উত্তরবঙ্গের বহু প্রতীক্ষিত হিলি-বালুরঘাট রেল প্রকল্পের জমি অধিগ্রহণ দ্রুত শেষ করার নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের
২০১০ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রী থাকাকালীন বালুরঘাট থেকে হিলি রেলপথ সম্প্রসারণের কথা ঘোষণা করেন ৷ এরপর ১৩ বছরেও শেষ হয়নি কাজ ৷ এই প্রসঙ্গে কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের করা মামলার শুনানিতে আদালতের দ্রুত প্রকল্পের জমি অধিগ্রহণ শেষ করার নির্দেশ
বেঙ্গল মিরর, সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত : বহু প্রতীক্ষিত হিলি-বালুরঘাট রেল প্রকল্পে জমি অধিগ্রহণ ও তার পরবর্তী কাজ দ্রুত সম্পন্ন করার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট । এ ব্যাপারে হাইকোর্ট সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে ৮ সপ্তাহ । ৮ সপ্তাহ পর কেন্দ্র-রাজ্য দু’পক্ষকেই রিপোর্ট দিয়ে জানাতে হবে, আদালতের নির্দেশ মতো দু’পক্ষই কতটা সচেষ্ট এই প্রকল্পের কাজ দ্রুত সম্পন্ন করতে । প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব ও বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ এদিন এই নির্দেশ দিয়েছে ।




নির্দেশের ব্যাপারে মামলাকারীর আইনজীবী কল্যাণ কুমার চক্রবর্তী বলেন, “এক বছরের বেশি এই মামলা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে । তার মধ্যে দু’পক্ষের কাছেই আদালত একাধিকবার রিপোর্ট তলব করেছে । রাজ্য জানায় কেন্দ্রের অসহযোগিতার জন্য কাজ সম্পন্ন করা যাচ্ছে না । অন্যদিকে কেন্দ্রের দাবি ১১৭ কোটি টাকা দেওয়া হয়ে গিয়েছে । এটি ১৪৫ কোটি টাকার প্রকল্প।’’
আইনজীবী কল্যান কুমার চক্রবর্তী বলেন, ‘‘রাজ্যের পালটা দাবি এই প্রকল্পের কাজ শেষ করতে গেলে
আরও ১৫৬ কোটি টাকার মতো প্রয়োজন। দুই পক্ষের দড়ি টানাটানিতে জমি অধিগ্রহণের কাজ এখনও অধিকাংশ বাকি। সেই ব্যাপারে রাজ্য এবং কেন্দ্রকে ৮ সপ্তাহের মধ্যে পুরো কাজ সম্পন্ন করার নির্দেশ হাইকোর্টের। এ ব্যাপারে কতদূর এই কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে আগামী ১৬ ডিসেম্বর রিপোর্ট দিতে হবে আদালতে।”
প্রসঙ্গত, হিলি থেকে বালুরঘাট রেললাইন সম্প্রসারণের কাজ দ্রুত সম্পন্ন করার দাবিতে কলকাতা হাইকোর্টে গত বছর জুলাই মাসে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছিলেন দক্ষিণ দিনাজপুরের হিলির বাসিন্দা বীরেন্দ্র কুমার মাহাতো । হিলি-বালুরঘাট রেল সম্প্রসারণের কাজ প্রায় ১৩ বছর ধরে পড়ে রয়েছে অর্ধসমাপ্ত অবস্থায় । কিছু ক্ষেত্রে জমি অধিগ্রহণ হয়েছে আবার কিছু ক্ষেত্রে হয়নি ।
দীর্ঘ ৩৮ কিলোমিটার রেলপথ চালু হলে বাংলাদেশের সাথে বাণিজ্যের রাস্তা সুগম হবে । বালুরঘাট তথা দক্ষিণ দিনাজপুরের অর্থনৈতিক উন্নতিতে এই প্রকল্প অপরিহার্য । এলাকার মানুষের লক্ষ্মীলাভ ঘটবে বলে মনে করেন তিনি । কিন্তু সরকারের গড়িমসিতে প্রকল্পের কাজ কিছুতেই এগোচ্ছে না ।
প্রসঙ্গত, ২০১০ সালে তৎকালীন রেলমন্ত্রী তথা বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বালুরঘাট থেকে হিলি পর্যন্ত রেলপথ সম্প্রসারণের প্রকল্প রূপায়ণের কথা ঘোষণা করেছিলেন । বালুরঘাট থেকে হিলি পর্যন্ত রেলপথের জন্য ৪১০ একর জমি চিহ্নিত করে জেলা প্রশাসন ।
সেই জমির ম্যাপ অনুযায়ী, রেলপথ সম্প্রসারণের দিকে লক্ষ্য রেখে বালুরঘাটের আত্রেয়ী নদী ও হিলির যমুনা নদীর উপর সেতু নির্মানের জন্য সেতুর কাজও শুরু হয় । কিন্তু তা আজও অর্ধসমাপ্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে । জমি অধিগ্রহণের কাজই এখনও সম্পন্ন হয়নি। ফলে প্রকল্পটি অর্ধসমাপ্ত হয়ে পড়ে আছে।