আসানসোল পুরনিগমে চিকিৎসকের ভুয়ো সার্টিফিকেট দিয়ে সমব্যাথী প্রকল্পের টাকা তোলার চেষ্টার অভিযোগ, ধরলেন পুর প্রশাসক বোর্ডের সদস্য, তদন্তে পুলিশ
বেঙ্গল মিরর, দেব ভট্টাচার্য ও রাজা বন্দোপাধ্যায়, আসানসোল, ৩০ অক্টোবরঃ সমব্যাথী প্রকল্পের টাকা তোলার জন্য ভুয়ো ডাক্তারের সার্টিফিকেট নিয়ে আসার অভিযোগ উঠলো প্রায় ডজনখানেক মহিলার বিরুদ্ধে। শনিবার এই ঘটনা জানাজানি হওয়ার পরে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। জানা গেছে, এদিন আসানসোল পুরনিগমের পুর প্রশাসক বোর্ডের সদস্য চন্দ্রশেখর কুন্ডুর কাছে মহিলারা এসেছিলেন তার স্বাক্ষর নেওয়ার জন্য। তখনই তা নিয়ে সন্দেহ হয়।
সঙ্গে সঙ্গে চন্দ্রশেখর বাবু আসানসোল দক্ষিণ থানায় খবর দিয়ে পুলিশ অফিসারকে পুরনিগমের চেম্বারে ডেকে পাঠান। সমস্ত বিষয়টি পুলিশকে বলে তিনি তদন্তের নির্দেশ দেন ।




এই প্রসঙ্গে, চন্দ্রশেখর বাবু বলেন, প্রাথমিকভাবে এইসবই ভুয়ো চিকিৎসকের সার্টিফিকেট বলে মনে হয়েছে। রবিবারের মধ্যেই এই বিষয়ে পুলিশের প্রাথমিক রিপোর্ট পাওয়ার পর থানায় পুরনিগমের পক্ষ থেকে অভিযোগ দায়ের করা হবে। এই চক্রটি যথেষ্ট বড় বলে মনে হয়। সেই চক্রের চাঁইদের গ্রেপ্তারের ব্যবস্থা করা হবে। এভাবেই সরকারী প্রকল্পের টাকা নয়ছয় করতে দেওয়া যাবে না।
জানা গেছে, শনিবার দুপুরে আসানসোল পুরনিগমের পুর প্রশাসক বোর্ডের সদস্য চন্দ্রশেখর কুন্ডুর চেম্বারে একটি অটোয় করে প্রায় ১২ মহিলা আসেন । আসানসোল পুরনিগমের ৭০ নম্বর ওয়ার্ডের কুলটির বরাকর এলাকার বাসিন্দা বলে তারা জানান। এরপর মহিলারা চন্দ্রশেখরবাবুকে অনুরোধ করেন সমব্যাথী প্রকল্পের তাদের আবেদন পত্রগুলি দেখে স্বাক্ষর করে দেওয়ার জন্য। তাহলে তারা দুই হাজার টাকা করে পেয়ে যাবেন। আমাদের পরিজনরা মারা যাওয়ায় এই প্রকল্পের টাকা আমরা পাব। এর পরেই যে চিকিৎসকের সার্টিফিকেট তার কাছে দেওয়া হয় মৃত ব্যক্তির মৃত্যুর প্রমাণপত্র হিসেবে সেই সার্টিফিকেটে তথ্য ও চিকিৎসকের রেজিস্ট্রেশন নম্বর সঠিক না থাকা দেখে তিনি বুঝতে পারেন এগুলো সঠিক নয়।
এরপর তিনি এক এক করে মহিলাদের যখন জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন তখন জানা যায় যে ঐ এলাকায় ধর্মা নামে থাকা কোন এক যুবক তাদের এই ভাবে টাকা পাওয়ার জন্য এই আবেদন পত্র তৈরি করে দিয়েছে। তারা কেউ ঐ চিকিৎসককে চেনেন না। ঐ যুবক সব করে দিয়ে আমাদের বলেছে আপনারা এগুলো জমা দিলেই টাকা পাবেন। স্বাভাবিকভাবেই যখন প্রত্যেকের কথায় মৃত ব্যক্তির নাম, মৃত্যুর তারিখ সহ নানান অসংগতি ধরা পড়ে ও ঐ চিকিৎসকের সার্টিফিকেট ভুল তথ্য পাওয়া যায় সঙ্গে সঙ্গে তিনি পুলিশকে ডাকেন। চন্দ্রশেখরবাবুর সঙ্গে কথা বলার পুলিশ অফিসার মহিলাদের সঙ্গেও কথা বলেন। প্রাথমিকভাবে পুলিশ এদিনই এই বিষয়ে তদন্ত করবে বলে জানা গেছে । চন্দ্রশেখরবাবু বলেন, পুলিশকে দ্রুত তদন্ত করতে বলেছি। পাশাপাশি ঐ চিকিৎসকের বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হবে । সোমবারের মধ্যেই থানায় এই নিয়ে অভিযোগ দায়ের করবো। কুলটি এলাকায় চিকিৎসক মহলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে এই নামে আইএমএ বা ইন্ডিয়ান মেডিকেল কাউন্সিলের রেজিস্টার্ড চিকিৎসক নেই।