ASANSOL

খুনিদের খোঁজে পাশের দুই রাজ্যে পুলিশের দল

হোটেল মালিককে খুনের ঘটনা, চারদিন পরেও কোন সূত্র নেই

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায় ও দেব ভট্টাচার্যঃ পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোল শহরের প্রাণকেন্দ্র আসানসোল দক্ষিণ থানার পিপি ( পুলিশ ফাঁড়ি) ও রাজ্যের আইন ও শ্রম মন্ত্রী মলয় ঘটকের বাড়ির থেকে দুশো মিটারের মধ্যে সেনরেল রোডের হোটেলের মালিক অরবিন্দ ভগতের খুনের চারদিন পার হয়েছে। কিন্তু এখনো অধরা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত খুনি দুই বন্দুকবাজ।

ফাইল ফটো


জানা গেছে, এই খুনিদের খোঁজে পাশ্ববর্তী দুই রাজ্য বিহার ও ঝাড়খন্ডে আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিডি বা ডিটেকটিভ ডিপার্টমেন্টের দুটি দল পৌঁছেছে। এই দুই রাজ্যের পুলিশের সঙ্গে দুই দূষ্কৃতি নিয়ে তারা খোঁজ খবর করছেন। তবে পুলিশের এক আধিকারিক মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জানিয়েছেন, এখনো পর্যন্ত ঐ দুই বন্দুকবাজ পর্যন্ত পৌঁছাতে তারা উল্লেখযোগ্য কিছু পাননি। সমস্ত দিক খতিয়ে দেখেই তদন্ত চলছে।
আসানসোল শহরের হোটেল মালিক অরবিন্দ ভগতের শুক্রবার সন্ধ্যায় খুনের ঘটনার সময় ঐ এলাকায় প্রায় শতাধিক মোবাইল ফোন চালু ছিল। ইতিমধ্যেই পুলিশ সেইসব ফোন স্ক্যান করেছে।

হোটেল কর্মী থেকে ঘটনার সময় হোটেল মালিকের সঙ্গে থাকা দুই ব্যক্তি, পরিবারের সদস্য ও আশেপাশের এলাকার বাসিন্দাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেও কোন জায়গা থেকেই উল্লেখযোগ্য তেমন কিছু পুলিশ পায়নি বলে জানা গেছে।
অন্যদিকে, আরো জানা গেছে, এই অরবিন্দ ভগতের এক জ্যাঠা চন্দ্রদেব ভগত ও তার এক ভাইপো কৈলাস ভগত আশির দশকে আলাদা আলাদা ভাবে খুন হয়েছিলেন। তাদেরকে খুন করে বস্তাবন্দী করা হয়েছিল। এই খুনের সঙ্গে সুদের কারবার যুক্ত বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছিল ।
এই অরবিন্দ ভগতের আসল বাড়ি আসানসোলের হিরাপুর থানার বার্ণপুরের সাঁতার নিমতলা এলাকায়। অরবিন্দের বাবা মহাদেব ভগত বার্ণপুর ইস্কো কারখানার কর্মী ছিলেন। তার জ্যাঠা সহ অনেকেই সুদের যে কারবার করতেন, সেই মতো কাজ অরবিন্দ করতো। পাশাপাশি জমির কারবারেও সমানভাবে হাত পাকিয়ে ছিল অরবিন্দ। আর তার সুদের ব্যবসা ও জমির কারবারের সঙ্গে শোনা যায় তার অংশীদার হিসাবে প্রভাবশালিরাও কেউ কেউ যুক্ত ছিলেন।


অরবিন্দের ম্যানেজার রামকুমার মহল্লা ঘটনার আগে থেকেই তার পারিবারিক এক বিয়ের অনুষ্ঠানের জন্য উত্তরপ্রদেশের বাড়িতে গেছেন। এখনো তিনি ফেরেননি। তার সঙ্গে যোগাযোগ করে পুলিশ দ্রুত অনুষ্ঠান শেষ করে ফিরে আসতে বলেছে। তিনি ফিরলে পুলিশ তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পারবে তার সুদের ব্যবসা কোথায় কোথায় ছিল বা কত টাকা কাকে দিয়েছেন । পাশাপাশি তার জমির কারবার কোথায় কোথায় ছিল এটাও তার দীর্ঘদিনের ম্যানেজারের কাছ থেকেই জানা যাবে বলে পুলিশ মনে করছে।
বার্নপুর রোড এলাকার একটি রাজনৈতিক দলের নেতার বাড়ির পেছনের জমিতে জোর করে পাঁচিল তোলাকে কেন্দ্র করে অরবিন্দের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে আদালতে। একটি সূত্র থেকে জানা গেছে, ঐ মামলার চূড়ায় রায় বেরোনো সময়ের অপেক্ষা।
তবে ঐ হোটেল মালিকের পরিবারের পক্ষ থেকে কেউ এই খুনের ঘটনা নিয়ে সংবাদ মাধ্যমকে কিছু বলতে চাইছেন না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *