ASANSOL

সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে কাল অনুব্রত মণ্ডলের জামিনের শুনানি ভার্চুয়াল না, সশরীরে, কাটেনি ধোঁয়াশা

গরু পাচার মামলা, একদিন আগে জেলে গিয়ে জেরা তদন্তকারী অফিসারের

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দ্যোপাধ্যায় ও সৌরদীপ্ত সেনগুপ্তঃ কাল বুধবার ১৪ দিন জেল হেফাজতের মেয়াদ শেষে আসানসোলের সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে পেশ করা হবে গরু পাচার মামলায় ধৃত অনুব্রত মন্ডলকে। এদিকে, তার ঠিক একদিন আগে মঙ্গলবার বিকেলে আসানসোল জেল বা বিশেষ সংশোধনগারে আসেন গরু পাচার মামলার তদন্তে থাকা এক আধিকারিক। চারটে নাগাদ তারা জেলে আসেন। তারা দেড় ঘন্টার মতো ছিলেন। এর মধ্যে তারা অনুব্রত মন্ডলের পাশাপাশি এই জেলে থাকা সায়গল হোসেনকে জেরা করেন। সিবিআই সূত্রে জানা গেছে, অনুব্রত মন্ডলকে ২০ টি ও সায়গলকে ১৪ টি প্রশ্ন করা হয়েছিলো।

সিবিআইয়ের দাবি, পুরোপুরি না হলেও, অনুব্রত মন্ডল কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন। অর্থাৎ কিছুটা হলেও তিনি নাকি সহযোগিতা করেছেন। যেটা নাকি আগে তিনি একবারেই করছিলেন না বলে সিবিআই আদালতে সওয়াল-জবাবে বলেছেন আইনজীবীরা। মুলতঃ সম্পত্তি ও এই কদিনে তার যে ঘনিষ্ঠদের জেরা করে তথ্য পাওয়া গেছিলো, তা নিয়েই সিবিআইয়ের অফিসাররা তার কাছে জানতে চান। তবে, যে উত্তর সিবিআই পেয়েছে, তাতে গরু পাচার মামলায় তেমন কিছু হবে না বলে, মনে করছেন তদন্তকারী অফিসাররা।


গরু পাচার মামলায় সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হওয়ার পরে তৃণমূল কংগ্রেসের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল আসানসোল বিশেষ সংশোধনাগার বা জেলে রয়েছেন। জেল থেকে তাকে অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার সময় ভিড়ের কারণে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। নানা ধরনের সমস্যা তৈরী হচ্ছে। গোটা পরিস্থিতি বিবেচনা করে আসানসোল জেলের তরফে জেল সুপার কৃপাময় নন্দী আসানসোলে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতের বিচারক রাজেশ চক্রবর্তীকে একটি চিঠি লিখে আবেদন করেছেন যাতে, অনুব্রত মণ্ডলের জামিনের শুনানি ভার্চুয়াল মাধ্যমে শুনানি প্রক্রিয়া করা হয়। কিন্তু মঙ্গলবার বিকেলের পরেও পরিষ্কার হয়নি যে, শুনানি কি ভাবে হবে।
ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বা ভার্চুয়াল শুনানির ব্যবস্থা করার বিষয়টি এখনো বিবেচনাধীন রয়েছে।
স্কুল শিক্ষক নিয়োগ ‘দুর্নীতি’ মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষা মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জামিনের শুনানি ভার্চুয়াল মাধ্যমে হয়েছে।


প্রসঙ্গতঃ, গত ১১ অগাস্ট সিবিআই গরু পাচার মামলায় অনুব্রত মন্ডলকে বোলপুরের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করেছিলো। গত ২৪ আগষ্ট থেকে বীরভূমের শাসক দলের এই নেতাকে ১৪ দিনের জেলে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতের বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী । আসানসোল সংশোধনাগারে ১৪ দিন থাকার পরে তাকে আবার আদালতে হাজির করানোর কথা রয়েছে । এর আগেই গত শুক্রবার আসানসোলের সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতের বিচারককে চিঠি দেন জেল সুপার। চিঠিতে তিনি বলেন, অনুব্রতকে যখন জেল থেকে প্রথম বার স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য আসানসোল জেলা হাসপাতালে ও পরে বিধাননগর বিশেষ আদালতে অন্য একটি মামলায় নিয়ে যাওয়া হয়, তখন চরম বিশৃঙ্খলা হয়। সাধারণ মানুষের ভিড় থেকে জেল কর্তৃপক্ষকে যেমন অনেক সমস্যায় পড়তে হয়ন। তেমনি অন্যান্য বন্দীদের নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন উঠে। তাই নিরাপত্তার কারণে ৭ সেপ্টেম্বরের শুনানি ভার্চুয়াল মাধ্যমে করা হোক।


পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ক্ষেত্রেও, প্রেসিডেন্সি জেল কর্তৃপক্ষ নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে ভার্চুয়াল শুনানির অনুরোধ করেছিল। একই কারণে অনুব্রত মন্ডলের ক্ষেত্রে গরু পাচার মামলায় ভার্চুয়াল শুনানির অনুমতি দেওয়া হবে কিনা তা এদিন বিকেল পর্যন্ত জানা যায় নি। বলতে গেলে গোটাটাই ধোঁয়াশার মধ্যে রয়েছে।
এদিন সিবিআইয়ের বিশেষ আদালত সূত্রে জানা গেছে, জেল সুপারের আবেদনটি জেলা জজের কাছে পাঠানো হয়েছে। কেননা সিবিআই আদালতে ভার্চুয়াল শুনানির কোন ব্যবস্থা বা প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো নেই। এই ব্যবস্থা আছে সিবিআই আদালতের পাশে ভিডিও কনফারেন্স রুমে। জেলা জজ সুনির্মল দত্তর অনুমতি পাওয়া গেলেই তবে ভার্চুয়াল শুনানির ব্যবস্থা করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *