জমি ভরাটকে কেন্দ্র করে রণক্ষেত্র, ভাঙচুর, আহত ৬
বেঙ্গল মিরর, রাজা বন্দোপাধ্যায় ও দেব ভট্টাচার্য, আসানসোল, 23 আগষ্টঃ নিজেদের জমি না হওয়া সত্বেও, নিজেদের জমি দাবি করে আসল জমির অংশীদার ও জমি ভরাটের কাজ করা কর্মীদের উপর হামলা চালানোর অভিযোগ উঠলো আদিবাসীদের বিরুদ্ধে। রবিবার দুপুরের এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আসানসোলের রানিগঞ্জ থানার ২ নং জাতীয় সড়ক লাগোয়া রানিসায়ের মোড়ের জোড়া মন্দির এলাকা রণক্ষেত্র হয়ে উঠে। চলে ব্যাপক ভাঙচুর। লাঠি নিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয় জমির দুই অংশীদার, জমি সমান করার কাজের দায়িত্বে থাকা ডেভলপার সহ মোট ৬ জনকে। তার মধ্যে ২ জন একটি বেসরকারি হাসপাতালে আশংকাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছে। তারা হলের জমির দুই অংশীদার ধনঞ্জয় তফাদার ও রুপক তফাদর । তীর ধনুক , কুড়ুল নিয়ে হামলা চালানোর পরে বিক্ষোভ দেখান আদিবাসী মহিলা ও পুরুষরা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় রানিগঞ্জ থানার বিশাল পুলিশবাহিনী। সন্ধ্যায় জমির মালিক ও যে সংস্থা জমির সমান করার কাজ করছে, তাদের তরফে এই হামলার ঘটনার কথা জানিয়ে আদিবাসীদের বিরুদ্ধে রানিগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। পুলিশ কাউকে গ্রেফতার না করলেও ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।




জানা গেছে, রানিসায়ের মোড়ের কাছে একটি বেসরকারি সংস্থা হাসপাতাল তৈরীর জন্য ব্যক্তিগত মালিকানাধীন ৫ বিঘা জমি কিনেছে। গত কয়েক দিন ধরে ২ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে সেই জমি লেভেল বা সমান করার কাজ করছে একটি ডেভলপার সংস্থা। জমি মাফিয়া তাদের জমি দখল করছে এই অভিযোগ তুলে আদিবাসীদের এদিন সকাল থেকে ঐ এলাকায় বিক্ষোভ আন্দোলনে নামে আদিবাসীরা। দুপুর নাগাদ জমির মালিকরা এলাকায় পৌঁছালে আদিবাসী মহিলা লাঠি, কুড়ুল , বাঁশ, তীর ধনুক নিয়ে হামলা চালায় বলে অভিযোগ। জমি সমান কাজের জন্য তৈরী করা দুটি অস্থায়ী ঘরে ব্যাপক ভাঙচুর চালায় তারা। মাটিতে ফলে বেধড়ক মারধর করা হয় জমি দুই মালিক ধনঞ্জয় তফাদার ও রুপক তফাদার, ডেভলপার পরাগ বন্দোপাধ্যায় সহ ৬ জনকে।
আদিবাসীরা এদিন অভিযোগ করে বলেন, গত কয়েকদিন ধরে রাতের অন্ধকারে তাদের গ্রামের পাশে জলাশয় ও একটি বাঁধ ভরাট করছিল জমি মাফিয়ারা। প্রতিবাদ করতে গেলে জমি মাফিয়ারা হুমকি দিচ্ছিল। পুলিশ ও জেলা প্রশাসনকে জানিয়েও কোনও কাজ হয়নি। জানানো হয়েছিলো বিডিওকেও। তাই এদিন আমরা প্রতিরোধ করেছি।
জমি মালিকদের তরফে জানানো হয়েছে, তাদের জমি নিজস্ব। তারা আদিবাসীদের জমি দখল করেননি। আদিবাসীরা ইচ্ছাকৃতভাবে পরিকল্পনা করে এই ঘটনা ঘটাচ্ছে।
অন্যদিকে, পরাগ বন্দোপাধ্যায় বলেন, কোন বাঁধ ও জলাশয় ভরাট করা হয়নি। এই জমি নিয়ে একটি অভিযোগ জেলা প্রশাসনের কাছে জমা পড়েছিলো। পরে গত ২৭ জুলাই জমি নিয়ে জেলা প্রশাসনের তরফে তদন্ত করা হয়। সবকিছু খতিয়ে দেখার পরে জেলা প্রশাসন কাজ শুরু করার অনুমতি দেন। তারপর কাজ শুরু করা হয়। গত কয়েকদিন ধরে আমাদের কাজে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছিলো। এদিন আচমকাই হামলা করা হয়েছে। দুটি অফিস ঘর ভাঙ্গচুর করে সব জিনিস লুঠ করা হয়েছে। মারধর করা হয়েছে ৬ জনকে।
এদিকে তৃনমুল কংগ্রেসের রানিগঞ্জ শহরের কনভেনার রুপেশ যাদব বলেন, কোন অন্যায় কাজ বরদাস্ত করা হবেনা। পুলিশ প্রশাসনকে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখতে বলা হয়েছে।