জামুড়িয়ার গ্রামে আবারও ধস, এলাকায় আতঙ্ক
ECL ও প্রশাসনের বিরুদ্ধে দায়সারা মনোভাবের অভিযোগ
বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, দেব ভট্টাচার্য ও রাজা বন্দ্যোপাধ্যায়ঃ পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোলের জামুড়িয়া থানার কেন্দা পুলিশ ফাঁড়ির অন্তর্গত কেন্দা গ্রামের বাউরি পাড়ায় আবার ধস নামার ঘটনা ঘটলো। সোমবার বিকেলের পরে এই ঘটনাটি ঘটেছে বলে জানা গেছে । এবারের ধস এলাকায় একটি আইসিডিএস কেন্দ্রের ঠিক পেছনে ও একটি বাড়ির উঠোনে হয়েছে। সেই ধসে বিশালাকার গর্ত তৈরী হয়েছে। একাধিক জায়গায় ধরেছে ফাটলও। স্বাভাবিক ভাবেই এই ধসে এলাকায় আতঙ্ক তৈরি হয়েছে ।
কেন্দা গ্রামে বারবার যেখানে সেখানে এইভাবে ধসের ঘটনা হয়েই চলেছে বলে এলাকার বাসিন্দারা জানান। যা নিয়ে নীরব ইসিএল কর্তৃপক্ষ বলে তাদের অভিযোগ । বারবার ধসের ঘটনা নিয়ে প্রশাসনকে বলা হলেও পুনর্বাসন না মেলায় ক্রমেই ক্ষোভ তৈরি হচ্ছে এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে।
টুম্পা বাউরি নামের এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, আমরা ছোটো ছোটো ছেলে ও পরিবার নিয়ে সারাক্ষণই ভয়েই আছি। রাতে ভালো করে ঘুমোতে পারিনা। এবারে ধসে বিরাট আকারে অনেকটা এলাকা বড় কুয়োর মত গর্ত তৈরী হয়েছে । এরআগে বহুবার গ্রামের বিভিন্ন জায়গায় ধস হয়েছে। তখন আমাদেরকে অস্থায়ী ভাবে অন্য জায়গাতে এলাকার বাসিন্দাদের নিয়ে রাখা হয়। কখনো স্থানীয় স্কুলে, কখনো বা কোলিয়ারির ফাঁকা কোয়ার্টারে অস্থায়ীভাবে ক্ষতিগ্রস্তদের সরানো হয় । আবার কিছুদিন পরই আমাদেরকে আবার এখানে মরতে পাঠিয়ে দিচ্ছে বলে টুম্পা বাউরি ক্ষোভের সঙ্গে বলেন । তিনি বলেন, এর থেকে আমাদেরকে হয় পুনর্বাসন দেওয়া হোক না হলে ধসের গর্তে মাটি দেওয়ার সময় আমাদেরকেও মাটি চাপা দিয়ে দেওয়া হোক।
গ্রামের অন্য বাসিন্দা সন্ধ্যা বাউরি ও চম্পা বাউরিরা বলেন, যতবার ধস হয় ততবার প্রশাসনের সবাইকে জানানো হয়। ইসিএলের প্রশাসনিক কর্তা, থানার অফিসার থেকে কোলিয়ারির এজেন্ট, খনি ম্যানেজার সবাই আসেন,আর দেখে চলে যায়।আমাদের স্থায়ী ব্যবস্থা কেউ করেনা। সোমবার আমরা গ্রামবাসীরা মিলে কেন্দা কোলিয়ারির এজেন্টকে একটি গণস্বাক্ষর করা আবেদন পত্র দিয়েছি। তাতে পরিষ্কারভাবে উল্লেখ করা হয়েছে, গ্রামে চাষবাস বন্ধ হয়ে আছে কোলিয়ারির জন্য। পানীয় জলের সমস্যা গ্রামে রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে। গ্রামের যেখানে সেখানে ধস হচ্ছে। তাই আমাদেরকে অবিলম্বে পুনর্বাসন দেওয়া হোক। তারা বলেন, ইসিএলের পক্ষ থেকে আমাদেরকে সাতদিন সময় দেওয়া হয়েছে। আমরাও ঐ সময় পর্যন্ত দেখবো ইসিএল কি করছে। তারপর আমরা বৃহত্তর আন্দোলনে নামবো।
এই প্রসঙ্গে গ্রামরক্ষা কমিটির সদস্য সন্দীপ বন্দোপাধ্যায় বলেন, ইসিএলের কর্তারা উচ্চ আদালতের নির্দেশও মানছেন না।
ইসিএলের তরফে বলা হয়েছে, সব খবর নেওয়া হয়েছে।