গাড়ুই নদী পরিদর্শনে মেয়র, অবৈধ দখলে হারিয়েছে গতিপথ, ছোট হয়েছে পাড়, পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস
বেঙ্গল মিরর,.দেব ভট্টাচার্য, সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত ও রাজা বন্দোপাধ্যায়, আসানসোল, ৪ মার্চঃ বর্ষার বৃষ্টিতে জলের তলায় চলে যায় রেলপার সহ আশপাশের বিস্তির্ণ এলাকা। ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে একদিনের বৃষ্টিতে ঐসব এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি হয়। এরজন্য সামনে উঠে আসে গাড়ুই নদীর বর্তমান চেহারা। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় আসানসোল পুরনিগমকে।




শুক্রবার সকালে আসানসোলের গাড়ুই নদী পরিদর্শনে বেরিয়ে মেয়র বিধান উপাধ্যায় মনে করেন,
শহরের একাংশ জলের তলায় চলে যাওয়ার মুল ও অন্যতম কারণ হলো গাড়ুই নদী সংস্কার না হওয়া। পাশাপাশি তার সরাসরি মন্তব্য, দখল হয়ে গেছে নদীর পাড়। বেশ কিছু জায়গায় নদীর গতিপথ পরিবর্তন হয়ে গেছে। পাইপ লাগিয়ে নদীর জলকেও বাঁধা হয়েছে। এইসব কিছুর পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে আশ্বাস দিলেন মেয়র। শপথ নেওয়ার সপ্তাহ খানেকের মধ্যে আসানসোল শহরের জন্য সবচেয়ে বড় পদক্ষেপ নিলেন মেয়র বিধান উপাধ্যায় বলে মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহল।

মেয়রের সঙ্গে এদিন পরিদর্শনে ছিলেন দুই ডেপুটি মেয়র অভিজিৎ ঘটক ও ওয়াসিমুল হক, চেয়ারম্যান অমরনাথ চট্টোপাধ্যায়, কাউন্সিলর অনিমেষ দাস, ডাঃ দেবাশীষ সরকার সহ পুরনিগমের বিভিন্ন দপ্তরের আধিকারিক ও কর্মীরা।
এদিন একবারে শুরুতেই আসানসোলের সেনরল রোডে একটি বেসরকারি সংস্থার উদ্যোগে তৈরী হওয়া বহুতল এলাকায় পরিদর্শনে আসেন মেয়র সহ অন্যান্যরা । ঘুরে দেখেন গোটা এলাকা। তারপর তারা আসানসোলের কল্যাণপুর, রেলপারের গাড়ুই নদী লাগোয়া বিস্তীর্ণ এলাকা পরিদর্শন করেন।
পরে মেয়র বিধান উপাধ্যায় বলেন, প্রথম পরিদর্শন করলাম। তাতেমনে হয়েছে অনেক জায়গায় দখল হয়ে গেছে নদীর জায়গা। পাড় অবৈধ ভাবে দখল হয়েছে। যার ফলে নদী ছোট হয়ে গেছে। আমরা বিএলআরও দপ্তরে চিঠি দিয়ে জানবো এই এলাকায় নদীর জায়গা ঠিক কতটা আছে। তারপর মাপ করে দেখা হবে, নদীর কি অবস্থা রয়েছে এখন। তারপর আমাদের যা ব্যবস্থা নেওয়ার তা আমরা নেবো।

অন্যদিকে ডেপুটি মেয়র অভিজিৎ ঘটক বলেন, পরিদর্শন করে মনে হয়েছেন নদীর দখল করা হয়েছে। আমরা আগে দেখবো ঠিক কতটা দখল হয়েছে। তারপর যারা দখল করেছে তাদের নোটিশ পাঠানো হবে। যেখানে গরীব মানুষেরা নদীর পাড় দখল করেছেন তাদেরকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া। প্রয়োজন হলে, তারজন্য প্যাকেজ করা হবে।
প্রসঙ্গতঃ, আসানসোল শহরের পাশাপাশি পুরনিগম এলাকার অনেকটাই এই গাড়ুই নদীর উপর নির্ভরশীল। অথচ সরকারি নজরদারি না থাকায় সেই নদী দখল করে আবাসন, কারখানা, বাড়ি তৈরি করে নেওয়া হচ্ছে। এই প্রসঙ্গে এদিন মেয়র ও ডেপুটি মেয়র বলেন , সবকিছু খতিয়ে দেখা হবে। যদি কোন জায়গায় মনে হয় কোন কিছু বেআইনি ভাবে হয়েছে, তা আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রথম ১৫ বছর বামেদের দখলে ছিলো আসানসোল পুরনিগম। তারপর হাত বদল হয়ে ২০১১ এর পর থেকে আসানসোল পুরনিগমে এসেছে তৃনমুল কংগ্রেস। তাই রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, গাড়ুই নদী দখল মুক্ত করা রীতিমতো চ্যালেঞ্জের।