ASANSOL

আসানসোলের এক আদালতের গুরুত্বপূর্ণ রায়, পুলিশ কয়লা অকশন করতে পারেনা

বেঙ্গল মিরর, দেব ভট্টাচার্য, আসানসোল। কয়লা খনি জাতীয়করণের পর কয়লার মালিকানা ভারত সরকার তথা কোল ইন্ডিয়া বা তার সহযোগী সংস্থার।  স্বাভাবিকভাবেই সেই কয়লা পুলিশ অকশন করতে পারেনা। এমন এক গুরুত্বপূর্ণ রায় দিয়েছে আসানসোলের এক আদালত ।

Sekhar Chandra kundu image source facebook

ইসিএলের আইনজীবী শেখর কুন্ডু জানান  ই সি এলের সালানপুর এরিয়ার সালানপুর থানার বিভিন্ন এলাকা থেকে ২০১৩ সালের জানুয়ারি মাস থেকে ২০১৯ সালের ৩১ শে আগস্ট পর্যন্ত তিনটি কেসে প্রায় ১২০০ টন কয়লা  সাইকেলে, গরুর গাড়িতে বা বাইকে পাচারের সময় সিআইএসএফ ,ইসিএল নিরাপত্তাকর্মী বা পুলিশ ধরে তা সালানপুর থানায় পাঠায়। এই কয়লা  গুলি পুলিশ ইসিএলের ওই এরিয়ায় তাদের জিম্মা দিয়ে রাখার জন্য বলে। কিন্তু সালানপুর থানার পুলিশ ইসিএল কে না জানিয়ে আদালতের আবেদনের ভিত্তিতে ওই কয়লা গুলি অকশন করে। এই অকশন পুলিশের করার অধিকারের মধ্যে পড়ে না বলে ই সি এল পক্ষ থেকে আমরা মামলা করি এবং আমি আদালতের বিচারক কে বলি এই অকশনের আগে ইসিএলের বক্তব্য শোনা উচিত ছিল।

সেই মামলা শোনারপর সম্প্রতি  আসানসোলের সপ্তম বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট প্রান্তিক রঞ্জন বোস গুরুত্বপূর্ণ  রায় দেন। রায় দিতে গিয়ে তিনি  কয়লা খনি জাতীয়করণের বিভিন্ন ধারা তুলে বলেন কয়লার মালিকানা ভারত সরকার তথা কোল ইন্ডিয়া বা তার সরকারি সংস্থার। স্বাভাবিকভাবেই চুরিতে ধরা পড়া কয়লা পুলিশ অকশন করতে পারেনা । পুলিশের পক্ষ থেকে ই সি এলকে অকশনের জন্য আটক যে  কয়লা  দিতে বলা হয়েছিল তাও প্রত্যাহারের নির্দেশ দেন। এ বিষয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে ওই থানার কেউ কোন মন্তব্য করতে চাননি।

ই সি এলের সালানপুর এরিয়ার জেনারেল ম্যানেজার অমিত রঞ্জন নন্দী বলেন আমি এখানে বেশকিছুদিন আসার পর কয়েক মাস আগে দেখি হঠাৎ পুলিশের পক্ষ থেকে  অপশনে কয়লা পাওয়া সংস্থার প্রতিনিধিরা চিঠি নিয়ে এসেছেন যাতে লেখা আছে আমাদের জিম্মানামাতে থাকা সমস্ত কয়লা গুলি তাদের দিয়ে দিতে হবে। সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি আমাদের  নিরাপত্তা দপ্তর এবং টাস্কফোর্সের কাছে পাঠিয়ে দিই। কেননা কয়লার মালিকানা ইসিএলের।

তাহলে পুলিশ কি করে সেই কয়লা  অকশন করবে। ইসিএলের টাস্কফোর্স এর  ইন্সপেক্টর মনোজ লাঙ্গারে এবং পবন কুমার তারা দায়িত্ব পেয়ে বিষয়টিকে ই সি এলের এক আধিকারিকের মারফত  আদালতে নিয়ে যান বলে সোমবার জানান ইন্সপেক্টর মনোজ লাঙ্গারে। তিনি বলেন ২০১৩ থেকে ২০১৯ এর আগস্ট পর্যন্ত তিনটি কেসে বারোশো টন কয়লা আটক করে ইসিএলের জিম্মানামায় ছিল। এই রায়ে প্রায় কোটি টাকার বেশি মূল্যের কয়লা বেঁচে গেল।  স্বাভাবিকভাবেই আমরা বিষয়টি আদালতে নিয়ে যায় এবং আদালত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রায় দিয়ে বলে এটা ভারত সরকারের সম্পত্তি ।

সেই সম্পত্তির মালিকানা বর্তমানে কোল ইন্ডিয়া  বা ইসিএলের মত সংস্থার। এই কয়লা অকশন করার মত ক্ষমতা পুলিশের নেই। সেই অনুযায়ী অবশ্য পুলিশও আদালতের নির্দেশ কার্যকরী করেছে ।এই নির্দেশ পাওয়ার পর মনোজ বলেন আমরা চলতি সপ্তাহে ইসিএলের সমস্ত এরিয়ায় জেনারেল ম্যানেজারের কাছে এবং নিরাপত্তার দায়িত্বে যারা আছেন তাদের ও সংশ্লিষ্ট  সব কটি থানাতে এই নির্দেশ পাঠিয়ে দেবো। যাতে ভবিষ্যতে কখনো থানায় জমা পড়া কয়লা পুলিশ অকশন করতে না পারে। সেদিকে ইসিএল আধিকারিকরা এবং নিরাপত্তাকর্মীরা নজর রাখবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *