পশ্চিম বর্ধমান জেলায় ১০০ দিনের কাজে সাফল্যের অভিনব রেকর্ড
বেঙ্গল মিরর, দেব ভট্টাচার্য। আসানসোল। করোনাকালে প্রচুর কলকারখানায় অনেকেই কাজ হারিয়েছেন ।তেমন উল্টোদিকে পশ্চিম বর্ধমান জেলায় ১০০ দিনের কাজে সাফল্যের অভিনব রেকর্ড ইতিমধ্যেই তৈরি হয়েছে। এই জেলায় চলতি আর্থিক বছরে ২০ লক্ষ্য শ্রম দিবস ধার্য করা হয়েছিল ৮টি ব্লকের জন্য। কিন্তু মাত্র সাড়ে চার মাসের কাছাকাছি সময় ঐ লক্ষ্যমাত্রার ৭৭শতাংশ ইতিমধ্যেই পূরণ করা সম্ভব হয়েছে ।যার পরিমাণ ১৫ লক্ষ ৯৫ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। রাজ্যে ১০০ দিনের কাজের নিরিখে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত এই জেলা তৃতীয় স্থানে আছে। প্রথম বাঁকুড়া, দ্বিতীয় আলিপুরদুয়ার জেলা আছে বলে ওই দপ্তরের এক আধিকারিক জানান।
এই জেলার ১০০ দিনের কাজের দায়িত্বে থাকা নোডাল অফিসার রাজিব গুপ্ত ও সহ আধিকারিক দেবজ্যোতি বড়াল বলেন আমরা সকলেই একটা টিম করে জেলাশাসক, এবং অতিরিক্ত জেলা শাসকের নেতৃত্বে এই কাজ করছি। আমাদের লক্ষ্য আগামী দিনে কিভাবে রাজ্যে প্রথম হওয়া যায়।
পশ্চিম বর্ধমান জেলা শিল্পভিত্তিক একটা জেলা। ফলে পুকুর কাটা গাছ লাগানোর মত জায়গা এখানে কম ।এখানে কৃষি জমির সংখ্যা কম বলে সূত্র থেকে জানা যাচ্ছে। এখনো পর্যন্ত জেলার আটটি ব্লকের মধ্যে রেকর্ড সাফল্য তৈরি করেছে পাণ্ডবেশ্বর ব্লক ।তারা লক্ষ্যমাত্রা ১০০ শতাংশ ছাপিয়ে ২৪১% অর্জন করেছে। এই পর্যন্ত ঐ ব্লকে ৪ লাখ ৯৫ হাজার ১২৬ শ্রম দিবস তৈরি হয়েছে। জেলায় দ্বিতীয় স্থানে অন্ডাল । এখানে ৯৭% লক্ষ্যমাত্রা কার্যকরী করা গেছে। এই ব্লকে ২লাখ ১৩ হাজার ৯৮৯ টি শ্রমদিবস তৈরি হয়েছে। তৃতীয় স্থানে দুর্গাপুর ফরিদপুর। এখানে ৭৪% লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা হয়েছে । চতুর্থ স্থানে সালানপুর ব্লক এখানেও ৬৮% লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা গেছে। সবচেয়ে কম কাঁকসা এবং বারাবনি ব্লক।এই দুই ব্লকে ৪১% লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা গেছে। রানীগঞ্জে অবশ্য ৫৫% এবং জামুড়িয়ায় ৪৭% লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা গেছে।
ওই দপ্তরের এক আধিকারিক জানান ১০০ দিনের কাজের মাধ্যমে এখন প্রচুর ফলের গাছের চারা বিলি করা হচ্ছে বিভিন্ন জায়গায় গাছ লাগানোর জন্য। আম, লেবু ,পেয়ারা ,পেঁপে গাছের ৯২৬৪২হাজার চারা আমরা জেলার ওইসব ব্লগগুলিতে দেওয়া শুরু করেছি। একইভাবে অন্যান্য ৯১ হাজার ২৩৮ টি গাছের চারা ১০০ দিনের কাজের মাধ্যমে ওই আটটি ব্লকের বিভিন্ন জায়গায় লাগানোর জন্য উদ্যোগ নিয়েছি। গাছ লাগানো থেকে তা বেড়ে ওঠা বিভিন্ন পর্যায়ে ছবি তুলে দপ্তরের পোর্টালে আপলোড করতে হবে যাতে এগুলোর উপযুক্ত ব্যবহার হচ্ছে কিনা জানা যাবে। ইসিএল যেসব কয়লা খনি থেকে কয়লা তুলে নিয়েছে, সেই জায়গাগুলো ভরাট করে গাছ লাগানোর জন্য জেলার পক্ষ থেকেই ই সি এলকে বলা হয়েছে। আমাদের জেলায় ১০০দিনের কাজের মাধ্যমে অতীতে ফলের বাগান তৈরি করা গেছে। এই মুহূর্তে পুকুর কাটা এবং গাছ লাগানোর উপর সবচেয়ে বেশি জোর দেয়া হয়েছে বলে দপ্তর সূত্রে জানা যাচ্ছে। যদিও অন্য একটি সূত্র থেকে জানা যাচ্ছে পাণ্ডবেশ্বর ব্লকে স্বনির্ভর গোষ্ঠী পরিচালিত একটি লেবু গাছের বাগান বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে অন্য একটি দপ্তর থেকে। এই নিয়ে অবশ্য কোনো কোনো মহলে ইতিমধ্যেই প্রতিবাদ শুরু হয়েছে।