চৈতালি তেওয়ারির গ্রেফতারিতে সুপ্রিম কোর্টের স্থগিতাদেশ
বেঙ্গল মিরর, সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত ও রাজা বন্দোপাধ্যায়* : কম্বল কাণ্ডে আসানসোল পুরনিগমের বিজেপি কাউন্সিলর চৈতালি তিওয়ারির গ্রেফতারিতে শুক্রবার স্থগিতাদেশ দিলো সুপ্রিম কোর্ট। এই মামলার প্রধান অভিযুক্ত চৈতালি তিওয়ারি তার আগাম জামিনের আবেদন হাইকোর্টে খারিজ হওয়ার পরে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছিলেন। এদিন বিচারপতি সূর্যকান্ত এবং বিচারপতি অরবিন্দ কুমারের ডিভিশন বেঞ্চ এ বিষয়ে শুনানি করে এই অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ দিয়েছেন।
বিজেপি লিগ্যাল সেলের কনভেনার আইনজীবী অভিজিৎ ঘটক বলেন, দুটি মামলাই একসঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টে পরবর্তী শুনানি হবে ৮ মে। এই মামলায় গৌরব গুপ্তা ও বিজেপি নেতা তেজ প্রতাপ সিংয়ের গ্রেপ্তার স্থগিত করা হয়েছে। একই সময়ে, জিতেন্দ্র তিওয়ারি এই ঘটনায় আগাম জামিনের জন্য শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। কিন্তু মামলার শুনানি হওয়ার আগেই তাকে গ্রেফতার করা হয়।
কম্বল মামলায় গত শনিবার নয়ডা থেকে জিতেন্দ্রকে গ্রেফতার করে পুলিশ। আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের গোয়েন্দা বিভাগ এবং আসানসোল উত্তর থানা যৌথ অভিযান চালিয়ে তাকে নয়ডার যমুনা এক্সপ্রেসওয়ে থেকে গ্রেপ্তার করে। সেই রাতেই আসানসোলে নিয়ে যাওয়া হয় জিতেন্দ্রকে। আসানসোল আদালত তাকে ৮ দিনের জন্য পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেয়। সোমবার বিচারপতি সূর্যকান্ত ও বিচারপতি জে কে মহেশ্বরীর নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে জিতেন্দ্রের মামলার শুনানি হয়। ওই দিন, বেঞ্চ মামলার সব পক্ষকে তাদের হলফনামা জমা দিতে বলে। আগামী ৮ মে মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য,
১৪ ডিসেম্বর আসানসোলে কম্বল বিতরণ করতে গিয়ে পিষ্ট হয়ে মারা যায় ৩ জন। ওই ঘটনায় জিতেন্দ্রর স্ত্রী চৈতালি তিওয়ারি এবং মোট ৩ জন কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়। তিনি অনুষ্ঠানের আয়োজক ছিলেন। আসানসোল – দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের পুলিশ জিতেন্দ্র এবং চৈতালির ফ্ল্যাটে কম্বল কাণ্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করতে বেশ কয়েকবার যান। কিন্তু ফ্ল্যাটে তালা দেখে বারবার ফিরতে হয় তাদের। তিওয়ারি দম্পতির কাছে পৌঁছতে পারেনি পুলিশ। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ২২ ডিসেম্বর হাইকোর্ট চৈতালীর আবেদন গ্রহণ করে তাকে অন্তর্বর্তীকালীন সুরক্ষা দেন। পাশাপাশি তাকে তদন্তে সহযোগিতা করারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ১০ ফেব্রুয়ারি পাল্টা যুক্তির পরে, কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজশেখর মন্থা রাজ্য পুলিশকে চৈতালিকে তদন্ত করার নির্দেশ দেন। এরপর জিতেন্দ্র ও চৈতালী প্রথমে হাইকোর্টে আগাম জামিনের আবেদন করেন। কিন্তু বিচারপতি দেবাংশু বসাকের ডিভিশন বেঞ্চ সেই আবেদন খারিজ করে দেয়। এই যুক্তি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করেন জিতেন্দ্র। শুনানির আগেই তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের ওপর অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।