শিক্ষকের বদলি প্রক্রিয়ায় বাধা, রানিগঞ্জের প্রধান শিক্ষিকাকে শাস্তি কলকাতা হাইকোর্টের!
বেঙ্গল মিরর, কলকাতা: হাইকোর্টের নির্দেশে শাস্তির মুখে পড়লেন ছবি দে নামে প্রধান শিক্ষিকা পশ্চিম বর্ধমানের রানিগঞ্জের গান্ধী মেমোরিয়াল হাইস্কুলে কর্মরত। আদালত তাঁকে স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা পদ থেকে সরিয়ে অ্যাসিস্ট্যান্ট টিচার পদে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছে।ঘটনার সূত্রপাত বেশ কিছু দিন আগে। ওই স্কুলেরই এক শিক্ষক অন্যত্র বদলির জন্য আবেদন করেন। কিন্তু প্রধান শিক্ষিকাকে বিষয়টিতে বিশেষ গুরুত্ব দেননি। এবার তিনি সেই আবেদনে নো অবজেকশন দেওয়ার নাম করে প্রক্রিয়াটাকে ঝুলিয়ে রাখেন।এই নিয়ে ওই শিক্ষক বারবার প্রধান শিক্ষিকার কাছে আবেদন করতে থাকেন। প্রতিবারই বিষয়টি দেখা হচ্ছে বলে এড়িয়ে যেতে থাকেন তিনি। এদিকে গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে তাঁর বদলিও অত্যন্ত প্রয়োজন ছিল। একাধিকবার প্রধান শিক্ষিকার সঙ্গে কথা কাটাকাটিও হয়। কিন্তু তারপরও কোনও বিষয়ে গ্রাহ্য করেন না ছবি দে।
এরপর আদালতের দ্বারস্থ হন ওই শিক্ষক। মামলার শুনানি চলেছে। মঙ্গলবার এর প্রেক্ষিতে রায় শোনায় কলকাতা হাইকোর্ট। আদালতের কড়া ভত্র্সনার মুখে পড়তে হয় প্রধান শিক্ষিকাকে। তিনি ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন বলেও আদালতের কড়া সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি। যদিও উচ্চ আদালতে নিজের পক্ষে সেভাবে কোনও যুক্তিও খাঁড়া করতে পারেননি ছবি দে।দু’পক্ষের বক্তব্য শোনার পর হাইকোর্ট তার পর্যবেক্ষণ জানিয়ে দেয়।
উচ্চ আদালত স্পষ্ট করে দেয়, এভাবে কেউ নিজের ক্ষমতার অপব্যবহার করে কারোর গণতান্ত্রিক অধিকার খর্ব করতে পারেন না। ক্ষমতার অপব্যবহার করে ছবি দে নামে ওই প্রধান শিক্ষিকা আদতে ওই শিক্ষকের গণতান্ত্রিক অধিকারই খর্ব করেছেন। বদলির নির্দেশে নো অবজেকশনের নামে ঝুলিয়ে রাখা তারই প্রতিফলন। দীর্ঘদিন ধরে এইভাবে বদলি প্রক্রিয়া ঝুলিয়ে রাখায় অন্য অনেক সমস্যার মুখে পড়তে হয়েছে ওই শিক্ষককেও। গোটা বিষয়টিকে আদালত মান্যতা দিয়েছে।সব কিছু শোনার পর আদালত কড়া নির্দেশ দেয়। আদালত ছবি দে পশ্চিম বর্ধমানের গান্ধী মেমোরিয়াল হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষিকার পদ থেকে সরিয়ে দেন ছবি দে। এরপর থেকে ছবি দে সহকারি শিক্ষক হিসাবে কাজ করবেন। সঙ্গে ২০ হাজার টাকার জরিমানাও ঘোষণা করেছে আদালত। এটি গণতান্ত্রিক অধিকারে বাধা হয়ে দাঁড়ানোর শাস্তি বলে জানিয়ে দেয় উচ্চ আদালত।
হাইকোর্টের নির্দেশ সব জেলার ডিস্ট্রিক্ট ইনস্পেক্টরদের এই নির্দেশের কপি পাঠাতে হবে। ভবিষ্যতে যাতে কোনও স্কুলে এই ধরনের সমস্যা না হয় সে দিকে নজর রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তাঁদের। যাতে কেউ আর নিজের ক্ষমতার অপব্যবহার করে কারোর বদলি আবেদন ঝুলিয়ে রাখতে পারেন। সেক্ষেত্রে তাঁকেও এই কড়া শাস্তির মুখে পড়তে হবে বলেই স্পষ্ট করে দেয় আদালত।