ASANSOL

আসানসোলে আবাসিকদের নেই আধার কার্ড, মেলেনা সরকারি সুবিধা, সমস্যার সমাধানে বার্ণপুরের ” বৃদ্ধাশ্রমে ” আসানসোল পুরনিগম

বেঙ্গল মিরর, রাজা বন্দোপাধ্যায়, আসানসোল, ১০ ডিসেম্বরঃ এরা সবাই বৃদ্ধাশ্রমের আবাসিক। কারোরই আধার কার্ড নেই। তাই তারা বার্ধক্য ভাতা, বিধবা ভাতা বা স্বাস্থ্যসাথীর মতো সরকারী সুবিধা ও পরিষেবা পাওয়া থেকে বঞ্চিত। জীবদ্দশায় এই আধার কার্ডের যতটা প্রয়োজন ঠিক ততোটাই মৃত্যুর পরেও প্রয়োজন আত্মীয়, স্বজন ছেলে, মেয়ে ও পরিবার ছেড়ে বৃদ্ধাশ্রমে থাকা এই বৃদ্ধ বৃদ্ধাদের। নইলে মিলবে না ডেথ সার্টিফিকেটও। শুনতে অপ্রিয় হলেও অকপটে এমনই দাবি করলেন পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোলের বার্ণপুরের সূর্যনগরের ঢাকেশ্বরীর ” প্রান্তিক ” বৃদ্ধাশ্রমে থাকা আবাসিকদেরই। ঢাকেশ্বরী প্রান্তিক বৃদ্ধাশ্রমের ২৬ জন আবাসিকের আধার কার্ড নেই।


এই বৃদ্ধ বৃদ্ধাদের অসুবিধার কথা জানার পরে শুক্রবার এই বৃদ্ধাশ্রমে হলো দুয়ারে সরকার। আসানসোল পুরনিগমের পুর প্রশাসক অমরনাথ চট্টোপাধ্যায় ও পুর বোর্ডের সদস্য চন্দ্রশেখর কুন্ডু এদিন সকাল থেকে নিজেরা দাঁড়িয়ে তাদের আধার কার্ড তৈরীর ব্যবস্থা করলেন।


জানা গেছে, আসানসোল পুরনিগম উদ্যোগ নিয়ে আসানসোল হেড পোস্ট অফিসের কর্মীদের সাহায্যে এদিন আধার কার্ডের জন্য ছবি তোলা হয়েছে বায়োমেট্রিক সিস্টেমের মাধ্যমে। এমনকি এদিন আবাসিকদের রেসিডেন্সিয়াল সার্টিফিকেট দেওয়ার ব্যবস্থা ছিলো। আধার কার্ড হাতে হাতে দেওয়ার ব্যবস্থার মত অভিনব কর্মসূচি দেখা গেল বার্নপুরের শেষ প্রান্তে ঢাকেশ্বরী প্রান্তিক বৃদ্ধাশ্রমে।


গত সেপ্টেম্বর মাসে এই বৃদ্ধাশ্রমের আবাসিকদের করোনার ভ্যাকসিন দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছিলেন আসানসোল পুরনিগমের পুর প্রশাসক বোর্ডের সদস্য তথা সমাজকর্মী চন্দ্রশেখর কুন্ডু। তিনি নিজে সেই সময় আবাসিকদের সাথে কথা বলে সমস্যার কথা জেনেছিলেন। তারপরেই এদিন আধার কার্ড তৈরির বিশেষ শিবির বসানো হলো ।
এদিন পুর প্রশাসকের দাবি, রাজ্যের ১৮ টি প্রকল্পের পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার জন্য শুরু হয়েছে দুয়ারে সরকার কর্মসূচি। বিভিন্ন ওয়ার্ডে বা গ্রামে গ্রামে শিবির করা হচ্ছে। মানুষেরা লাইন দিয়ে সেই পরিষেবার জন্য ফর্ম তুলছেন এবং জমা করছেন। শিবিরে উপচে পড়ছে ভিড়।

এই পরিস্থিতিতে বেশকিছু মানুষজনেরা বঞ্চিত হচ্ছেন পরিষেবা পাওয়া থেকে। বিশেষ করে বৃদ্ধাশ্রমের আবাসিকরা। তাই তাদের কথা ভেবে এই অভিনব উদ্যোগ নিল আসানসোল পুরনিগম।

তিনি বলেন, এখানে কারোর প্রয়োজন স্বাস্থ্যসাথীর। কারো বার্ধক্যভাতার। কারোর বা বিধবাভাতার। এখানে কারোর ভোটার কার্ড নেই। ছিলোনা আধার কার্ড। সমস্ত কিছু খতিয়ে দেখে সেপ্টেম্বরেই আবাসিকদের ফর্ম ফিলাপ করে জমা নেওয়া হয়েছিল। এই সমস্ত কাজগুলি তৈরীর জন্য প্রয়োজন আধার কার্ডের। সেই কার্ড তৈরির ব্যবস্থা করা হলো। এতদিন পরে সেই আধার কার্ডের ব্যবস্থা হতেই হাসি ফুটল আবাসিক বন্দনা বসু ও অনিতা সুরদের মুখে। তারা এদিন বলেন, কি ভালো লাগছে তা বোঝাতে পারবো না। ভাবিনি আধার কার্ড আমাদের হবে।
এদিনের শিবিরের মুল উদ্যোক্তা চন্দ্রশেখর কুন্ডু বলেন, আমাদের দায়িত্ব সবার কাছে সরকারি পরিসেবা পৌঁছে দেওয়া। সেটাই করেছি।

Leave a Reply