ASANSOLRANIGANJ-JAMURIA

জামুড়িয়ার ডাকঘরের গ্রাহকদের টাকা আত্মসাতের অভিযুক্ত পোষ্টমাস্টারকে সাসপেন্ড, তদন্তে ডিভিশনাল ইন্সপেক্টর

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল ও জামুড়িয়া, রাজা বন্দোপাধ্যায়ঃ গ্রাহকদের কয়েক লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছিলো পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোলের জামুড়িয়া থানার আসানসোল পুরনিগমের ১ নম্বর ওয়ার্ডের নন্ডী গ্রামের নন্ডী উপ ডাকঘর বা সাব পোস্ট অফিসের পোষ্ট মাস্টারের বিরুদ্ধে। রূপেন হাঁসদা নামে অভিযুক্ত সেই পোষ্ট মাস্টারকে সাসপেন্ড করা হলো। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন ডাকবিভাগের আসানসোল ডিভিশনের এসএসপি বা সিনিয়র সুপারিন্টেন্ডেন্ট অফ পোস্টঅফিস প্রবাল বাগচি। এই তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছেন আসানসোল ডিভিশনের ডিভিশনাল ইন্সপেক্টর। তবে এই অভিযোগ উঠার আগেই ঐ পোস্ট মাস্টার জামুড়িয়া থেকে অন্যত্র বদলি হয়ে গেছেন।


প্রসঙ্গতঃ, দুদিন আগেই প্রচুর সংখ্যায় ঐ ডাকঘরের গ্রাহকরা এই অভিযোগ নিয়ে নন্ডী সাব পোস্ট অফিসের সদ্য দায়িত্ব নেওয়া পোস্টমাস্টার তপন মন্ডলকে ঘিরে বিক্ষোভও দেখান। সেই বিক্ষোভের দুদিনের মধ্যেই অভিযুক্ত পোষ্ট মাস্টারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হলো।
নন্ডী সাব পোস্টঅফিস বা উপ ডাকঘরের গ্রাহক পুর্ণ রুইদাস, তপন চট্টোপাধ্যায়, কুরান গড়াই, কল্যাণ চন্দ্ররা অভিযোগ করে বলেছিলেন, কিছুদিন আগে আমরা পোস্ট অফিসে টাকা তুলতে এসেছিলাম। সেই সময় এই পোস্ট অফিসের পোস্টমাস্টার রূপেন হাঁসদা লিঙ্ক বা সার্ভার নেই বলে আমাদেরকে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু টাকা তোলার স্লিপ তিনি তার নিজের কাছে রেখে দিয়েছিলেন। সেই সময় পোষ্ট মাস্টার রূপেন হাঁসদা গ্রাহকদের জানিয়েছিলেন, টাকা এলে তাদেরকে জানিয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু গত ১৫ নভেম্বর ঐসব গ্রাহকদের মোবাইলে মেসেজ আসে যে তাদের টাকা উইথড্র করা হয়ে গেছে বা তোলা হয়েছে। সেই মেসেজ পেয়ে তারা পোষ্ট অফিসে আসেন। কিন্তু পুজোর ছুটি থাকায় পোস্ট অফিস বন্ধ ছিল। তাই তারা মঙ্গলবার নন্ডী সাব পোস্ট অফিসে এসে পোস্টমাস্টার সঙ্গে দেখা করে কথা বলতে আসেন। কিন্তু তখন তারা এসে জানতে পারেন পোস্টমাস্টার রুপেন হাঁসদা গত ৫ নভেম্বর ট্রান্সফার হয়ে চলে গেছেন। তার পরিবর্তে নতুন পোস্টমাস্টার হিসাবে তপন মন্ডল দায়িত্ব নিয়েছেন।


জানা গেছে, পূর্ণ রুইদাসের ৭০ হাজার ২০০ টাকা , তপন চট্টোপাধ্যায়ের ৪৯ হাজার, কুরান গড়াইয়ের ৪৯ হাজার, কল্যাণ চন্দ্র ১০ হাজার টাকা তাদের একাউন্ট থেকে তুলে নেওয়া হয়েছে।
এই ঘটনা জানাজানি হতেই চারিদিকে শোরগোল পড়ে যায়। প্রচুর সংখ্যায় গ্রাহকরা নিজেদের পাসবুক নিয়ে পোস্ট অফিস চত্বরে জড়ো হন।
সদ্য দায়িত্ব নেওয়া পোস্টমাস্টার তপন মন্ডল গ্রাহক বিক্ষোভের মুখে পড়ে জানিয়েছিলেন, আমি গত ১৭ নভেম্বর এই উপ ডাকঘরে যোগ দিয়েছি। আমার আগের পোস্ট মাস্টার কি করেছেন, তা আমি জানি না। তবে গ্রাহকদের অভিযোগের ভিত্তিতে আমি গোটা বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাবো। তপনবাবু সেদিন এও বলেছিলেন, আমি শুনেছি ইতিমধ্যে আমার আগের পোস্টমাস্টারের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করা হয়েছে।
এই প্রসঙ্গে, আসানসোল হেড পোষ্ট অফিস সূত্রে জানানো হয়েছে, অভিযোগ পাওয়া গেছে। গোটা বিষয়টি বিভাগের তরফে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ঐ পোস্ট মাস্টারকে ইতিমধ্যেই সাসপেন্ডও করা হয়েছে।

Leave a Reply