আসানসোল রেড ভলেন্টিয়ারদের মানবসেবার অবদানের স্বীকৃতি, হরেকৃষ্ণ বিজয় ট্রাষ্টকে অ্যাম্বুলেন্স দান
বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত ও রাজা বন্দ্যোপাধ্যায় : করোনা অতিমারীর সময়ে “রেড ভলান্টিয়ার” রা অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। তাঁদের এই দৃঢ় ও সাহসী কাজের স্বীকৃতি হিসাবে “মীরা ভৌমিক” স্মরণে স্বামী মনুজ ভৌমিক ও পুত্র মৈনাক ভৌমিক হরেকৃষ্ণ বিজয় ট্রাষ্টকে একটি অ্যাম্বুলেন্স দান করলেন । রবিবার সকাল ১০:৩০ মিনিট নাগাদ আসানসোল সিপিআইএমের বিএনআর মোড় সংলগ্ন আপকার গার্ডেনে কার্যালয়ে একটি অনুষ্ঠানে ট্রাস্টের চেয়ারম্যান তথা প্রাক্তন মেয়র তাপস রায় ও ট্রাস্টের সেক্রেটারি পার্থ মুখার্জির হাতে অ্যাম্বুলেন্সের চাবি হস্তান্তর করেন মনুজ ভৌমিক ও তার পুত্র মৈনাক ভৌমিক।এ ব্যাপারে মনুজবাবু বলেন যে,” অ্যাম্বুলেন্স প্রদানের ব্যাপারটি তার পুত্রের মস্তিষ্কপ্রসূত। কোভিড অতিমারির সময় রেড ভলেন্টিয়ার মানুষের সেবায় ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। অ্যাম্বুলেন্স এবং রেড ভলেন্টিয়ার দুটোই আমার প্রিয়। ফলে মানুষের সেবায় যে এই অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহৃত হবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।”
মনুজবাবুর পুত্র মৈনাকবাবু বলেন যে, “চাকরি সূত্রে আমি ব্যাঙ্গালোরে থাকি। কিন্তু রাজ্য তথা আমার আসানসোলের খবর জানার জন্য আমি খবরের কাগজ নিয়মিত পড়ি। সেখানে আমি রেড ভলেন্টিয়ার অতিমারির সময় কিভাবে কাজ করেছে এবং এখনো মানুষের সেবায় নিয়োজিত রয়েছে সে ব্যাপারে অবগত হই। এমনকি সামাজিক আমি লক্ষ্য করি যেখানে প্রশাসন থাকতে পারেনি, সেখানে রেড ভলেন্টিয়ার ঝাঁপিয়ে পড়েছিল মানুষের সেবায়। আমার তখন মনে হয়েছিল কিভাবে তাদের পাশে থাকতে পারি কারণ চাকরিসূত্রে বাইরে থাকায় শারীরিকভাবে থাকতে পারা সম্ভব নয়। সেই চিন্তাটাই মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছিল এবং পরবর্তীতে এতদিন পরে সেটি বাস্তবায়িত হল। চার বছর আগে ২০২২ সালের ১৯ এপ্রিল আমার মা ক্যান্সার আক্রান্ত হয়ে পরলোক গমন করেন । তাই প্রতি মাসের ১৯ তারিখ আমার বাড়ির কাছেই একটি ক্যান্সার হাসপাতালে আমি খাবার পাঠাই। চেষ্টা করি মানুষের পাশে থাকার জন্য। এছাড়া এ্যাম্বুলেন্সে স্মৃতির উদ্দেশ্যে কথাটি সেভাবে লেখাই নি। তার কারণ স্মৃতি তো স্মৃতি। আমি চাই আসানসোলে আমার মা এভাবেই মানবসেবার মাধ্যমে সবার কাছে বেঁচে থাকুন।”
এদিকে ট্রাস্টের সেক্রেটারি পার্থ মুখোপাধ্যায় বলেন , ” প্রয়াত মীরা ভৌমিককে স্মরণে তার স্বামী মনোজ ভৌমিক ও পুত্র মৈনাক ভৌমিকের এই উদ্যোগ রীতিমত প্রশংসনীয়। রেড ভলেন্টিয়ারদের কাজের স্বীকৃতি হিসেবে তারা এই অ্যাম্বুলেন্স প্রদান করে যে তারা আমাদের যে দায়িত্ব দিয়েছেন সেটি অবশ্যই আমরা পালন করবার যথাযথ চেষ্টা করব। অ্যাম্বুলেন্সের গায়ে স্মৃতির উদ্দেশ্যে কথাটি না লেখার কারণ হিসেবে পার্থবাবু বলেন যে মনুজ এবং মৈনাক বাবুরা আত্মপ্রচার বিমুখ। তাই তারা এমনভাবেই মানুষের পাশে থাকতে চান। আমরাও চাইছি যে ভ্রাম্যমান স্বাস্থ্য কেন্দ্র গড়ে তোলা। হাসপাতালে ভর্তি থাকাটাই স্বাস্থ্য ব্যবস্থার প্রধান লক্ষ্য নয়। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার আগেই যথাযথ উদ্যোগ নেওয়া উচিত।
তিনি আরো বলেন আগামী এক বছরের মধ্যেই আসানসোল রামকৃষ্ণ মিশনের উল্টোদিকে প্রাক্তন বিধায়ক বিজয় পালের স্মৃতির উদ্দেশ্যে একটি হাসপাতাল তৈরির কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। “
এই অনুষ্ঠানে হরেকৃষ্ণ বিজয় ট্রাস্টের চেয়ারম্যান প্রাক্তন মেয়র তাপস রায়, সেক্রেটারি পার্থ মুখোপাধ্যায় ছাড়াও সত্য চট্টোপাধ্যায় , জয়দীপ চক্রবর্তী, তাপস মুখার্জি , মৈত্রেয়ী দাস, গৌতম চক্রবর্তী, ভিক্টর আচার্য্য, রানা প্রতাপ সেন ও অন্যান্য রেড ভলেন্টিয়াররা উপস্থিত ছিলেন।