ASANSOLRANIGANJ-JAMURIA

রানিগঞ্জে অবৈধভাবে কয়লা তুলতে গিয়ে খোলামুখ খনিতে ধস, তিনজনের দেহ উদ্ধার, তদন্তে ডিজিএমএস

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল ও রানিগঞ্জ, চরণ মুখার্জী, রাজা বন্দোপাধ্যায়, দেব ভট্টাচার্য ও সৌরদীপ্ত সেনগুপ্তঃ আসানসোলে রানিগঞ্জ থানার এগরা গ্রাম পঞ্চায়েতের নারায়নকুড়ি এলাকায় ইসিএলের খোলা মুখ কয়লাখনিতে ধস নামার ঘটনায় তিনজনের মৃতদেহ উদ্ধার হলো। আরো বেশ কয়েকজনের কয়লাখনির ভেতরে চাপা পড়ে থাকার আশঙ্কা করা হচ্ছে। বুধবার দুপুরে এই ধস নামার ঘটনা ঘটেছে। মৃতদের নাম হলো আসানসোলের জামুড়িয়া থানার পরিহারপুরের দীনেশ রুইদাস (৩৮), রানিগঞ্জ থানার বল্লবপুর রঘুনাথচকের সুমীর বাউরি (১৭) ও রানিগঞ্জ থানার নিউ এগরা পোদ্দার পাড়ার সুরজিৎ সেন (২১)। বৃহস্পতিবার সকালে আসানসোল জেলা হাসপাতালে তিনজনের মৃতদেহর ময়নাতদন্ত হয়।

অবৈধভাবে বা বেআইনি ভাবে খোলামুখ কয়লাখনি থেকে কয়লা তুলতে গিয়ে এই ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ অনুমান। তিনটি মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনায় রানিগঞ্জ থানার পুলিশের তরফে আলাদা আলাদা করে তিনটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা করা হয়েছে। তিনজনের পরিবারের তরফে বলা হয়েছে, তারা বুধবার সকালে বাড়ির থেকে বেরিয়ে ছিলো। কোথায় গেছিলো তা তারা জানতো না।
এদিকে এই ঘটনায় ইসিএলের তরফে ডিজিএমএস বা ডিরেক্টর জেনারেল অফ মাইনস্ সেফটি এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।

বৃহস্পতিবার বেলা বারোটা নাগাদ আসানসোলের সীতারামপুরের ডিজিএমএস রিজিওন -১ ইরফান আহমেদ আনসারির নেতৃত্বে একটি দল খোলা মুখ খনিতে আসেন। তারা গোটা এলাকা ঘুরে দেখেন। গোটা কয়লাখনির ছবি তোলেন। পরে ইরফান আহমেদ আনসারি বলেন, তদন্ত একবারে প্রাথমিক স্তরে আছে। কয়েকজন চাপা পড়ে আছে বলে খবর। প্রথমে একজনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছিলো। পরে আরো দুজনের মৃতদেহ উদ্ধার হয়। তিনি আরো বলেন, এটা বৈধ কয়লাখনি। সেখানে ইললিগ্যাল না বেআইনি ভাবে কয়লা তুলতে গিয়ে এই ঘটনা ঘটেছে। সবার সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে।


অন্যদিকে, এই ঘটনার খবর পেয়ে বুধবার রাত নটার পরে এলাকায় পৌঁছে যান আসানসোল দক্ষিণ বিধান সভার বিজেপি বিধায়ক তথা রাজ্য সম্পাদক অগ্নিমিত্রা পাল। তিনি এই ঘটনার জন্য ইসিএলের পাশাপাশি পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে সরব হন। রাতেই তিনি মৃতদেহ উদ্ধারের দাবিতে ধর্ণায় বসে পড়েন। সেখানে সেই সময় ছিলেন রানিগঞ্জ থানার ইন্সপেক্টর ইনচার্জ সুদীপ দাসগুপ্তের নেতৃত্ব বিশাল পুলিশ বাহিনী। পুলিশ অফিসারদের সঙ্গে তিনি বচসায় জড়িয়ে পড়েন।


জানা গেছে, বুধবার দুপুরে এই খোলা মুখ কয়লাখনিতে জামুড়িয়া, রানিগঞ্জের বিভিন্ন এলাকার অনেক লোক কয়লা তুলতে যায়। দুপুর তিনটে নাগাদ এই ধসের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে গ্রামের মানুষজনেরা ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। এই এলাকার সিপিএমের গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য কৃষ্ণেন্দু মন্ডল জানান, ইসিএলের এই খোলামুখ কয়লাখনি থেকে ৩০০ ফুট ভেতরে যন্ত্র দিয়ে কয়লা কাটা হয়। তারপর ৫ থেকে ১০ ফুট এলাকা ছেড়ে আবার কয়লা কাটা হয়। এই ছেড়ে যাওয়া অংশে কিছুটা গুহার মতো তৈরি হয়ে থাকে। সাধারণ মানুষেরা মাঝেমধ্যেই ঐ জায়গা দিয়ে বাড়ির প্রয়োজনে বা অন্য কারণে সেখানে ঢুকে কয়লা তুলে নিয়ে আসেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *