হামলার কারণে বদল করা হলো ভ্যাকসিনেশন সেন্টার হেনস্তার প্রতিবাদে পুরনিগমে বিক্ষোভ
বেঙ্গল মিরর, রাজা বন্দোপাধ্যায়, আসানসোল, ৩ আগষ্টঃ ভ্যাকসিন দেওয়ার কাজে থাকা আসানসোল পুরনিগমের পুর স্বাস্থ্য কেন্দ্রের মহিলা স্বাস্থ্য কর্মীদের হেনস্তা করার অভিযোগ উঠলো স্থানীয় যুবকদের বিরুদ্ধে। দুই মহিলা পুর স্বাস্থ্য কর্মীদের উপর চড়াও হয়ে শারীরিক ভাবে হেনস্তা করার পাশাপাশি স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ব্যাপক ভাঙচুর করা হয়েছে। সোমবার ঘটনাটি ঘটেছে আসানসোল পুরনিগমের ৮৭ নং ওয়ার্ডের মহিশীলা গ্রামে। গোটা ঘটনার কথা লিখিত ভাবে জানানো হয়েছে আসানসোল পুরনিগমের পুর প্রশাসক অমরনাথ চট্টোপাধ্যায় ও পুর স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ দীপক গাঙ্গুলিকে। এর পরেই মহিশীলা গ্রামের ভ্যাকসিনেশন সেন্টারটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বুধবার থেকে ঐ সেন্টারটি আসানসোলের ধাদকার ননীগোপাল হাইস্কুলে সরিয়ে আনা হয়েছে। এই ঘটনায় আসানসোল পুরনিগম কতৃপক্ষ খুবই ক্ষুব্ধ। তারা হামলার ঘটনাটি পুলিশের কাছে না জানালেও প্রশাসনিক পদক্ষেপ নিয়ে এলাকায় বাসিন্দাদের কাছে একটা বার্তা পাঠালো বলে মনে করা হয়েছে। যে দুজন হেনস্তার শিকার হয়েছেন তাদের নাম হলো কণিকা দাস ও কাঞ্চন রায়। এই ঘটনায় পুরনিগমের অন্য স্বাস্থ্য কর্মীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
মঙ্গলবার এই ঘটনার প্রতিবাদে আসানসোল পুরনিগমের বিক্ষোভ দেখালেন পশ্চিমবঙ্গ পৌর স্বাস্থ্য কর্মী ইউনিয়নের সদস্যরা।
জানা গেছে, অন্য দিনের মতো সোমবার সকাল থেকে মহিশীলা গ্রামের স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভ্যাকসিন দেওয়ার কাজ করছিলেন পুর স্বাস্থ্য কর্মীরা। বিকালে আচমকাই এলাকার বাসিন্দা বেশ কয়েকজন যুবক লাঠি হাতে স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ভেতরে জোর করে ঢুকে পড়ে। কেউ কিছু বোঝার আগেই তারা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ভেতরে থাকা আসবাবপত্র সহ অন্যান্য জিনিস ভাঙচুর করতে শুরু করে। ভয়ে বেশ কয়েকজন মহিলা স্বাস্থ্য কর্মী দৌড়ে প্রাণ ভয়ে দোতলায় পালিয়ে যান। কিন্তু কণিকা দাস ও কাঞ্চন রায় পালাতে পারেননি। সেই যুবকরা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে লাগানো পর্দা খুলে তার স্টিলের রড দিয়ে মারধর শুরু করে। অভিযোগ বেশ কিছুক্ষুন ধরে এইভাবে হামলা করে হুমকি দিয়ে চলে যায়।
এদিন আসানসোল পুরনিগমে বিক্ষোভ দেখাতে এসে কণিকা দাস বলেন, আমরা কিছু বুঝতে পারিনি। যুবকরা বলছিলো, তারা যেরকমভাবে যাকে বলবে সেই রকমভাবে ভ্যাকসিন দিতে হবে। বাইরের কাউকে ভ্যাকসিন দেওয়া চলবে না। তিনি আরো বলেন, এইভাবে কি কাজ করা যায়। আমরা তাই এদিন কাজ করিনি। পুর কতৃপক্ষ ব্যবস্থা নিক। তা না হলে আমরা কাজ করতে পারবো না।
পুর কতৃপক্ষ অবশ্য সেখানে নিয়ম মেনে ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে বলে জানায়। তারা বলে, অনলাইনের মাধ্যমে স্লট বুক করে যারা আসছেন, তাদেরকেই ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে। সে এলাকার বাসিন্দা না বাইরের তা তাদের দেখার কথা নয়।
এই প্রসঙ্গে আসানসোল পুরনিগমের পুর প্রশাসক অমরনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ঐ স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ভ্যাকসিন সেন্টার বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। সেই সেন্টার সরিয়ে আনা হচ্ছে ধাদকার ননীগোপাল হাইস্কুলে। বুধবার সেখান থেকে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে।
অন্যদিকে, আসানসোল পুরনিগম কতৃপক্ষ বস্তির বাসিন্দাদের জন্য ভ্যাকসিন দেওয়ার একটা পরিকল্পনা নিয়েছে। বস্তি এলাকায় শিবির করে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। মঙ্গলবার দুটি এই রকম শিবির করা হয়। পুর প্রশাসক অমরনাথ চট্টোপাধ্যায় এদিন বলেন, এইভাবে পুর এলাকার সব বস্তি এলাকায় শিবির করে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে।