চরম আর্থিক দুর্দশায় চার ছাত্রের পাশে থাকা আসানসোল প্রগতিরর দেওয়া অর্থে ওরা পড়াশোনা করে চাকরি পেয়েই নিজেরাই চার ছাত্রীর পড়ার দায়িত্ব নিয়ে দৃষ্টান্ত তৈরি করল
বেঙ্গল মিরর ,দেব ভট্টাচার্য্য ।। আসানসোল।ওরা চারজন। একসময় যাদের নিজের পড়াশোনার কোন সংস্থান ছিলনা। চরম আর্থিক সংকটে ভুগছিল। তাদের পাশে দাঁড়িয়ে ছিল আসানসোল প্রগতি নামে এক সামাজিক সংগঠন। এদের মধ্যে একজন বাদে তিনজন ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের বিটেক পাস করেছে এবং সম্প্রতি চাকরিতে যোগ দিয়েছেন। আরো একজন স্নাতক হয় ডাকঘরের পোস্ট মাস্টারের চাকরি পেয়েছেন।
এই চারজন ই ১৫ ই আগস্ট আসানসোল প্রগতি রবীন্দ্র ভবনের অনুষ্ঠানে হাজির হয়ে এমনই চরম আর্থিক সংকটে পিছিয়ে পড়া চার ছাত্র ছাত্রীর সারা জীবনের পড়ার দায়িত্ব নিলেন। এরা হলেন অভিশেক ভার্মা, সৌরভ মন্ডল ,অভিজিত দে এবং সঞ্জিত রায়। এদের মধ্যে কারও মা অন্যের বাড়িতে রান্না করে কোনমতেই ছেলে মেয়ে মানুষ করছিলেন। কারোর বাবা ফুটপাতে জেনারেটর চালান। আবার কারণ হয়তো বাবাই নেই ,আরেকজনের বাবা একটি মুদিখানার দোকানের সাধারণ কর্মী। ওরা চারজন ই বলেছে যেভাবে আমরা একসময় আসানসোল প্রগতির চরম আর্থিক সাহায্য নিয়ে একেবারেই মাধ্যমিক স্তর থেকে পড়ার সুযোগ পেয়েছিলাম সেই ভাবে অন্যরাও যাতে পিছিয়ে না পড়ে অন্তত পড়ার ক্ষেত্রে এটা মাথায় রেখেই আমরা এগিয়ে এলাম ।আমরা সম্প্রতি চাকরি পাওয়ার সাথে সাথেই সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমাদের মত আরো চারজন যুবক বা যুবতীকে এগিয়ে দিতে পাশে থাকবে। তারাও একদিন সফল হয়ে উঠবেন এবং আসানসোল প্রগতির এই যে ভাবনা সেই ভাবনায় একজন আরেকজনের ঠিক পাশেই আগামী দিনেও দাঁড়াবে
। ১৫ ই আগস্ট এর আসানসোল রবীন্দ্রভবনে এমন এক অনুষ্ঠানে চার দৃষ্টিহীন ছাত্রসহ ২৯ জন ছাত্রছাত্রীর হাতে আর্থিক সাহায্য তুলে দেওয়া হল এবং তাদের আগামী দিনের পড়ার খরচের দায়িত্ব নিল এই সংগঠন যতদূর পড়তে চান ততদূর পর্যন্ত। একইভাবে এই সংগঠনের পক্ষ থেকে পাঁচজন শারীরিক প্রতিবন্ধকতার শিকার এমন চারজনকে চারটি হুইল চেয়ার, একটি ট্রাইসাইকেল এবং আরো একজনকে একটি স্ক্র্যাচ তুলে দেওয়া হল ।এছাড়াও দুজনের চিকিৎসা বাবদ এক লক্ষ টাকা এবং থ্যালাসেমিয়ার দুজনের চিকিৎসা বাবদ ৩৫ হাজার টাকা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হলো। এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে উৎসাহিত করেন আসানসোল রামকৃষ্ণ মিশনের প্রধান স্বামী সোমাত্মানন্দ ও স্বামী অরূপানন্দ , বিধায়ক তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়, আসানসোল পুরসভার প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারম্যান অমরনাথ চট্টোপাধ্যায়, দক্ষিণ থানার ইন্সপেক্টর ইনচার্জ অভিজিৎ চট্টোপাধ্যায় প্রমূখ।