আসানসোল জেলা আদালতে কর্মী নিয়োগে দূর্নীতির অভিযোগে ধৃত তিনজনের জামিন নাকচ, সিডি জমা দিল সিআইডি
বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, দেব ভট্টাচার্য ও রাজা বন্দ্যোপাধ্যায়ঃ আসানসোল জেলা আদালতে কর্মী নিয়োগের পরীক্ষায় দুর্নীতির অভিযোগে নদীয়া থেকে গ্রেফতার হওয়া তিনজনের জামিনের আবেদন খারিজ করে দিলে আসানসোল আদালত। এদিন সিআইডি এই মামলার কেস ডায়েরি জমা দেয় আসানসোলের মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে ।
ধৃত তিনজনের আইনজীবী শেখর কুন্ডু জামিনের আবেদন করে বলেন, সিআইডি এই মামলায় যা জানার সবকিছুই এদের কাছ থেকে জেনে নিয়েছে। এখন আর এদের জেলে আটকে রেখে কি লাভ?



শেখরবাবু আরো বলেন, আসানসোল আদালতে নিয়োগকে কেন্দ্র করে বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধেই অভিযোগ দায়ের হয়েছিল। তারা গ্রেফতার হওয়ার পরে প্রত্যেকেই জামিন পেয়েছে ।তাই এই তিনজনকে আটকে রাখার কোন যুক্তি নেই।
অন্যদিকে সিআইডির পক্ষে সরকারি আইনজীবী মনোজ সিনহা বলেন, যেহেতু পুরো ঘটনার এখন তদন্ত চলছে। তাই এদেরকে এখন জামিন দেওয়া ঠিক হবে না । এরপর বিচারক তাদের জামিনের আবেদন খারিজ করে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন। আগামী ১ সেপ্টেম্বর এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছেন বিচারক ।
প্রসঙ্গত, আসানসোল জেলা আদালতের ই স্টেনো ও চতুর্থ শ্রেণীর কর্মী নিয়োগের জন্য একটি পরীক্ষা হয়েছিল। সেই পরীক্ষার সময় একটি প্রতারণার চক্র ভুয়ো সিমের মাধ্যমে তিন লক্ষ টাকার বিনিময় পরীক্ষার্থীদের উত্তরপত্র তাদের মোবাইলে পৌঁছে দেয়।
এরপর হাইকোর্টে এক প্রার্থী এই নিয়ে মামলা করেন । কলকাতা হাইকোর্ট সেই মামলার তদন্তে দায়িত্বভার সিআইডির হাতে তুলে দেয়। সিআইডি তদন্তে নেমে নদীয়ার জেলার বিভিন্ন জায়গা থেকে ইতিমধ্যেই তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে যারা এই প্রতারণা চক্রের অন্যতম সদস্য। কিভাবে তারা চক্র চালাতো সেটাও সিআইডি তাদের হেফাজতে নিয়ে জানতে পেরেছে।
ধৃত তিনজনের মধ্যে অতনু ভক্ত নদীয়ার তেহট্টের বাসিন্দা। অন্য দুজন হল নদীয়ার হাঁসখালির প্রসেনজিৎ মন্ডল ও ধানতলার নিহার বিশ্বাস।
উল্লেখ্য, স্টাফ সিলেকশন এক্সজামিনেশন অফ পশ্চিম বর্ধমান জজশিপ -২০১৯) পরীক্ষাটি হয়েছিলো ২০২১ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি। এই পরীক্ষার মাধ্যমে আসানসোল জেলা আদালতে ই স্টেনো ও চতুর্থ শ্রেণি পদে কর্মী নিয়োগের জন্য আহ্বান জানানো হয়েছিল। আসানসোল শহর সহ শিল্পাঞ্চলের একাধিক স্কুলে পরীক্ষার্থীদের থেকে একাধিক মোবাইল, ভ্যানিশিং কালি,ভুয়ো এ্যাডমিট কার্ড সহ পরীক্ষার্থী দেওয়ার কারণে আটটি মামলায় ২৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। গ্রেফতার হওয়া বেশিরভাগই ছিল নদীয়ার বাসিন্দা। প্রায় সাত সপ্তাহ পরে এরা সকলেই আসানসোল আদালত থেকে জামিন পায়।