ASANSOL

WB HS Result : পাশের হার বাড়লেও মেধা তালিকায় নেই পশ্চিম বর্ধমান জেলা, উঠছে নানা প্রশ্ন

জেলার মধ্যে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছে বার্ণপুরের শান্তিনগর বিদ্যামন্দিরের শুক্লা পাল

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায়, দেব ভট্টাচার্য ও সৌরদীপ্ত সেনগুপ্তঃ* মাধ্যমিক পরীক্ষার মতো এই বছরের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় ১০ জনের মেধা তালিকায় নেই পশ্চিম বর্ধমান জেলা। তবে ২০২২ সালের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাশের শতাংশের হারে এবারে জেলায় প্রায় ৩ শতাংশ বেড়েছে। যা একটা পজিটিভ দিক হলেও, ৮৭ জন কৃতির মধ্যে পশ্চিম বর্ধমানের একজনও না থাকায়, নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। গোটা বিষয়টি নিয়ে সবাই চিন্তিত। কি করে এই ঘাটতি পূরণ করা যায়, তা নিয়ে সর্বস্তরে চিন্তা ভাবনা শুরু হয়েছে।
এই প্রসঙ্গে আসানসোলের উমারানি গরাই মহিলা কল্যান হাইস্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা পাপড়ি বন্দোপাধ্যায় বলেন, কিছু একটা ঘাটতি অবশ্যই আছে। কোন একটা সমস্যাও হয়তো আছে। আমাদেরকেই খুঁজে বার করতে হবে। তিনি আরো বলেন, তবে গত বছরের তুলনায় পাশের হার বাড়া একটা ভালো দিক। এর মানে মেরিট বা মেধা আছে। শুধু সেটাকে বাস্তবায়িত করতে হবে।



দীর্ঘ কয়েক বছর প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব সামলে অবসর নেওয়া প্রবীণ শিক্ষক অসিত উপাধ্যায়ের মতে জেলার এই অবস্থার পেছনে একাধিক কারণ আছে। তিনি বলেন, যেমন আগে পড়ুয়াদের সঙ্গে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মধ্যে একটা আত্মিক ও পারিবারিক সম্পর্ক ছিলো। বাবামায়েরা নিজের থেকে স্কুলে এসে ছেলেমেয়েরা কেমন পড়াশোনা করছে খবর নিতেন। আমরাও তা করতাম। এখন মনে হচ্ছে তা নেই। এছাড়াও সামাজিক ব্যবস্থায় একটা অনিয়মিত প্রতিযোগিতা চলে এসেছে। সঙ্গে রয়েছে মোবাইল ফোন।


পশ্চিম বর্ধমান জেলা উচ্চ শিক্ষা সংসদের জেলা প্রতিনিধি শিক্ষক রাজীব মুখোপাধ্যায় অবশ্য এই বছর ৩ শতাংশ পাশের হার বাড়ায় আশার আলো দেখছেন। তিনি বলেন, একটা মূল্যায়ন করার দরকার আছে। সর্বস্তরে এটা করা করা হবে।
উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ সূত্রে জানা গেছে, এবারে এই জেলায় পাশের হার ৮০.২১ শতাংশ। ২০২২ সালে তা ছিলো ৭৭.২৮ শতাংশ। এই বছর পরীক্ষার্থী ছিলো ২৮,২৬১ জন। পরীক্ষায় বসেছিলো ২৭.৫৯৬ জন। পাশ করেছে ২২, ৩৪৪ জন। ২০২২ সালে মোট পরীক্ষার্থী ছিলো ২১,৮৫০ জন, পরীক্ষায় বসেছিলো ২১, ৩৩৫ জন ও পাশ করেছিলো ১৬,৪৪০ জন।


এবারের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় পশ্চিম বর্ধমান জেলার মধ্যে সর্বোচ্চ ৪৮৫ (৯৭ %) নম্বর পেয়েছে বার্ণপুরের শান্তিনগর বিদ্যামন্দিরের শুক্লা পাল। এবার এই জেলার প্রথম ১০ টি স্থানে আছে ১৮ জন পরীক্ষার্থী। জেলার প্রথম দশে থাকা অন্যান্য পরীক্ষার্থীরা হল দ্বিতীয় স্থানে দেবিন্দ্র কুমার সাউ ৪৮৩ ( বরাকর আদর্শ বিদ্যালয়), তৃতীয় স্থানে প্রত্যুষা কোনার ৪৮২, (আসানসোল উমারানী গরাই মহিলা কল্যান গার্লস হাই স্কুল), চতুর্থ ধ্রুবনীল সরকার ৪৭৯, (লাউদোহা নতুনডি হাই স্কুল) পঞ্চম স্থানে অন্তরা মন্ডল ৪৭৮, (কাঁকসা গার্লস হাই স্কুল) ও শিবু গরাই ৪৭৮( রানীগঞ্জ হাই স্কুল)। জেলায় ষষ্ঠ স্থানে আছে দু’জন। তারা হলো সৃজিতা ঘোষ ( শান্তিনগর বিদ্যামন্দির বার্ণপুর) শ্রেয়সী দাস (উমারানী গরাই মহিলা কল্যান গার্লস হাই স্কুল,আসানসোল) । তাদের প্রাপ্ত নম্বর ৪৭৭। সপ্তম স্থানেও দু’জন আছে। তারা পেয়েছে ৪৭৬ নম্বর। তারা হলো আসানসোল ওল্ড স্টেশন হাই স্কুলের অঞ্জনা পাল ও ঊষাগ্রাম বয়েজ হাই স্কুলের অরিত্র সেন। জেলায় ৪৭৫ নম্বর পেয়ে তিন জন অষ্টম স্থানে আছে। তারা হলো উখড়ার পুলিনবিহারী গোষ্ঠবিহারী বালিকা বিদ্যামন্দিরের ঝিলিক পাল, বহুলা শশী স্মৃতি হাই স্কুলের অঙ্কিতা মন্ডল ও রানীগঞ্জের গান্ধী মেমোরিয়াল গার্লস হাই স্কুলের মৌসুমী সাউ। নবম স্থানে আছে আসানসোলের কন্যাপুর হাইস্কুলের সুমন মন্ডল, তার প্রাপ্ত নম্বর ৪৭১। এছাড়াও ৪৬৯ নম্বর পেয়ে জেলায় দশম স্থানে আছে আরো চার জন। তারা হলো বার্ণপুর শান্তিনগর বিদ্যামন্দিরের বৃষ্টি রায়,দুর্গাপুর তারকনাথ হাই স্কুলের নিকিতা সাহা, দুর্গাপুর বি-জোনের সুরেনচন্দ্র মডার্ন স্কুলের শুভম গোস্বামী, আসানসোল উমারানী গরাই মহিলা কল্যান গার্লস হাই স্কুলের অনুস্মিতা কর্মকার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *