আসানসোল লোকসভা উপনির্বাচনে শাসক দলের প্রার্থী নিয়ে কটাক্ষ, ঘরের মেয়ে অগ্নিমিত্রা পাল: রাহুল সিনহা
বেঙ্গল মিরর,আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায় ও সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত: তৃনমুল কংগ্রেসের জেতার একটাই অস্ত্র, তাহলো ” সন্ত্রাস “। পুলিশ ও প্রশাসনের সহযোগিতা ছাড়া বাংলায় কোন নির্বাচনে জিততে পারবে না। আসানসোল লোকসভা উপনির্বাচনে দলের প্রার্থী অগ্নিমিত্রা পালের হয়ে প্রচারে এসে এক সাক্ষাৎকারে এমনই মন্তব্য করলেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা তথা প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি রাহুল সিনহা। তার সঙ্গে ছিলেন জেলা বিজেপির পরামর্শদাতা সুব্রত ওরফে মিঠু ঘাঁটি, ডাঃ অশোক রায়, উপাসনা উপাধ্যায় ও আশীষ ঠক্কর।
গত ৫ দিন ধরে আসানসোলে থেকে দলের প্রার্থীর হয়ে প্রচার করছেন রাহুল সিনহা। ইতিমধ্যেই তিনি আসানসোল লোকসভার সাতটি বিধান সভা ঘুরে ঘুরে মিছিল ও বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট চেয়েছেন।
সোমবার রাতে আসানসোলের একটি ক্লাবে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে তিনি বলেন, আসানসোল লোকসভা উপনির্বাচনে জয় পাওয়ার জন্য বীরভূমের জেলা সভাপতি অনুব্রত মন্ডলকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এর থেকে মানুষ কি বুঝবে? তাহলে কি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের মন্ত্রী মলয় ঘটক ও জেলা সভাপতি বিধান উপাধ্যায়ের উপর ভরসা করতে পারছেন না? তাই কি অনুব্রত মন্ডলকে ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। অনুব্রত মন্ডল এখানে এসে ভোট করছেন, আর সিবিআই ডাকলেই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। আসল কথা হলো তৃনমুল কংগ্রেস দিশেহারা। আর তাই নিয়ে আসা হয়েছে ধার করা প্রার্থী। তাকে কি বলবো হাফ বিজেপি, না হাফ তৃনমুল। অন্যদিকে দেখুন, আমাদের প্রার্থী জমির প্রার্থী। একবারে ঘরের মেয়ে। দলের সব স্তরের কার্যকর্তাদের সঙ্গে সম্পর্কিত ও সম্পৃক্ত। তিনি সকাল থেকে ঘরে ঘরে যাচ্ছেন। আর তৃনমুল কংগ্রেসের প্রার্থীর বয়সটা দেখুন। তিনি কতদিন আর কর্মশীল থাকতে পারবেন?
বিজেপির এই নেতা আসানসোল লোকসভা উপনির্বাচন হওয়ার জন্য অনেকটাই দায় চাপিয়েছেন আসানসোলের প্রাক্তন সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়র ঘাড়ে। তিনি বলেন সাধারণত কেউ মারা গেলে কোন জায়গায় উপনির্বাচন হয়। কিন্তু এখানে কি হলো? একজন পদ পেলো না, মন্ত্রীত্ব পেলো না। তারজন্য ভোট হচ্ছে। মানুষকে এর জবাব দিতে হবে। মানুষও তার জবাব দেবে। এটা মনে রাখতে হবে, মন্ত্রীত্ব আয়েশ করবার জন্য নয়। সেটা দেওয়া হয়, মানুষের সেবা করার জন্য। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাবুল সুপ্রিয়কে আসানসোলের মানুষের হয়ে কাজ করার জন্য অনেক সুযোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি তা করেননি। তাই তাকে সরিয়ে দেওয়া হয়।
রাহুল সিনহা বাংলায় ভোটের নামে প্রহসন হয় বলে, রাজ্য নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে রাজ্য সরকার ও শাসক দলকে আক্রমন করেছেন। তিনি বলেন, দেশের অন্য রাজ্যে একরকম ভোট হয়, আর এই বাংলায় অন্য রকম। আগে সিপিএমের সময় সায়েন্টফিক রিগিং হতো। আর এখন মস্তানিজিম ও সন্ত্রাসবাদের ভোট হয়। আসানসোলের এই ভোট তো পুর ভোট নয়। যা পরিচালনা রাজ্যের মেরুদণ্ডহীন নির্বাচন কমিশন করছে না। এই ভোট জাতীয় নির্বাচন কমিশন করছে। আমাদের আশা, কমিশন তাদের দায়িত্ব ঠিক মতো পালন করতে পারবে।
তাহলে আসানসোল লোকসভা উপনির্বাচনে কি লড়াই, ” আসানসোলের ঘরের মেয়ের” সঙ্গে ” বিহারিবাবু বা বাহারিবাবুর লড়াই “? রাহুল সিনহা বলেন, একবারেই নয়। এই লড়াই তৃনমুল কংগ্রেসের সঙ্গে বিজেপির লড়াই। আর আসানসোলের মানুষ যাকে সহজে নিজের বাড়ির কাছে পাবেন তাকেই ভোট দেবেন বলে আমি মনে করি। কেন তারা বিহার বা দিল্লিতে খুঁজতে যাবেন।