লছিপুরের নিষিদ্ধ পল্লী থেকে উদ্ধার ১ বাংলাদেশী, ২১ জন নাবালিকা, ধৃত ২৫
বেঙ্গল মিরর, রাজা বন্দোপাধ্যায় ও সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত, আসানসোল, ৫ আগষ্টঃ ওয়েস্ট বেঙ্গল কমিশন ফর প্রোটেকশন অব চাইল্ড রাইটসের চেয়ারপার্সনের ( ডবলুসিপিসিআর) উপস্থিতিতে পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোলের কুলটি থানার নিয়ামতপুরের লছিপুর যৌন পল্লীতে বুধবার রাতে এক বড়সড় অভিযান চালানো হয়। অপ্রাপ্তবয়স্ক বা নাবালিকাদের দিয়ে এখানে যৌন ব্যবসা করানো হচ্ছে এমন তথ্যের ভিত্তিতে, পশ্চিম বর্ধমান জেলা প্রশাসন ও আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ এই অভিযান চালায়। সেই অভিযানে প্রায় ৪৫ জনকে উদ্ধার করা হয় বলে জানা গেছে। গ্রেফতার করা ২৫ জনকে। এই অভিযানে গোটা নিষিদ্ধ পল্লী এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। কমিশনেট চেয়ারপার্সন অনন্যা চক্রবর্তীর উপস্থিতিতে এই অভিযানে পশ্চিম বর্ধমানের জেলা শাসক বিভু গোয়েল ও আসানসোল দুর্গাপুরের পুলিশ কমিশনার অজয় কুমার ঠাকুরের নেতৃত্বে বিপুল সংখ্যায় আধিকারিক ও পুলিশ বাহিনী ছিলো।
অভিযানের পরে ডব্লিউবিসিপিসিআর চেয়ারপার্সেন অনন্যা চক্রবর্তী বলেন, আমাদের কাছে খবর ছিলো যে, এই যৌন পল্লীতে অপ্রাপ্তবয়স্কদের দিয়ে ব্যবসা করানো হচ্ছে। তার ভিত্তিতে তদন্ত করে এই অভিযান চালানো হয়। এখান থেকে উদ্ধার হওয়া মেয়েদেরকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তাদের অধিকাংশই অপ্রাপ্তবয়স্ক। তাদের পরীক্ষা করার পরে বাড়ির খোঁজ করে যার যার বাড়িতে পাঠানো হবে।
জেলা শাসক বিভু গোয়েল বলেন, মেয়েদের পাচার করার একটি সূত্র থেকে একটি খবর পাওয়া গেছিলো যে এখানে কম বয়সী মেয়েদের আনা হয়েছে । কমিশনের তথ্যের ভিত্তিতে জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের একটি দল গঠন করে সকাল থেকে তদন্ত করছিল। তার পরেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। এখানে উদ্ধার হওয়া মেয়েদের কি ভাবে আনা হয়েছে তার তদন্ত করা হবে। কমিশনের নির্দেশ মতোই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তিনি আরো বলেন, এখানে রাত আটটার পরে করোনা বিধি মানা হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। সেটাও দেখা হয়েছে। পুলিশকে আইন মোতাবেক ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
পুলিশ কমিশনার অজয় কুমার ঠাকুর বলেন, নাবালিকাদের পতিতাবৃত্তি করানো হচ্ছে এমন তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালানো হয়েছে। এখান থেকে বেশ কয়েক জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের বয়স যাচাই করার পরই পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নাবালিকাদের এখান থেকে উদ্ধার করাই মূল উদ্দেশ্য ছিলো। জানা গেছে, এই অভিযানে বেশ কয়েক জন যুবককেও আটক করা হয়েছে। তারাই কি এইসব নাবালিকাদের এখানে এনেছিলো, তা পুলিশ তদন্ত করে দেখছে। এছাড়াও উদ্ধার হওয়া মেয়েরা কোথাকার বাসিন্দা তাও পুলিশ তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানার চেষ্টা করছে।
এদিকে বৃহস্পতিবার জানা গেছে, উদ্ধার হওয়া ৪৫ জনের মধ্যে ১ জন বাংলাদেশী রয়েছেন। তাকে আসানসোলের একটি হোমে রাখা হয়েছে। বাকি ৪৪ জনকে সিডবলুসি বা চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির মাধ্যমে বর্ধমানের হোমে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে, ধৃত ২৫ জনকে বৃহস্পতিবার আসানসোল আদালতে তোলা হলে বিচারক তাদের জামিন নাকচ করে জেল হাজতের নির্দেশ দেন।