RANIGANJ-JAMURIA

গন্ধর্ব কলা সঙ্গমের উদ্যোগে প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর ঠাকুরের স্মৃতি বিজড়িত নারায়ণকুড়িতে আয়োজিত হল রবীন্দ্র – নজরুল জন্ম জয়ন্তী

বেঙ্গল মিরর, বিশেষ প্রতিবেদন, সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত:* বাঙালি শিল্পপতি হিসাবে দ্বারকানাথ ঠাকুর প্রথম এই নারায়ণকুড়ি গ্রামে (যার প্রাচীন নাম নুনিয়াজোড়) স্বাধীন ব্যবসায়িক উদ্যোগ স্থাপন করেন।
সম্ভবতঃ ১৮৩২ সালে বিদেশী প্রশিক্ষণের সাহায্যে খাদ কেটে কয়লা উত্তোলন এবং এই কয়লা-কেন্দ্রিক বাণিজ্যের কথা সর্বপ্রথম তাঁর মাথায় আসে। শুরু হয়ে কয়লা উত্তোলনের প্রাাথলিক পর্ব। ব্যবসায়িক কাজকর্ম দেখাশোনা ও পরিচালনার জন্য নারায়ণকুড়ির নুনিয়া নদীর ধারে গড়ে তুলেছিলেন ‘পরিবেশবান্ধব’ নামে বাড়ি, প্রশাসনিক ভবন, পুলেজঘর, সর্বোপরি কয়লা পরিবহনের জন্য দামোদর নদের তীরে ০.৭২ একর জায়গা ঘিরে নির্মাণ করেন ‘জেটি’। নারায়ণকুড়িকে ঘিরে শুরু হয় শিল্প বাণিজ্যের এক আস্ত ইতিহাস।



১৮৩২ থেকে আজ ২০২৩ সাল। কেমন আছে দ্বারকানাথের স্মৃতিবিজরিত এই নারায়নকুড়ি বাণিজ্য ক্ষেত্র? এই প্রশ্নের কালের ঢেউ এর ধোয়ায় সবই ধুসর, সবই ম্লান থেকে ম্লানতর। শুধুই ধ্বংসস্তূপ নাকি গড়ে উঠেছে দ্বারকানাথ ঠাকুরের স্মৃতি বিজরিত কোনও স্মৃতি মন্দির ?
২০০২ সালে শাশ্বতী চ্যাটার্জির ভাবনায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পিতামহের কর্মকান্ডের এই উজ্জ্বল স্থানের ইতিহাসকে প্রস্ফুটিত করার জন্য শুরু হয় রবীন্দ্র জন্মোৎসব অনুষ্ঠানের।
গত ৩/৪ বৎসর কিছু বিশেষ কারণবশতঃ এই অনুষ্ঠান বিরত থাকে । এই একই উদ্দেশ্যে বর্তমান বৎসর ১লা জুন নারায়ণকুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েত মথুরাচণ্ডী মন্দির কমিটি তথা এখানকার বিশিষ্ট- উদ্যোগী ব্যক্তির সহায়তায় পুনরায় রবীন্দ্রজয়ন্তী অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়। এর সঙ্গে যোগ করা হয় কবি সম্রাট কাজী নজরুল ইসলামের জন্ম জয়ন্তী ।



“গন্ধর্ব কলা সঙ্গম” নামক সংস্থার কর্মারার শাশ্বতী চ্যাটার্জি তাঁর আসানসোল এবং রানীগঞ্জ কমিটির যৌথ উদ্যোগে নানা নৃত্য-গীত,আবৃত্তি, আলেখ্যর মাধ্যমে অনুষ্ঠানটিকে সাফল্যমন্ডিত করে তোলেন। নারায়ণকুড়ি গ্রামে প্রাচীন ঐতিহাসিক দিকটাকে প্রজ্জ্বলিত করে তোলাই তার একমাত্র উদ্দেশ্য।
অনুষ্ঠানটিতে উপস্থিত ছিলেন এখানকার বরো চেয়ারম্যান রোজামিল হেসেন, এগারা গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান রীনা দাস, রানীগঞ্জ থানার আইসি রানীগঞ্জ ট্রাফিক গার্ড ওসি।বহু জনসমাগমের মধ্যে যাদের সহযোগিতা ছাড়া এই অনুষ্ঠান অপূর্ণ তারা হলেন
মথুরাচন্ডী মন্দির কমিটি ও নারায়নকুড়ি হেরিটেজ কমিটির পক্ষ থেকে ভূতনাথ মন্ডল ও গৌতম চৌধুরী।

গন্ধর্ব কলা সঙ্গমের রানীগঞ্জ শাখার প্রদীপ কুমার নদী, কানহাইয়া সিং, সুনীল গামরিওয়াল, অরুণ ভারতিমা, বলরাম রায়, সুকেশ গুপ্তা, অরুণ গোয়েঙ্কা, সন্দীপ ভালেটিয়া, সন্দীপ কেডিয়া , সঞ্জয় ডালমিয়া, হর্ষবর্ধন ভালোটিয়া, শতাব্দী অধিকারী, রাজেশ জিন্দল, বিজয় জাজোডিয়া এবং আরও অনন্য সুধীজন।
গন্ধর্ব কলা সঙ্গমের আসামসোল শাখার – গৌরীশঙ্কর আগরওয়াল, সৎপাল সিং কির পিঙ্কি, মনোজ সাহা, সন্তোষ দও, চন্দন উপাধ্যায়, রবীন্দ্রনাথ চক্রবর্তী, পার্থ দও, গৌতম হাজরা এবং আরও অন্যান্য সুধীজন।
সংস্থার আরও অনান্য সদস্যদের সহযোগিতায় অনুষ্ঠানটি মধুময়, বর্নময় এবং মনোময় হয়ে ওঠে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *