কারণে প্রতারকেরা বেশ কয়েকবার টাকা তোলার চেষ্টা করে। তবে তারা আর টাকা তুলতে পারেনি। এদিকে যার ফোন থেকে ম্যাসেজ শ্রীকান্ত বাবুর মোবাইলে আসে, তারা নতুন কৌশল নেয়। ঐ নম্বর থেকে শ্রীকান্তবাবুকে ফোন করে টাকা ফেরত দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে বলা হয়, চিন্তা কিছু নেই। ভুল করে টাকা উইথড্রল বা তোলা হয়ে গেছে। শীঘ্রই ঐ টাকা একাউন্টে ফেরত চলে যাবে।

এই আশ্বাস দিয়ে রবিবার সকালে আবারও অন্য আরেকটি নম্বর থেকে বার বার ফোন করা হয়। কিন্তু সাইবার ক্রাইম থানা থেকে শ্রীকান্তবাবুকে বারণ করা হয়েছিল কোন অচেনা নম্বর থেকে ফোন এলে তা না ধরতে। তাই এদিন তারা অচেনা নম্বরের কোন ফোন আর ধরেননি। তাদের টাকা ফেরতের আশ্বাসেও বিশ্বাস করেননি। শ্রীকান্তবাবু ২৪ জুলাই শনিবার চিত্তরঞ্জন থানায় অভিযোগ জানান । পরে তা সাইবার থানায় পাঠান হয়।


এই প্রসঙ্গে পুলিশ জানায়, কেবলমাত্র প্রথম সিম কার্ড নেওয়ার সময়ই একমাত্র কেওয়াইসি জমা দেওয়ার প্রয়োজন হয়। তারপরে আর তা লাগে না। এ বিষয়ে শ্রীকান্তবাবু বলেন, বিষয়টা তাদের জানা ছিল না। যখন জানতে পারলাম, ততক্ষণে যা ক্ষতি হওয়ার হয়ে গেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *