আসানসোলে কয়লার টাকা আদায় করতে পুলিশ ব্যস্ত, ফ্রি এন্ড ফেয়ার ভোট হলে ৬০ টির বেশি ওয়ার্ডে জিতবে বিজেপি, প্রচারে আক্রমণ শুভেন্দু অধিকারীর
বেঙ্গল মিরর, রাজা বন্দোপাধ্যায়, আসানসোল, ৩ ফেব্রুয়ারিঃ ( Asansol News Today )আসানসোল পুরনিগম নির্বাচনে দলের প্রার্থীদের প্রচারে এসে বৃহস্পতিবার কয়লা থেকে সন্ত্রাস নিয়ে একযোগে তৃনমুল কংগ্রেস ও পুলিশকে আক্রমন করলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। একইসঙ্গে তার দাবি, ফ্রি এন্ড ফেয়ার ভোট হলে আসানসোল পুরনিগমের ৬০ টির বেশি ওয়ার্ডে জিতবে। শাসক দল তৃনমুল কংগ্রেসের পশ্চিম বর্ধমান জেলা নেতৃত্ব অবশ্য শুভেন্দু অধিকারীর দাবিকে গুরুত্ব দিতে চায়নি।




এদিন প্রথমে আসানসোল পুরনিগমের কুলটি পুর এলাকায় বিজেপি প্রার্থীদের সমর্থনে রোড শো করেন শুভেন্দু অধিকারী। কুলটির ডিসেরগড়ে স্ট্রিট কর্নার করে গ্রামের ভেতর দিয়ে পদযাত্রা করেন।
কুলটির শাঁকতোরিয়ার সুভাষ মোড় থেকে ১০২, ১০৪ ও ১০৫ নং ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থী অভিজিৎ আচার্য, ইন্দ্রানী আচার্য ও রাজীব বাউরি সমর্থনে রোড শো করেন শুভেন্দু। রোড শো শুরুর আগে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তীব্র ভাষায় তিনি আক্রমণ করেন রাজ্য সরকার ও স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনকে।
রাজ্যের বিরোধী দলনেতা এদিন অভিযোগ করে বলেন, পুর ভোটের প্রচারে সভা করার অনুমতি দিচ্ছে না রাজ্য সরকারের তাবেদারী করা পুলিশ। শুভেন্দুর দাবি, ডিসেরগড় আসার আগে রাস্তায় পুলিশ বেশ কয়েকবার আটকেছে। কিন্তু পুলিশের সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। শুভেন্দুর হুঁশিয়ারি পুলিশ দিয়ে তাদের সভা প্রচার আটকানো যায় না আজ তা প্রমান করে দিল। তিনি বলেন, এই আসানসোলে কয়লার টাকা আদায় করতে পুলিশ ব্যস্ত। কোটি কোটি লক্ষ লক্ষ টাকা ঘুষ দিয়ে এই শিল্পাঞ্চলে বিভিন্ন থানার দায়িত্বে আসেন পুলিশ আধিকারিকরা। কারণ এখানে মধু ( কয়লা) পাওয়া যায়। আর এইসব পুলিশ আধিকারিকরা অবৈধ কয়লার কোটি কোটি টাকা কলকাতার শান্তিনিকেতনে পৌঁছে দেন।
শুভেন্দু বলেন, উত্তরপ্রদেশে পুনরায় বিজেপি সরকার গঠন শুধু সময়ের অপেক্ষা। সেই রকম ভাবেই এখানে মানুষ বিজেপি ও নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে আছেন। গত পাঁচ বছর আসানসোল পুরনিগম এলাকায় কোন উন্নয়ন হয়নি। কুলটি এলাকার মানুষেরা জল পাননা। তাই বিজেপি প্রার্থীদের জয়ী করে আসানসোল পুরনিগম দখলের ডাক দেন শুভেন্দু অধিকারী।
এদিন কুলটিতে প্রচার শুরু করার আগে আসানসোলে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় বিরোধী দলনেতা জানান, তৃনমুল কংগ্রেসের কোন শক্তি নেই। পুলিশকে নিয়ে ভোট জেতার চেষ্টা করছে তৃনমুল কংগ্রেস। লালার ডায়েরিতে যে মন্ত্রীর নাম আছে, যাকে সিবিআই ও ইডি ডাকছে, তার কথায় পুলিশ চলছে। মানুষ যদি ভোট দেয় ও ফ্রি এন্ড ফেয়ার ভোট হয় তাহলে ৬০ টির বেশি ওয়ার্ডে জিতবে বিজেপি।
তবে শুভেন্দু অধিকারীর দাবি ও মন্তব্যকে গুরুত্ব দিতে চাননি আইএনটিটিইউসি জেলা সভাপতি তথা আসানসোল পুরনিগমের প্রাক্তন মেয়র পারিষদ অভিজিৎ ঘটক। তিনি বলেন, বিজেপির সঙ্গে যদি মানুষ আছে, তাহলে বিধান সভা নির্বাচনে ঐ দলের হাল এইরকম হলো কেন? এই জেলায় তো বিজেপি মাত্র তিনটি কেন্দ্র জিতেছে। আর শুভেন্দু অধিকারীকে তার দলের বিধায়করাই মানেননা। বাংলার মানুষেরা বিজেপির এই নেতাদের বক্তব্যকে পাত্তাই দেননা।
এদিন শাঁকতোরিয়া পদযাত্রা শেষে আসানসোল উত্তর বিধানসভা ও রানিগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রের বেশ কয়েকটি ওয়ার্ড মিলিয়ে দুটি রোড শো ও সভা করেন শুভেন্দু অধিকারী। তার সঙ্গে ছিলেন জেলা সভাপতি দিলীপ দে, দুই বিধায়ক ডাঃ অজয় পোদ্দার ও লক্ষণ ঘোড়ুই।