ASANSOLASANSOL-BURNPUR

বার্ণপুর শহরে টোটো চলাচলে নিয়ন্ত্রণ আনতে চলেছে পুলিশ

ট্রায়াল রান চালু ৭ নভেম্বর থেকে, হবে ৫ দিন

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায়ঃ আসানসোল শিল্পাঞ্চলে টোটো চলাচল আস্তে আস্তে মাথা ব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে পুলিশ প্রশাসনের কাছে। বলা যেতে পারে কোন ট্রাফিক ও মোটরর্স ভ্যাহিকেল আইন না মেনে গোটা শিল্পাঞ্চল জুড়ে রাস্তায় রাস্তায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে টোটো। ফলে রাস্তায় রাস্তায় হচ্ছে যানজট ও পথ দূর্ঘটনা। টোটোর কোন সরকারি রেজিষ্ট্রেশন না থাকায় এই মুহুর্তে শিল্পাঞ্চল কতো টোটো চলছে, তার কোন পরিসংখ্যান নেই পুলিশ ও প্রশাসনের কাছে। প্রতিদিনই রাস্তায় রাস্তায় নতুন টোটো চলতে দেখা যায়। একটা হিসাব থেকে দেখা যাচ্ছে, আসানসোল শিল্পাঞ্চল এই মুহুর্তে কমবেশি ১২ থেকে ১৪ হাজার টোটো রাস্তায় চলাচল করছে। এক একটা শহরে টোটো চলাচল করছে হাজারের আশপাশে।


গোটা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করার পরে এবার আসানসোলের ইস্পাত নগরী বার্ণপুরে টোটো চলাচলে নিয়ন্ত্রণ আনতে উদ্যোগী হলো আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের হিরাপুর থানা ও হিরাপুর ট্রাফিক গার্ড পুলিশ। আপাততঃ ঠিক করা হয়েছে বার্ণপুর শহরের মধ্যে মেন রাস্তা বা বাস রুটে টোটো চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হবে। ঠিক হয়েছে বার্ণপুর রোডের কোর্ট মোড় থেকে স্টেশন রোড মোড় বার্ণপুর বাসস্ট্যান্ড ও তার আশপাশের মেন রাস্তায় আগামী ৭ নভেম্বর থেকে টোটো চলবে না। পরীক্ষামুলক ভাবে এই নিয়ন্ত্রণ ৫ দিন চলবে। বুধবার থেকে এরজন্য পুলিশের তরফে বার্নপুর শহরে মাইকিং শুরু করা হয়েছে। বলা হয়েছে, মেন রাস্তার পরিবর্তে অলিগলিতে টোটো চলাচল করুক। কারণ শহরের মানুষেরা টোটো নির্ভর হয়ে পড়েছেন। আরো বলা ২২ বছরের কম ও ৬০ বছরের বেশি কেউ টোটো চালাতে পারবে না। যদি কেউ তা করে, তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
যদিও পুলিশের এই সিদ্ধান্ত ঘোষণার পরে টোটো চালকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।


বৃহস্পতিবার সকালে গোটা বিষয়টি নিয়ে আলোচনার জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে বার্ণপুরের ত্রিবেণী মোড় সংলগ্ন ময়দানে টোটো চালকের ডাকা হয়। সেখানে আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশের এসিপি দেবরাজ দাস, হিরাপুরের সিআই শিবনাথ পাল, হিরাপুর থানার ওসি প্রসেনজিৎ রায়, ট্রাফিক গার্ড ওসি বিনয় লায়েক, আসানসোল পুরনিগমের দুই কাউন্সিলর শিবানন্দ বাউরি ও গুরমিত সিং উপস্থিত ছিলেন।


সেই আলোচনায় পুলিশ আধিকারিকরা টোটো চালকদের সবিস্তারে বলেন, শহরের মেন রাস্তায় টোটো চলাচল আপাততঃ আগামী ৭ নভেম্বর থেকে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। টোটো চলাচল একবারে বন্ধ করা হচ্ছে না। ৭ নভেম্বর থেকে ৫ দিন পরীক্ষামুলক ভাবে তা দেখা হবে। তারা আরো বলেন, টোটো চালকেরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে একটা কমিটি তৈরী করুক। যারা পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলবে। মেন রাস্তায় টোটো না চলায় চালকদের আয় কমছে কি, তা তারা দেখুক। আমরাও সবদিক খতিয়ে দেখছি। ৫ দিন পরে আবার বসে আলোচনা করা হবে। পুলিশ আধিকারিকরা এদিন পরিষ্কার করে বলেন, টোটোর সংখ্যা দিন প্রতিদিন যে হারে বাড়ছে, তাতে ট্রাফিক ব্যবস্থা চাপে পড়ে যাচ্ছে। কিছু নিয়ন্ত্রণ করতেই হবে।


যদিও, পুলিশের এই সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ টোটো চালকেরা পুলিশের সঙ্গে আলোচনা পরে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তারা টোটো চালানো বন্ধ করে বলেন, এইভাবে রুট ঠিক করে দিলে, তাদের রোজগার চলে যাবে। তারা কোন কাজ না পেয়ে টোটো চালিয়ে পরিবার চালান। তাহলে তাদের কি হবে? তারা বলেন, এই মুহুর্তে ৫০০ টোটো বার্ণপুরে চলাচল করছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *