টোটো যন্ত্রণায় নাভিশ্বাস আসানসোলের, পুরনিগমের গেট আটকে বেআইনি স্ট্যান্ড, দর্শকের ভূমিকায় পুরনিগম ও পুলিশ প্রশাসন
বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায়ঃ টোটো যন্ত্রণায় কার্যত নাভিশ্বাস অবস্থা শহর আসানসোলের। যত্রতত্র টোটো স্ট্যান্ড তৈরী করা হয়েছে। বাদ যায়নি খোদ আসানসোল পুরনিগমও। আসানসোল পুরনিগমের মেনগেট আটকে করা হয়েছে টোটো স্ট্যান্ড। এর ফলে আসানসোল পুরনিগমের গেট দিয়ে ঢোকা ও বেরোনো বন্ধ হয়ে গেছে। রাস্তায় টোটো দাঁড় করিয়ে রাখায় আসানসোল স্টেশন রোড কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে। এর ফলে যানজট হওয়া এখন নিত্যদিনের ঘটনা। দুচাকা ও চারচাকা গাড়ি চলাচল থেকে সাধারণ মানুষের যাতায়াত করা দূর্বিষহ হয়ে উঠেছে। সময়মতো স্টেশনে পৌঁছাতে না পেরে অনেকেরই ট্রেন ধরতে পারছেন।
দুদিন আগে গত শনিবার রাতে আসানসোল পুরনিগমের সামনে যাত্রী তোলা নিয়ে টোটো চালকদের সঙ্গে অটো চালকদের মারামারি হয়। গোটা এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
তবে এমন অবস্থা শুধু আসানসোল পুরনিগমের সামনে রয়েছে এমনটা নয়। জিটি রোডের একটা অংশে পুলিশ প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা থাকায় সেখানে টোটো চলে না। কিন্তু হটন রোড, এসবি গরাই রোড থেকে শহরের সব রাস্তা ও মোড় সকাল থেকে রাত পর্যন্ত টোটোদের দখলে থাকে। আসানসোল জেলা হাসপাতালের ভেতরে বেআইনি ভাবে টোটোর সঙ্গে অটোর স্ট্যান্ড করে নেওয়া হয়েছে। যে কারণে এ্যাম্বুলেন্সও আটকে পড়ে। এরসাথে টোটো চালকদের একটা অংশ অপ্রাপ্তবয়স্ক। যাদের ১৮ বছর বয়স না হওয়া সত্বেও রাস্তায় টোটো চালাচ্ছে। অথচ তাদেরকে কোনভাবে আটকানো হচ্ছে না বলে সাধারণ গাড়ি চালকদের দাবি। তাদের বক্তব্য, ট্রাফিক গার্ডের পুলিশ সাধারণ গাড়ি চালকদের কাগজ পরীক্ষার নামে অযথা হয়রানি করছে। হাজার হাজার টাকা জরিমানা করছে।
সোমবার সকালে আসানসোল পুরনিগমের ৩ নং বোরো চেয়ারম্যান উৎপল সিনহার সঙ্গে দেখা করেন রেলপারের অটো চালকেরা। তারা পুরনিগমের সামনে থেকে রেলপারের ওকে রোড পর্যন্ত যাত্রী নিয়ে যান। এদিন তারা টোটো চালকদের নামে বোরো চেয়ারম্যানকে বিভিন্ন বিষয়ে অভিযোগ করেন। তারা বোরো চেয়ারম্যানের কাছে পুলিশ ও পুর প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ উগড়ে দেন। তারা বলেন, আমরা দীর্ঘদিন পুরনিগমের সামনে থেকে অটো চালাচ্ছি। এতদিন কোন সমস্যা হয়নি। কিন্তু বেশ কিছুদিন ধরে এখানে একসঙ্গে অনেক টোটো রাস্তায় দাঁড় করিয়ে দিচ্ছে। এরফলে সাধারণ মানুষের সমস্যা হচ্ছে। আমরা যাত্রী পাচ্ছি না।
এই প্রসঙ্গে বোরো চেয়ারম্যান বলেন, আসানসোল শহরে টোটোর সংখ্যা অনেকটাই বেড়ে গেছে। অনেকের সমস্যা হচ্ছে। আমরা কারো রুটি রোজগারের বাধা না দিয়ে একটা সিস্টেমে আনার চেষ্টা করছি। তিনি আরো বলেন, পুরনিগমের নিরাপত্তা রক্ষীদের বলে দেওয়া হয়েছে সকাল ১০ টা থেকে বিকেল ৪ টে পর্যন্ত কোন টোটো না থাকে। যদি কোন টোটো থাকে, তাহলে পুলিশকে খবর দিতে। তবে বোরো চেয়ারম্যানের কাছে পুরনিগমের নিরাপত্তা রক্ষীরা অভিযোগ করে বলেন, টোটো চালকেরা তাদের কথা শোনেনা। কিছু বললে, তাদেরকে দেখে নেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়।
এদিকে এই মুহুর্তে আসানসোল শহরে কত টোটো চলে, তার কোন হিসেব পুলিশ প্রশাসনের কাছে নেই। তবে একটি সূত্রে জানা গেছে, এখন আসানসোলে টোটোর সংখ্যা কমবেশি ২০ হাজার।