ASANSOL

আসানসোল জেলা হাসপাতাল চত্বর দখল নিয়েছে অটো, টোটো এবং গরু, সমস্যায় চিকিৎসা করতে আসা রোগীরা

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, দেব ভট্টাচার্য, সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত ও রাজা বন্দ্যোপাধ্যায় : শনিবার দুপুর থেকে বিকেল চারটে পর্যন্ত আসানসোল জেলা হাসপাতালের এমার্জেন্সি বা জরুরি বিভাগে সামনে সবমিলিয়ে বেশ কয়েকটি বড় বড় গরু ।তার সঙ্গে একাধিক অটো এবং টোটো লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে প্রধান গেটের সামনে। যাত্রীদের বাইরে থেকে ডেকে এনে এখানে বসানো হচ্ছে। রোগীদের হাসপাতালের ভেতরে ঢোকা বা বেরোনো রীতিমতো কঠিন।
বাইরে থেকে দেখলে মনে হবে হয় এটি অটো এবং টোটোর পার্কিংয়ের জায়গা। কিংবা গরুর খাটাল। কেউ দেখার নেই। কেউ বলারও নেই। এদিন দুপুরে অবস্থাটা দেড়টা নাগাদ এতটাই ভয়ঙ্কর ছিল যে রাস্তা থেকে হাসপাতালে জরুরি বিভাগ পর্যন্ত বাইরে থেকে আসা রোগীরা গাড়ি নিয়ে ঢুকতে পারছিলেন না এতটাই ছিল যানজট। এই ছবিটা শুধু শনিবারের নয় প্রায় প্রতিদিনকার ছবি বলে ভুক্তভোগীরা জানান।


প্রায় ১৫ থেকে ২০ লক্ষ মানুষের ভরসা আসানসোল জেলা হাসপাতাল এবং সুপারস্পেশালিটি হাসপাতাল। তার ওপর প্রতিদিন গড়ে আট থেকে দশটি মৃতদেহের ময়নাতদন্ত এখানকার পুলিশ মর্গেই হয়। এই হাসপাতালের মর্গের দিক থেকে প্রধান গেটে আসা-যাওয়ার রাস্তাটি অটো বা টোটো চালকদের যাতায়াতের যেমন রাস্তা তেমনি বহিরাগত প্রচুর এম্বুলেন্সেরও ভিড় করে থাকে। এর ওপর হাসপাতালের পিছনের দিকে গজিয়ে ওঠা কলোনির বাসিন্দারা হাসপাতালের ভেতর দিয়েই যাতায়াত করেন ।বড় বড় গাড়ি ট্রাক যাতায়াত বন্ধ করতে সেখানেই যে লোহার গ্রিল লাগানো হয়েছিল সেই গেটও ভেঙে ফেলা হয়েছে বলে হাসপাতাল সুপার নিখিল চন্দ্র দাস জানান।

রানীগঞ্জের মহাবীর এলাকা থেকে এবং সালানপুরের সামডি এলাকা থেকে তপন কুমার দাস ও স্বপন বাউরী দুজনেই ২ পরিবারের অসুস্থ মানুষকে নিয়ে এদিন জেলা হাসপাতালের ভেতরে ঢুকতে গিয়ে পেটের মুখে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করেন। কেননা এমার্জেন্সির সামনে তখন দখলে রয়েছে অবৈধ অটো টোটোরা ।শেষ পর্যন্ত অনেক চিৎকার চেঁচামেচিৎ পর জরুরি বিভাগের সামনে বা হাসপাতালে রোগী সহায়তা কেন্দ্রের কাছ থেকে এইসব অবৈধ যান গুলিকে সরানো হলেও গরুগুলো সেখানেই শান্ত হয়ে দাঁড়িয়েছিল। তারা বলেন বুঝতে পারছি না এটা কি আসানসোল বাজারে পার্কিং না সত্যিই বড় কোন খাটাল থেকে ছেড়ে আসা গরুরা এখানে থাকছে। হাতে প্লাস্টার নিয়ে দেখাতে আসা বৃদ্ধা রাত্রি প্রসাদ বলেন গরুগুলো কে সরতে বললে সরে যাচ্ছে। কিন্তু এই অটো টোটোরা একজন চলে যাচ্ছে তো আরো দুজন এসে দাঁড়িয়ে পড়ছে। এখান থেকে যাতায়াত করাই কঠিন। এসব দেখার জন্য নূন্যতম কোনও লোকও নেই।

এ বিষয়ে জেলা হাসপাতালে সুপার নিখিল চন্দ্র দাস কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন আমাদের কাছে কোন লোক নেই যারা গরু তাড়াবে বা অটো টোটোকে বন্ধ করবে। দু’বছর আগে থেকে চেষ্টা করেছি দুটো কাউকেচার দুদিকের গেটে লাগাতে। কাদরি সাহেব যখন পুরসভার কমিশনার ছিলেন তখন তিনি একদিকে একটা কাউকেচার লাগিয়েছিলেন। হাসপাতালের প্রধান গেটটিতে এখনো কাউকেচার না লাগানোই গরুর পাল চলে আসছে। রোগী কল্যাণ সমিতিতে আমরা বৈঠক করে বারবার পুলিশ আধিকারিকদের বলেছি অন্তত দু-একজন করে সিপিভিএফ দুটি গেটের দিকে এবং রাস্তার মাঝখানে যদি দেয়া যায় তাহলে এই অবৈধ অটো টোটো বা বহিরাগত গাড়ির পার্কিং বন্ধ করা যাবে। কিন্তু সেটা পাওয়া যাচ্ছে না।

জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য অধিকারী মোঃ শেখ ইউনুস বলেন রোগী কল্যাণ সমিতির বৈঠকে বিষয়টা পরপর দুবার আলোচিত হয়েছে মন্ত্রীর উপস্থিতিতে। হাসপাতালে কোনও কর্মী নেই যারা এগুলো দেখবে। এটা পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকেই দেখা উচিত ।আমি নিজেও গিয়ে দেখেছি যে হাসপাতালের প্রধান গেট প্রধান রাস্তা সবই বাইরে বেআইনি যানবাহন দিয়ে ভর্তি। তার ওপর ইদানিং গরুগুলোও ঢুকে পড়ছে বাইরে থেকে এসে। আমি নিশ্চয়ই পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের সাথে আবারও বিষয়টা নিয়ে কথা বলব। রোগী কল্যাণ সমিতিতে থাকা শাসকদলের এক নেতা বলেন অটো টোটো ওখানে যদি বন্ধ করে দেওয়া হয় তাহলে এইসব বেকার ছেলেরা আর্থিক সমস্যায় পড়তে পারে। সেজন্যই কিছু করা যাচ্ছে না।

News Editor

Mr. Chandan | Senior News Editor Profile Mr. Chandan is a highly respected and seasoned Senior News Editor who brings over two decades (20+ years) of distinguished experience in the print media industry to the Bengal Mirror team. His extensive expertise is instrumental in upholding our commitment to quality, accuracy, and the #ThinkPositive journalistic standard.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *