ASANSOLRANIGANJ-JAMURIA

আসানসোল আদালতে নাবালিকাকে ধর্ষণের মামলায় দোষী সাব্যস্ত সৎ বাবা

২০২০ সালে জামুড়িয়ার ঘটনা, ২০ আগষ্ট সাজা ঘোষণা

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায় ও সৌরদীপ্ত সেনগুপ্তঃ ১৪ বছরের নাবালিকা মেয়েকে ধর্ষণের মামলায় দোষী সাব্যস্ত হলো সৎ বাবা। দুবছরেরও বেশি সময় ধরে আসানসোল আদালতে চলা এই মামলার শুনানি শেষে মঙ্গলবার মিঠুন চিত্রকর নামে ঐ ব্যক্তিকে দোষী সাব্যস্ত করেন আসানসোল আদালতের অতিরিক্ত জেলা জজ বা এডিজে ( দ্বিতীয়) শরণ্যা সেন প্রসাদ। আগামী ২০ আগষ্ট দোষী সাব্যস্তর বিরুদ্ধে সাজা ঘোষণা করবেন বলে এদিন জানান এই মামলার সরকারি আইনজীবী তাপস উকিল। আসানসোলের জামুড়িয়া থানার নতুন জামশোলের বাসিন্দা মিঠুন চিত্রকর এই মামলা চলাকালীন জামিন পায়নি। সে আসানসোল জেল বা বিশেষ সংশোধনাগারেই রয়েছে। জেলে থাকাকালীন বা কাস্টোডিয়াল ট্রায়াল হতে চলেছে এই মামলায় বলে সরকারি আইনজীবী বলেন। নাবালিকার গোপন জবানবন্দি নেওয়া ছাড়াও মোট ৯ জন এই মামলায় বিচারকের সামনে সাক্ষ্য দেন।


জানা গেছে, আসানসোলের জামুড়িয়া থানার নতুন জামশোলের বাসিন্দা কান্তি বাউরি ওরফে মধুমিতা বাউরির দ্বিতীয় পক্ষের স্বামী হলো মিঠুন চিত্রকর। ১৪ বছরের নাবালিকা কান্তি বাউরির প্রথম পক্ষের মেয়ে। ২০২০ সালের ২৯ জানুয়ারি জামুড়িয়া থানায় দ্বিতীয় পক্ষের স্বামী মিঠুন চিত্রকরের নামে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তাতে তিনি বলেন, আমার ১৪ বছরের নাবালিকা মেয়েকে স্বামী মিঠুন চিত্রকর লাগাতার ধর্ষণ করেছে। বর্তমানে সে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছে। মেয়ের পেট ব্যথা হওয়ায় তাকে আমি এক চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাই। ঐ চিকিৎসক পরীক্ষা করে আমায় বলেন, মেয়ের এই শারীরিক অবস্থা। তখন মেয়েকে জিজ্ঞাসা করায় সে আমাকে সৎ বাবার তার উপর শারীরিক অত্যাচারের কথা বলেছে। মেয়ে বলেছে, আমি না থাকার সুযোগে বাড়িতে ও অন্য সময় বাইরে নিয়ে গিয়ে এই অত্যাচার করতো। এই সবকিছু কাউকে না বলার জন্য হুমকি দিতো। কান্তি বাউরির এই অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ মিঠুনকে গ্রেফতার করে। তার বিরুদ্ধে ভারতীয় দন্ডবিধির ৩৭৬ ও পকসো আইনের ৪ ও ৬ নং ধারায় মামলা করা হয়। পুলিশ পরে নাবালিকার বয়ান নথিভুক্ত করে ও তার শারীরিক পরীক্ষা করায়।


পাশাপাশি, কান্তি বাউরি মেয়ের বয়সের কথা ভেবে আসানসোল আদালতে গর্ভপাত করানোর জন্য আসানসোল আদালতে একটি আবেদন করেন। তার ভিত্তিতে বিচারক ঐ বছরের ২৯ ফেব্রুয়ারি গোটা বিষয়টি দেখার জন্য সিডবলুসিকে দায়িত্ব দেয়। এরপর সিডবলুসি আদালতের নির্দেশ মতো আসানসোল জেলা হাসপাতাল কতৃপক্ষের যোগাযোগ করে আইন মতো নাবালিকার গর্ভপাত করায়। গোটা প্রক্রিয়া নিয়ে সিডবলুসি একটি রিপোর্টও আদালতে জমা দেয়।
এদিন এই মামলার সরকারি আইনজীবী তাপস উকিল বলেন, সব তথ্য প্রমান ও ৯ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য দেন শেষে অভিযুক্তর বিরুদ্ধে সবকিছু প্রমাণিত হয়েছে। এদিন এডিজে ( দ্বিতীয়) শরণ্যা সেন প্রসাদ এই মামলায় পুলিশের দেওয়া ধারায় মিঠুন চিত্রকরকে দোষী সাব্যস্ত করেছেন। আগামী ২০ আগষ্ট এই মামলায় দোষীর সাজা ঘোষণা করবেন বিচারক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *