ASANSOL

আসানসোলে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী কিশোরী, বাঁচাতে জেলা হাসপাতালের ওয়ার্ডেই ঝাড়ফুঁক পরিবারের, বাধা পেয়ে বিক্ষোভ

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দ্যোপাধ্যায়ঃ গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করা এক কিশোরীকে বাঁচাতে ওঝাকে দিয়ে ঝাড়ফুঁক পরিবারের সদস্যদের। তা আবার করা হলো আসানসোল জেলা হাসপাতালের ফিমেল ওয়ার্ডে। বুধবার সকালে হওয়া এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে জেলা হাসপাতালে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। যদিও কিশোরীকে শেষ পর্যন্ত বাঁচানো যায়নি। এদিন সকাল এগারোটার পরে আসানসোলের কুলটি থানার চিনাকুড়ি ২ নংএর বাসিন্দা কিশোরী ভূমি কুমারীর ( ১৭) মৃত্যু হয়।


এরপর পরিবারের সদস্যরা মৃতদেহ ময়নাতদন্ত করতে বাধা দেন। তারা মৃতদেহ ময়নাতদন্ত না করিয়ে তা নিয়ে যাওয়ার জন্য বিক্ষোভ দেখানো শুরু করেন। তারা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের সহকারী সুপার সৃজিত মিত্রকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান। একইসঙ্গে তারা চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ করেন। খবর পেয়ে এলাকায় দক্ষিণ থানার পুলিশ হাসপাতালে আসে। শেষ পর্যন্ত পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হয়। তারপর পুলিশ নিয়ম মতো ময়নাতদন্ত করে কিশোরীর দেহ পরিবারের হাতে তুলে দেয়।


হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার গভীর রাতে ভূমি কুমারী নামে ঐ কিশোরীকে পরিবারের সদস্যরা এমারজেন্সি বিভাগে আনেন। চিকিৎসককে তারা বলেন, সে বাড়িতে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলো। কিশোরীকে ডাঃ জি মন্ডলের আন্ডারে ফিমেল ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। রাতে চিকিৎসক পরীক্ষা করে চিকিৎসা করেন। বুধবার সকালে ঐ চিকিৎসক ওয়ার্ডে গিয়ে দেখেন, কিশোরীর বেড ঘিরে রয়েছেন পরিবারের ১৫/২০ জন লোক। পরে দেখা যায়, পরিবারের সদস্যরা ওঝা এনে কিশোরীর ঝাড়ফুঁক করছেন। চিকিৎসক তাতে বাধা দেন ও এইসব করতে মানা করেন। কিন্তু পরিবারের সদস্যরা চিকিৎসককে ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখানো শুরু করেন। খ

বর পেয়ে সহকারী সুপার সহ অন্যান্যরা ছুটে আসেন। পরিবারের সদস্যদের ওয়ার্ডে বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়। এর কিছুক্ষুন পরেই কিশোরীর মৃত্যু হয়। নিয়ম মতো দেহ ময়নাতদন্তের করার কথা বলা হলে, পরিবারের সদস্যরা রাজি হননা। আবার তারা বিক্ষোভ দেখানো শুরু করেন। কিশোরীর বাবা রুপেস কুমার রাম সহ অন্যান্যারা বলেন, চিকিৎসায় গাফিলতি হয়েছে। তারা দেহ ময়নাতদন্ত করা হবেনা। খবর পেয়ে আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশ আসে। পুলিশ শেষ পর্যন্ত বুঝিয়ে ময়নাতদন্তের ব্যবস্থা করে। এই প্রসঙ্গে ডেপুটি সুপার কঙ্কন রায় বলেন, ওয়ার্ডে ঐ কিশোরীর পরিবারের সদস্যরা ঝাড়ফুঁক করছিলো। আমরা বাধা দিলে, তারা বিক্ষোভ দেখান। পরে দেহ ময়নাতদন্ত করতেও বাধা দেওয়া হয়। পুলিশ এসে পরিস্থিতি সামাল দেয়। পরিবারের তরফে কোন লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয় নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *