সিঁদুর খেলা থেকে শোভাযাত্রা সহকারে বিসর্জন, শারদোৎসব মাতলো শিল্পাঞ্চল
বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দ্যোপাধ্যায় ও সৌরদীপ্ত সেনগুপ্তঃ আবহাওয়া অফিসের আশঙ্কা ও পূর্বাভাস আগে থেকেই ছিলো। আর তার বলতে গেলে পুরোটাই মিললো পুজোর চারটে দিনই। সপ্তমীর সকাল থেকে দশমীর রাত। কোন না কোন একটা সময় আসানসোল শিল্পাঞ্চল জুড়ে বৃষ্টি হয়েছে। তবে সেই বৃষ্টি অবশ্য পুজোর আনন্দকে আটকাতে পারেনি। হয়তো ব্যাঘাত ঘটিয়েছে।
করোনার কাঁটা থাকায় গত দুবছর তেমন ভাবে শারদোৎসব উপভোগ করতে পারেননি আসানসোল শিল্পাঞ্চলের মানুষেরা। বলতে গেলে সেই দুবছরের খামতি এই বছর সুদে আসলে উসুল করেছেন শিল্পাঞ্চল। মন্ডপে মন্ডপে প্রতিমা দর্শন থেকে হোটেল ও স্টলে দেদার খানাপিনা। খারাপ ও দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়াকে উপেক্ষা করে এর সঙ্গে দশমী দিন সকালে সিঁদুর খেলা থেকে সন্ধ্যায় শোভাযাত্রা সহকারে বিসর্জন। এর মাঝে অবশ্যই ছিলো মহাষ্টমীর অঞ্জলি দেওয়া ও ভোগ খাওয়া।
এবারে সবচেয়ে বেশি ভিড় টেনেছে আসানসোলের মেনধেমো কোলিয়ারির পুজো ও মন্ডপ। এখানে বুর্জ খলিফার আদলে মন্ডপ করা হয়েছিলো। এখানে দর্শনার্থীদের ভিড় সামাল দিতে নাজেহাল অবস্থা হয় উদ্যোক্তা থেকে পুলিশ ও নিরাপত্তা রক্ষীদের। পাশাপাশি আসানসোল, বার্ণপুর, চিত্তরঞ্জন, কুলটি, বরাকর থেকে রানিগঞ্জ ও জামুড়িয়ার থিম পুজোগুলিতেও বেশ ভিড় টানে।
বিগত বছরগুলির মতো এবারেও ঐতিহ্য ধরে পুজো হয়েছে প্রায় তিনশো বছর ছুঁই ছুঁই আসানসোল গ্রামে। এখানে আটটি দূর্গাপুজো বলতে গেলে পাশাপাশি হয়। সপ্তমী, অষ্টমী ও নবমী পুজোর সঙ্গে এই আসানসোল গ্রামের অন্যতম আকর্ষণ হলো দশমীর সকালে রামসায়ের পুকুরে ঘট বিসর্জনের সিঁদুর খেলা। আসানসোল গ্রাম পুজো কমিটির তরফে শচীন রায় দাবি করেন, এবারে এই সিঁদূর খেলায় কমপক্ষে ৫ হাজার মহিলা অংশ নিয়েছিলো। এত বড়ো সিঁদুর খেলা হয়তো কোথাও হয়না।
এদিকে, দশমীর রাতে বিসর্জনের শোভাযাত্রার সঙ্গে আসানসোল শহরে আখড়া বেরোয়। শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে বেরিয়ে আখড়া জিটি রোডে আসে। সেখানে গভীর রাত পর্যন্ত আখড়ার বিভিন্ন কলাকৌশল।
পুলিশ প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, দশমীর দিনে বেশির ভাগ পুজোর বিসর্জন হয়েছে। বাকিগুলো আগামী দুদিনের মধ্যে করা হবে।