৫০০ টাকা ঘুষ নেওয়ার মামলায়, ৩ বছরের কারাদণ্ড রেল চিকিৎসকের
১৬ বছর ধরে চলা মামলায় সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে সাজা ঘোষণা
বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, দেব ভট্টাচার্য ও রাজা বন্দোপাধ্যায়ঃ মাত্র ৫০০ টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে হওয়া একটি মামলায় রেলের এক চিকিৎসককে আসানসোল সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতের বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী ৩ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দিলেন। একইসঙ্গে বিচারক সঞ্জয় কুমার আরিয়া নামের ঐ চিকিৎসককে ৬০ হাজার টাকা জরিমানা দেওয়ারও সাজা ঘোষণা করেন। ঘটনাটি ঘটেছিলো ২০০৬ সালে।
জানা গেছে, দক্ষিণ পূর্ব রেলের আদ্রা ডিভিশনের তদানীন্তন ডিভিশনাল মেডিকেল অফিসার চিকিৎসক সঞ্জয় কুমার আরিয়ার বিরুদ্ধে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালত মামলার প্রায় ১৬ বছরের মাথায় এই সাজা ঘোষণা করা হয়েছে ।
জানা যায়, ২০০৬ সালে দক্ষিণ পূর্ব রেলের আদ্রা ডিভিশনে কর্মরত জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার পবন কুমার সিবিআইয়ের এন্টি করাপশন ব্রাঞ্চে এক অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। সেই অভিযোগে বলা হয়েছিলো, তিনি নিজের মেডিকেল রেস্টের আবেদন করলে তার কাছ থেকে ৫০০ টাকা ঘুষ চেয়েছেন ডিভিশনাল মেডিকেল অফিস সঞ্জয় কুমার আরিয়া।
এই অভিযোগ পেয়ে সিবিআই ঐ চিকিৎসককে হাতেনাতে ধরার জন্য ছক কষে । পবন কুমারের তরফে ঘুষ দেওয়া ৫০০ টাকার নোটি বিশেষ রাসায়নিক লাগানো হয়। এরপর পবন কুমার যখন ঐ চিকিৎসককে ৫০০ টাকা ঘুষ দিচ্ছিলেন তার মেডিকেল রেস্টের কাগজ লেখানোর জন্য তখন হাতেনাতে সিবিআই তা ধরে ফেলে। ঐ ৫০০ টাকার নোটে কেমিক্যাল বা রাসায়নিক লাগানো থাকায় পবন কুমার ও ঐ চিকিৎসকের হাতের আঙুলের ছাপ স্পষ্ট পাওয়া যায়। তারপর সিবিআই একটি মামলা করে তদন্ত শুরু করে। ২০০৭ সালে এই মামলায় চার্জশিট দেওয়া হয়। মামলায় ১৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। সিবিআই এর আইনজীবী রাকেশ কুমার এই মামলার প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত সমস্ত তথ্য, কেমিক্যাল এনালাইসিস রিপোর্ট ও সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণের মধ্যে দিয়ে প্রমাণ করার চেষ্টা করেন কিভাবে কেন ঘুষ নেওয়া হয়েছিল।
প্রায় ১৬ বছর ধরেই চলা এই মামলায় সোমবার সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতের বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী অভিযুক্ত চিকিৎসককে তিন বছরের কারাদণ্ড ও ৬০ হাজার টাকা জরিমানা দেওয়ার সাজা ঘোষণা করেন ।
মাত্র ৫০০ টাকা ঘুষ নেওয়ার কারণে রেলের একজন ডিভিশনাল মেডিকেল অফিসার পদমর্যাদা চিকিৎসকের তিন বছরের জেল হওয়ার সাজা অবশ্যই নজিরবিহীন বলে মনে করা হচ্ছে।