সোশ্যাল মিডিয়ায় ফটো ভিডিও পোস্ট করায়, হাতুড়ি দিয়ে স্ত্রীকে হত্যা করার অভিযোগ, থানায় আত্মসমর্পণ
বেঙ্গল মিরর, চরণ মুখার্জী , রানীগঞ্জ : সোশ্যাল মিডিয়ায় ফটো ভিডিও পোস্ট করায়, যে জীবন দিতে হবে মাম্পি কে, সেটা একদম মানতেই পারছে না, বছর তেইশের মাম্পি বিশ্বাস বাদ্যকরের বাপের বাড়ির পরিবার পরিজন। অল্প একটু পরিচিতি পাওয়ার লোভে নিজের মেয়ের যে এরূপ পরিণতি হবে সেটা ভেবেই ভয়ে আতঙ্কে শিউরে উঠছে মাম্পির বাপের বাড়ির সদস্যরা।
ঘটনা প্রসঙ্গে জানা যায় রবিবার দুপুরে হাতুড়ি দিয়ে নিজের স্ত্রীকে হত্যা কোরে, থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করার ঘটনা ঘটে জামুড়িয়া থানা এলাকার, ইকড়া গ্রামের বাউরি পাড়া অঞ্চলে। অভিযোগ অন্যান্য দিনের মতোই রবিবার ইকড়ার বাসিন্দা কৃষ্ণ বাদ্যকর ওরপে বুড়া, স্থানীয় এলাকার কলকারখানায় কাজকর্ম করে, বাড়ি ফিরে নিজের স্ত্রী মাম্পি কে মোবাইলে ব্যস্ত থাকতে দেখেন, আর এ বিষয়ে লক্ষ্য করেই বাড়িতে কেউ না থাকার সময়ই, বাড়ির উঠোনে থাকা কয়লা ভাঙ্গার হাতুড়ি, দিয়ে সে তার স্ত্রী মাম্পিকে সজোরে আঘাত করে। এরপরই বাড়িতে লুটিয়ে পড়া, মাম্পিকে রক্তাক্ত অবস্থায়, কৃষ্ণ বাদ্যকর, তার মাকে সঙ্গে নিয়ে,গুরুতর আহত তার স্ত্রী কে আসানসোল জেলা হাসপাতালে নিয়ে যায়।
পরে সেখানে চিকিৎসকেরা মাম্পিকে মৃত বলে ঘোষণা করলে, কৃষ্ণ বাদ্যকর সোজা জামুড়িয়া থানায় গিয়ে, আত্মসমর্পণ কোরে, হাতুড়ি দিয়ে, সে তার স্ত্রীকে হত্যা করেছে এই অভিযোগ স্বীকার করে নেয়। যদিও এ বিষয়ে মাম্পির মা, বোগড়া কলোনি এলাকার বাসিন্দা, অনিমা বিশ্বাসের দাবি, তার জামাই কৃষ্ণ তাকে মিথ্যে কথা বলে মেয়ের প্রেসার বেড়ে যাওয়ায় মাথা ঘুরে পড়ে গেছে বলে আহত হয়েছে এই কথা জানিয়ে তাকে জেলা হাসপাতাল নিয়ে যায়, সেখানে গিয়ে সে তার মেয়েকে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে। পরে এ বিষয়ে জামুরিয়া থানায় তিনি কৃষ্ণ বাদ্যকরের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ দায়ের করলে পুলিশ কৃষ্ণকে গ্রেফতার করে।
এদিকে এই হত্যার বিষয়ে মাম্পির বোন ও তার মায়ের একটাই আক্ষেপ হামেশাই কৃষ্ণ তাদের মেয়েকে মদ্যপ অবস্থায় এসে নির্যাতন চালাত, মারধোর করতো ও মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে দিতে চাইতো না। মাঝে তার মোবাইল ফোন ও সিম ভেঙ্গেও দিয়েছিল বলে দাবি করেন তারা। তাদের দাবি মাম্পি সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের ছবি আপলোড করতো যা বরদাস্ত করত না কৃষ্ণ এ নিয়ে হামেশাই সন্দেহ রইল তার, এবারও সেই মোবাইল ফোন নিয়ে ব্যস্ত থাকার কারণে জীবন দিতে হল তার মেয়েকে, বলে দাবি করলেন তারা। তারা অভিযুক্তর কঠোর শাস্তির দাবিও জানিয়েছেন। সোমবারই পুলিশ অভিযুক্ত কৃষ্ণ বাদ্যকরকে আসানসোল জেলা আদালতে হাজির করলে বিচারক অভিযুক্তকে জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।