দূর্গাপুরে বিবাহ বার্ষিকীর দিনে বাড়ি থেকে গৃহবধূর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার, চাঞ্চল্য
বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায়ঃ ৭ বছর বিয়ে হয়েছে। ঠিক সেই বিবাহ বার্ষিকীর দিনেই বাড়ি থেকে গলায় দড়ি দেওয়া এক গৃহবধূর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হলো। শনিবার গভীর রাতের এই ঘটনায় পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের দূর্গাপুরের কোকওভেন থানার সাগরভাঙার দেশবন্ধু নগরে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। মৃত গৃহবধূর নাম প্রীতি কুমারী সিং (৩০)। রবিবার সকালের পরে পুলিশের কাছ থেকে খবর পেয়ে গৃহবধূর বাড়ির লোকেরা দূর্গাপুরে ছুটে আসেন। এদিন বিকেলের পরে দূর্গাপুর মহকুমা হাসপাতাল থেকে গৃহবধূর মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য আসানসোল জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, সোমবার এই ময়নাতদন্ত হবে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালের ২২ এপ্রিল প্রীতি কুমারী সিংয়ের সঙ্গে অমিত সিংয়ের বিয়ে হয়। এই বিয়ে হয়েছিল বিহারের গয়াতে। প্রীতি ও অমিত বিহারের বাসিন্দা। এই বিয়ের পরে অমিত প্রীতিকে নিয়ে দূর্গাপুরে চলে আসে। তাদের দুই মেয়ে ও এক ছেলে আছে। ছেলের বয়স মাত্র ৮ মাস। শনিবার গভীর রাতে বাড়ির মধ্যে ঘরে সিলিং ফ্যানে গলায় দড়ি দেওয়া প্রীতিকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পাওয়া যায়। সঙ্গে সঙ্গে তাকে দূর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে চিকিৎসক পরীক্ষা করে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
রবিবার সকালে খবর পেয়ে বিহারের গয়া থেকে ভাই অজিত সিং সহ অন্য আত্মীয়রা দূর্গাপুরে ছুটে আসেন।
অজিত সিং পুলিশকে বলেন, বিয়ের সময় পন হিসাবে নগদ টাকা, গয়না অন্য দান সামগ্রী সহ একটি মোটরসাইকেল বাপের বাড়ি থেকে দেওয়া হয়েছিলো। প্রীতির স্বামী একটা বেসরকারি কোম্পানিতে কাজ করে। কিন্তু বিয়ের এক বছর পর থেকে বাপের বাড়ি থেকে আরো জিনিস ও টাকা আনার জন্য মানসিক ও শারীরিক অত্যাচার শুরু করে। প্রীতি সেই কথা আমাদেরকে জানাতো। আমরা তার স্বামী সহ অন্যদের তা বলেছিলাম। কিন্তু তারপরেও তা কমেনি। তিনি আরো বলেন, শনিবার তাদের বিবাহ বার্ষিকী ছিলো। প্রীতির রাতে আমাদের কথাও হয়েছিলো। তারপর রাতে এই ঘটনা। তার দাবি, প্রীতি আত্মহত্যা করেনি। সে তা করতে পারেনা। এর পেছনে অন্য কোন ঘটনা আছে। আমরা পুলিশকে তার স্বামীকে আটক করার জন্য বলেছিলাম। লিখিত অভিযোগও দায়ের করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু পুলিশ তা নেয়নি। আমাদের বলেছে, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট দেখে অভিযোগ নেওয়া হবে।
এদিকে পুলিশ জানায়, লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হলেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য আসানসোল জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।